Sunday, September 27, 2020
Wednesday, August 12, 2020
বাতাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ
একদিন এক বৃদ্ধা বাতাসের বিরুদ্ধে এক অভিযোগ নিয়ে আসল যে, হে আল্লাহর নবী ও রাজ্যের বাদশা! আমি অত্যন্ত দরিদ্র এক বৃদ্ধা। আমার গৃহে কয়েকটি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে আছে। আমি তাদের খাওয়ার জন্য কিছু গম পিসে আটা মাথায় করে নিয়ে আসছিলাম। হঠাৎ বাতাস আমার সব আটা উড়িয়ে নিয়ে গেল। আমার প্রার্থনা হল, আপনি বাতাসের কাছ থেকে আমার আটাগুলো উদ্ধার করে দিন। অন্যথায় আমার ছোট ছোট মাসুম ছেলেমেয়েরা অনাহারে থাকবে।
হযরত দাউদ (আ) তার অভিযোগ শুনে বলেন, হে বৃদ্ধা, বাতাসের উপর আমার কোন ক্ষমতা নেই, তোমার আটা কি করে বাতাস থেকে উদ্ধার করে দিবো? তবে তুমি যেহেতু অভাবগ্রস্ত মহিলা, তাই তোমার যে পরিমান আটা বাতাসে নিয়ে গেছে আমি তোমাকে তার চারগুন আটা দিচ্ছি, তুমি তা নিয়ে যাও।
বৃদ্ধা খুব আনন্দের সাথেই সম্মত হল। হযরত দাউদ (আ) তাকে পুর্ন একবস্তা আটা দিয়ে বিদায় করলেন। বৃদ্ধা খুশীর সাথে আটা নিয়ে গৃহে চলল। কিছুদুর যাওয়ার পর হযরত সুলাইমান (আ) এর সাতে তার সাক্ষাৎ হল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন বৃদ্ধা তুমি বাদশার কাছে কি অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিলে?? বৃদ্ধা বলল আমি বাতাসের বিরুদ্ধে নালিশ করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাদশাহ সে অভিযোগের বিচার না করে আমাকে একবস্তা আটা দিয়ে দিলেন।
হযরত সুলাইমান (আ) বৃদ্ধাকে বলেন, তুমি আবার যাও, গিয়ে বল আমি আটা চাইনা, বিচার চাই? এ পরামর্শঅনুযায়ী বৃদ্ধা হযরত দাউদ (আ) এর দরবারে পুনরায় বিচারপ্রার্থী হল। হযরত দাউদ (আ) বুড়ীর কাছে জানতে চাইলেন কে তাকে এই পরামর্শ দিয়েছে??
বৃদ্ধা অনেক ভয়ে ভয়ে বলল, বাদশাজাদা সুলাইমান (আ) এই কথা আমাকে শিখায়ে দিয়েছেন। তখন তাকে ডেকে বলেন, হে সুলাইমান তুমি যে বৃদ্ধাকে আমার কাছে ফেরত পাঠিয়ে দিলে, এখন বল দেখি, আমি কিভাবে বাতাস হাযির করে তার বিচার করি??
হযরত সুলাইমান (আ) বলেন, হে আমার পিতা, আপনি শুধু বাদশা নন, আপনি আল্লাহর মহাসম্মানী নবীও বটে। আপনার দোয়ায় বাতাস আপনার সামনে হাযির হতে বাধ্য হবে। হে পিতা, আমার ভয় হচ্ছে যে, কিয়ামতের দিন বৃদ্ধা যখন আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আল্লাহর দরবারে হাযির হবে, তখন আপনি দুনিয়াতে তার অভিযোগের বিচার না করার অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হবেন।
পুত্রের কথায় হযরত দাউদ (আ) বাতাসকে উপস্থিত করার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন। আল্লাহ হযরত দাউদ (আ) এর দরবারে বাতাসকে উপস্থিত হওয়ার জন্য হুকুম দিলেন। আল্লাহর হুকুম পেয়ে বাতাস হযরত দাউদ (আ) এর দরবারে হাযির হল। তিনি বৃদ্ধার অভিযোগ সম্পর্কে বাতাসের কি বলার আছে জিজ্ঞেস করলে বাতাস বলল, আমি আল্লাহর নির্দেশানুসারেই বৃদ্ধার আটা উড়িয়ে নিয়েছি। আমি নিজ থেকে কিছুই করিনি।
ঘটনাটা ছিল এরুপ- একখানা বিরাট জাহাজ বহু মালপত্র এবং যাত্রী নিয়ে বিশাল সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছে। হঠাৎ এ জাহাজের তলদেশে একটি ছিদ্র হয়ে তা ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তখন জাহাজের যাত্রীরা কান্নাকাটি শুরু করল, এবং আল্লাহর নামে মানত করল, হে আমাদের রব, আপনি আমাদের প্রান রক্ষা করলে এ জাহাজের সব সম্পদ আমরা আপনার পথে বিলিয়ে দেব। তখন আমি আল্লাহর নির্দেশে এ বৃদ্ধার আটা উড়িয়ে নিয়ে এ জাহাজটির ছিদ্রে লাগিয়ে তা বন্ধ করে দেই। তাই জাহাজের সবাই নিরাপদ ছিল।
এর কয়েকদিন পরই সমুদ্র তীরে একখানা জাহাজ এসে নোঙ্গর করেছে। সংবাদ পেয়ে হযরত দাউদ (আ) সেখানে হাজির হলেন। জাহাজের আরোহীরা বলল হুজুর, এ জাহাজের সব মালপত্র আমরা আল্লাহর পথে দান করার মানত করেছি। আপনি সব মাল গ্রহণ করে যথাযোগ্য স্থানে দান খয়রাত করে দিন।
হযরত দাউদ (আ) জাহাজের মাল গ্রহণ করে তার অর্ধেক সে বৃদ্ধাকে এবং বাকি অর্ধেক অন্যান্য দারিদ্র এর মাঝে বিতরন করলেন। তারপর তিনি বৃদ্ধাকে জিজ্ঞেস করলে, হে বৃদ্ধা, তুমি এমন কি নেক আমল করেছ যার বিনিময়ে তোমার উপরে আল্লাহর এত অনুগ্রহ বর্ষিত হল?? জবাবে বৃদ্ধা বলল,
হে আল্লাহর নবী,আমি কোন সৎকাজ করিনি, তবে আমার বাড়িতে কোন ভিক্ষুক এলে তাকে আমি কখনো খালি হাতে ফিরাই না। কিছু না কিছু অবশ্যই দিয়ে খুশী করে দেই। এজন্য আমি কোনদিন না খেয়েও থাকি।
সেদিন একজন ভিক্ষুক এসে তার ক্ষুধার্ত থাকার কথা জানাল। তখন ঘরে সকলের খাওয়া হয়ে গিয়েছিল। কেবল মাত্র আমিই খাওয়ার বাকি ছিলাম। নিজের জন্ন্য যে দুইটা রুটি রেখেছিলাম তাই তাকে দিয়ে দিলাম। ২টা রুটি খেয়ে সে বলল, ক্ষুধা তো আমার গেল না, থেকেই গেল ক্ষুধা থাকলে আরো কিছু দিন। তখন ঘরে খাবার মত কিছুই ছিলনা, ঘরে কিছু গম ছিল, তখন আমি ভিক্ষুককে বল্লাম, আপনি একটু অপেক্ষা করুন, আমি গম পিসে আনতেছি, এক্টু পরেই আপনাকে রুটি বানাই দিতে পারবো। তখন ভিক্ষুক অপেক্ষা করল।
আমি গিয়ে গম পিশে আটা নিয়ে ঘরে আসতেছিলাম, আমার সেই আটাগুলোই বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে গেল, যার বিচার আমি আপনার দরবারে দিয়েছিলাম। আমি এখন বুজতে পারলাম মহান আল্লাহ আমাকে এ আটার পরিবর্তই দয়াপরবস হয়ে এ মালগুলো দান করলেন।
Sunday, June 21, 2020
করোনা ভাইরাস
Thursday, June 18, 2020
ইদুর বিড়াল সৃষ্টির রহস্য
Saturday, May 16, 2020
আব্দুল ওহাব নজদির পরিচয়
-----------------------------------------------------------------------
বর্তমান যুগে প্রত্যেক দলের লোকেরাই বলে আমরা সত্যের উপর রয়েছি এবং ওহাবী নজদী সম্প্রদায়ের লোকেরা নিজেদের লোক ছাড়া অন্য লোককে তারা মুমিন মনে করে না।
তাদের কাজ হচ্ছে প্রতিটি কদমে কুফর,শিরক,বিদআত প্রত্যেক কথা কাজে ফতোয়াবাজী করা তাদের স্বভাব।নবী-গাউছ ওলী-আব্দাল পীর-মাশায়েখ ও মাজার সম্পর্কে সমালোচনা করা তাদের অভ্যাস। পৃথিবীর মধ্যে যতো ফেতনা রয়েছে এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ফেতনার মধ্যে ওয়াহাবী নজদী ফিতনা সর্বাধিক বিপদজনক।
এ ব্যাপারে আমাদের নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) প্রথম থেকেই ভবিষ্যৎবাণী করে গেছেন।
"মিশকাত শরীফ" ২য় খণ্ডের ইয়ামন ও শামের বর্ণনা অধ্যায়ে বুখারী শরীফের বরাত দিয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)থেকে বর্ণিত- একদিন দয়ার সাগর হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হাত তুলে দোয়া করেছিলেন-
ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺑﺎﺭﻙ ﻟﻨﺎ ﻓﻰ ﺷﺎﻣﻨﺎ
হে আল্লাহ আমাদের শাম প্রদেশে বরকত দাও।
ﺍﻟﻠﻬﻢ ﺑﺎﺭﻙ ﻟﻨﺎ ﻓﻰ ﻳﻤﻨﻨﺎ
হে আল্লাহ আমাদের ইয়ামন দেশে বরকত দাও।
উপস্থিত শ্রোতাদের মধ্যে একজন সাহাবী আরজ করলেন! ইয়া রাসূলাল্লাহ! (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)আমাদের নজদের জন্য দোয়া করুন।পুনরায় হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) দোয়া করলেন, শাম ও ইয়ামনের নাম উল্লেখ করলেন কিন্তু নজদের নাম নিলেন না।পুনরায় দৃষ্টি আকর্ষণ পূর্বক নজদের জন্য দোয়া করার অনুরোধ করার পরেও হুজুর শাম ও ইয়ামনের জন্য উপর্যুপরি তিনবার দোয়া করলেন কিন্তু বারবার নজদের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও নজদের জন্য দোয়া করলেন না।বরং শেষে বললেন-
ﻫﻨﺎﻙ ﺍﻟﺰﻻﺯﻝ ﻭﺍﻟﻔﺘﻦ ﻭﺑﻬﺎ ﻳﻄﻠﻊ ﻗﺮﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﻦ
যে অঞ্চল সৃষ্টির আদিকালেই আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে বঞ্চিত সে ভূখণ্ডের জন্য দোয়া কিভাবে করি?
এখানেই ইসলামের ভিতকে নাড়াদানকারী ভূমিকম্প ও ফেতনা আরম্ভ হবে এখানেই শয়তানের দলের আবির্ভাব ঘটবে’ এ থেকে বুঝা গেলো হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর পবিত্র দৃষ্টিতে (পথ ভ্রষ্ট ও ঈমান নষ্ট করার দিক থেকে) দাজ্জালের ফেতনার পরে ছিলো নজদের ফেতনার স্থান,যার সম্পর্কে এভাবে ভবিষ্যৎবাণী করে গেলেন।
অনুরূপ "মিশকাত শরীফ" ১ম খণ্ডের কিসাস শীর্ষক আলোচনায় ‘মুরতাদদের’ (ধর্মদ্রোহীদের) হত্যা’ অধ্যায়ে নাসায়ী শরীফের উদ্ধৃতি দিয়ে হযরত আবু বরযা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত যে, একবার হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কিছু গণিমতের মাল বণ্টন করছিলেন,তখন পিছন থেকে একজন লোক বললেন- হে মুহাম্মদ! আপনি ন্যায়সঙ্গতভাবে বণ্টন করেননি।হুজুর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) রাগান্বিত হয়ে বললেন- আমার পরে আমার থেকে বেশি কোন ইনসাফকারী ও ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি পাওয়া যাবে না।তারপর বললেন- শেষ যামানায় এর বংশ থেকে একটি গোত্রের উদ্ভব হবে।যারা কুরআন পাঠ করবে বটে,কিন্তু কুরআন তাদের কণ্ঠনালীর নীচে পৌঁছবে না।কিন্তু তারা ইসলাম থেকে এমনিভাবে দূরে সরে যাবে,যেমনিভাবে তীর শিকার ভেদ করে বের হয়ে যায়-
ﺳﻴﻤﺎ ﻫﻢ ﺍﻟﺘﺤﻠﻴﻖ ﻻﻳﺰﻟﻮﻥ ﻳﺨﺮﺟﻮﻥ ﺣﺘﻰ ﻳﺨﺮﺝ ﺍﺧﺮﻫﻢ ﻣﻊ ﺍﻟﺪﺟﺎﻝ ﻓﺎﺫﺍ ﻟﻘﻴﺘﻤﻮﻫﻮ ﻫﻢ ﺷﺮ ﺍﻟﺨﻠﻖ ﻭﺍﻟﺘﺨﻠﻴﻘﺔ
(মাথা মুণ্ডনো হলো এদের বিশেষ চিন্হ এদের একের পর এক বের হতেই থাকবে।শেষ পর্যন্ত এদের শেষ দলটি দাজ্জালের সঙ্গে মিলিত হবে। যদি তোমরা তাদের সাক্ষাত পাও, জেনে রেখো,তারা হলো সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে নৃশংস।)
এ হাদিসের মধ্যে এদের পরিচয় বর্ণনা করা হয়েছে।মাথা মুণ্ডানো ছাড়া এখনও কোন ওহাবীকে পাওয়া মুশকিল।
অন্য জায়গায় তিনি আরো বলেন- তারা মুর্তি পূজারীদেরকে ছেড়ে দেবে, কিন্তু মুসলমানদেরকে হত্যা করবে। (বুখারী শরীফ ১ম খণ্ড কিতাবুল আম্বিয়া ইয়াজুজ মাজুজের কাহিনীর সাথে সম্পৃক্ত বর্ণনা,মুসলিম শরীফ ও মিশকাত শরীফে আল মু’জিজাত অধ্যায়ে প্রথম পরিচ্ছেদ দেখুন উক্ত জায়গায় মিশকাত শরীফে আরো উল্লেখিত আছে-
ﻟﺌﻦ ﺍﺩﺭﻛﺘﻢ ﻻﻗﺘﻠﻨﻬﻢ ﻗﺘﻞ ﻋﺎﺩ
যদি আমি তাদেরকে পেতাম,আদ গোত্রের মত হত্যা করতাম।
এখনও দেখা যায় যে,দেওবন্দীরা সাধরণভাবে হিন্দুদের সাথে বেশি সংশ্রব রাখে মুসলমানদেরকে ঘৃণার চোখে দেখে।তারা সবসময় মুসলমানদের উপর বিশেষ করে হেরামাইন শরীফাইনের অধিবাসীদের ইজ্জত আবরুর উপর প্রচণ্ড আঘাত হেনেছেন।সাইফুল জব্বার ও ‘বোয়ারেফে মুহাম্মদীয়া আলা ইরগামাতিন নজদিয়া’ ইত্যাদি ইতিহাসের বই দেখুন।
আব্দুল ওহাব নজদীর জন্ম,পরিচয় ও ভ্রান্ত মতবাদ উপরোক্ত মহান ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী ১১১১ হিজরী মোতাবেক ১৭০৫ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব নজদী, নজদ দেশে জন্মগ্রহণ করেন।জীবনের শুরুতে মদিনা মনোয়ারা লেখাপড়া করেছিলো।মদিনা মনোয়ারা ও মক্কা মুকাররমার মধ্যে আসা যাওয়া করতো।তার গোড়াছিলো তামীম গোত্রের সাথে গাথাঁ।মদিনা মনোয়ারার অনেক আলেমের কাছে বিদ্যার্জন করতো।এই শিক্ষকদের মধ্যে শায়খ মোহাম্মদ ইবনে সুলাইমান কারভী শাফেয়ী ও শায়খ মুহাম্মদ হায়াত সিন্ধী হানাফী অন্যতম।এ দুজন শিক্ষক এবং অন্যান্য শায়খগণ তার মধ্যে ধর্মদ্রোহীতার ও পথভ্রষ্টতার বিভিন্ন আলামত লক্ষ্য করতেন আর বলতেন-
ﺳﻴﻀﻞ ﻫﺬﺍ ﻭﻳﻀﻞ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻪ ﻣﻦ ﺑﻌﺪﻩ ﻭﺍﺷﻘﺎﻩ ﻓﻜﺎﻥ ﺍﻻﻣﺮ ﻛﺬﺍﻟﻚ ﻭﻣﺎ ﺍﺧﻄﺄﺕ ﻓﺮﺍﺳﺘﻬﻢ ﻓﻴﻪ
অর্থাৎ অনতিবিলম্ভে সে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে।আল্লাহতা’য়ালা তার মাধ্যমে পররবর্তী আগমনকারী হতভাগ্য লোকদেরকেও বিভ্রান্ত করবেন।
সুতরাং তেমনই ঘটেছে।
তার শ্রদ্বেয় পিতাও তার মধ্যে ধর্মদ্রোহিতার নিদর্শন দেখতে পান এবং প্রায় সময়ই তার সমালোচনা করতেন।মন্দ দিকগুলো তুলে ধরতেন।লোকজনকে বাঁচানোর জন্য তাকিদ সহকারে সাবধান করে দিতেন।এভাবে তার ভাই আল্লামা সোলাইমান ইবনে আব্দুল ওয়াহহাবও তার বিদআতগুলো (নব আবিস্কৃত অবৈধ আকিদা ও কাজকর্ম, ভ্রান্তি এবং বাতিল আকিদাসমূহ) প্রত্যাখ্যান ও সেগুলো খণ্ডন করতেন।এমনই তার খণ্ডনে "আস সাওয়াইকুল ইলাহিয়া ফির রদ্দে আলাল ওয়াহহাবিয়া" নামে একটি কিতাব প্রণয়ন করেন।
আল্লামা মুহাম্মদ আব্দুর রহমান সিলহেটী (আলাইহির রহমত) নজদী সম্পর্কে লিখেছেন-
দ্বিতীয় সুলতান মাহমুদ খানের শাসনামলে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব নামের এক ব্যক্তির আত্মপ্রকাশ ঘটল।ইবনে তাইমিয়া মরে যাওয়ার পর সে তার বিলুপ্ত ভ্রান্ত আকিদাগুলোকে পুনরায় প্রকাশ করলো-
ﻭﺍﺑﺘﺪﻉ ﺷﻴﻌﺔ ﻣﺨﺎﻟﻔﺎ ﻋﻦ ﻣﺬﻫﺐ ﺍﻟﺴﻨﺔ ﻭﻛﺎﻥ ﻳﻄﻮﻑ ﻣﻦ ﺍﻟﻌﺮﺏ ﺍﻟﻰ ﺍﻣﻜﻨﺔ ﻭﺷﺎﻡ ﻭﺍﻟﺒﻐﺪﺍﺩ ﻭﺍﻟﺒﺼﺮﺓ ﻭﻣﻦ ﻫﻨﺎﻙ ﺭﺟﻊ ﺍﻟﻰ ﺑﻼﺩ ﺍﻟﻌﺮﺏ ﻭﺑﺎﺗﺴﻌﺎﻑ ﺍﻻﻣﺮﺑﻦ ﺍﻟﺴﻌﻮﺩ - ﺍﻟﺬﻯ ﻛﺎﻥ ﺩﺧﻞ ﻓﻰ ﻫﺬﻩ ﺍﻟﺜﻴﻌﺔ ﺟﺬﺏ ﺍﻟﻴﻪ ﺟﻤﻬﻮﺭ ﻣﻦ ﺍﻫﻞ ﺍﻟﺒﻼﺩ ﻭﺳﻤﻮﺍ ﻟﻮﻫﺎﺑﻴﺔ ﺑﺎﺳﻢ ﻛﺒﻴﺮﻫﻢ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻮﻫﺎﺏ
অর্থাৎ সে নতুন শরীয়ত প্রকাশ করলো।আহলে সুন্নাতের বিপক্ষে সে একটি দল গঠন করে নিলো।ফোরাত (ইউফ্রেটিস) থেকে সিরিয়া,বাগদাদ শরীফ ও বসরা পর্যন্ত শহরগুলোতে ঘুরে চষে বেড়িয়েছিলো।আর সেখান থেকে আরবে ফিরে এলো- আমির ইবনে সাউদের সহায়তা পাবার কারণে সে উক্ত দলে যোগ দিয়েছিলো।শহরের বড় বড় লোকদেরকেও নিজের দিকে টেনে নিলো।এ কারণে তাদেরকে তাদের দলনেতা মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাবের নামানুসারে "ওহাবী" বলা হয়।
উক্ত ওহাবী সম্প্রদায়ের প্রশংসিত মৌলভী ওবায়দুল্লাহ সিন্ধী লিখেছেন- প্রকৃত ঘটনা হলো।আলোচ্য লোকটি এমন কোন শিক্ষক থেকে জ্ঞনার্জন করেনি,যিনি তাকে সঠিক হিদায়তের পথে পরিচালিত করতেন উপকারী জ্ঞানের দিকে পথপ্রদর্শন করতেন এবং দ্বীনের বিষয়াবলীর ব্যাপারে তার মধ্যে বুঝ-সমঝের উম্মেষ ঘটাতেন।জ্ঞানার্জনের ধারাবাহিকতায় লোকটি শুধু এতটুকু করেছে যে শায়খ ইবনে তাইমিয়া এবং তার শিষ্য ইবনে কাইয়েমের কয়েকটি কিতাব পড়ে নিয়েছে আর তার তাকলিদ (অনুসরণ) করেছে।
শায়খ সাইয়্যেদ আমিন,যিনি ইবনে আবেদীন নামে খ্যাত রাদ্দুল মুহতার এবং এর মধ্যে বিদ্রোহীদের আলোচনা অধ্যায়ে লিখেছেন যে, তাদের উপমা হচ্ছে তেমনি যেমন আমাদের যুগের মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাবের অনুসারীগণ।
কিছুদিন হলো এসব লোক নজদ থেকে বের হয়েছে।আর দুই হেরামশরীফের উপর ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করে নিয়েছে।এরা নিজেদেরকে হাম্বলী মাযহাবের অনুসারী বলে দাবি করে।কিন্তু তাদের অবস্থা এমন যে, নিজেদেরকে ছাড়া বাকী সকল মুসলমানদের যারা তাদের আকিদার পরিপন্থী হয় কাফির মনে করে এবং তাদের রক্তপাত ঘটানোকে জায়েয মনে করে।
সুতরাং,তারা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত ও তাদের আলিমকে হত্যা করতে দ্বিধাবোধ করেনি।
মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব নজদি যখন নিজেদের বাতিল আকিদা এবং ভ্রান্ত চিন্তাধারা প্রকাশ করার ইচ্ছা করলো, তখন সে মদিনা মনোয়ারা থেকে পূর্ব দিকে চলে গেলে।আর লোকজনকে তার সাজানো মনগড়া কথাগুলো শুনালো।আর বুঝালো যে, তারা (জন সাধারণ) যে সব আকিদাপোষণ করে সব শিরক ও ভ্রান্ত।আর তার ভ্রান্ত আকিদাকে ধীরে ধীরে প্রকাশ করতে লাগলো।যখন সাধারণ জঙ্গলি লোকেরা তার আকিদাগুলো গ্রহণ করে নিলো ১১৫০ হিজরিতে বিভিন্ন জেলায় তার এসব কথা ছড়িয়ে পড়লো এবং দরইয়াহ এলাকায় শাসক মুহাম্মদ ইবনে সাউদ তার সাহায্যকারী হয়ে গেলো এবং শায়খই নজদীকে তার দেশ সম্প্রসারণের মাধ্যমে করে নিলো এবং দরইয়াহবাসীদেরকে সে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাবের অনুসরণের প্রতি উদ্বুদ্ধ করল।
১২০০ (বারো শত) বৎসর পরে মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল ওয়াহহাব নামায কালেমার তাবলীগ চালিয়ে সুন্নি মুসলমানদেরকে ফাঁকি দিয়ে নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও সাহাবায়ে কেরামের আকায়েদের বিপরীত আকিদা শিক্ষা দিয়ে জামাতভূক্ত করে একটা বেইমান শয়তানের গোমরাহী দল গঠন করেছে।এই দলের নামই ওহাবী দল।
মুহাম্মদ বিন আব্দুল ওয়াহহাব নজদী ওহাবি গোমরাহি ধর্মের একটা ছোট কিতাব লিখেছে যাহার নাম ‘কিতাবুত তাওহীদ’।
উক্ত কিতাবুত তাওহীদ দ্বারা আরবদেশে ওহাবী ধর্ম জারি হতে থাকে।ওহাবী গোমরাহী দলের পরিচয় পূর্বে আলোচনা করেছি।যখন ওহাবীরা মাজারগুলি ধ্বংশ করা শুরু করে দেয় ঠিক সে সময় মিশরের হাকিম ও ইসলামী সৈন্যগণ তাদের সঙ্গে জিহাদ করে পবিত্র মক্কা ও মদিনা শরীফ হতে ওহাবীদেরকে বিতাড়িত করে পূর্ণ দখল করে নেয়। ১২৩৩ হিজরিতে এই ঘটনা হয়।
আল্লামা শামী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) এর জগবিখ্যাত ফতোয়ার কিতাব রাদ্দুল মুহতার কিতাবে প্রমাণ করে দিয়েছে ওহাবী দল প্রকৃতপক্ষে খারেজী দল, ইসলাম ধর্মের চার মাযহাব অমান্যকারী লা- মাযহাবী গোমরাহী দল।তারা তাদের গোমরাহী ওহাবী মতবাদকে বিশ্বে ছড়াবার জন্য অমানবিক হত্যা কাণ্ডের প্রতিযোগিতা চালায় কিন্তু আল্লাহপাক তাদের দর্পকে চূর্ণ করে দিলেন।ইসলামী সৈন্য দ্বারা তাদের উপর জয়ী করে পবিত্র মক্কা ও মদিনাশরীফকে মুক্ত করেন।
#NMH9
Thursday, March 26, 2020
বিপদে আজান দেওয়া
আযান দেওয়া কি বিদায়াত?
===== 🕌 =====
আশাকরি লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়বেন । যে বা যারা আজ আযান দেওয়াকে নামাজের জন্য খাস অর্থাৎ নির্দিষ্ট করে ইসলামে নামাজ ব্যতীত অন্য কোথাও আজানের ধ্বনি উচ্চারিত হতে পারবেনা এবং এই পবিত্র ধ্বনিকে হিন্দুদের উলুধ্বনির সাথে মিলিয়ে অবান্তর ফতোয়া দেওয়া লোকদের জন্য আজকের আমার এ লেখাটি। আযানের আহবানটি করেছিলাম নির্দিষ্ট সময় রাত দশটায়। গভীর রাতে মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য নয়। ধরে নিলাম অনেকে না বুঝে রাতে আযান দিয়েছে তো কি হয়েছে! শয়তান ছাড়া তো কোন মুমিনবান্দার বিরক্তের কারণ হওয়ার কথা নয়। কবি কায়কোবাদ বলেছিলেন,
"কে ঐ শোনাল মোরে আযানের ধ্বনি।
মর্মে মর্মে সেই সুর বাজিল কি সুমধুর"।
আমাদের সমাজে নয় শুধু বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ বিপদ-আপদে ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মুসলিম সমাজে আযান দিয়ে থাকেন। কই কখনো তো ফতোয়া দেখিনি! আমি যখন স্পেনে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে সরকারের অনুমতিক্রমে আযান দেওয়ার ভিডিও আপলোড দিয়েছি তখন অসংখ্য মানুষ সে ভিডিও। লাইক কমেন্ট এবং শেয়ার করেছেন। এমনকি আজকে যারা ফতোয়াবাজী করছেন তাদের বিভিন্ন পেজেও সেই ভিডিও আপলোড দিয়েছে। সমস্যা কেবল একি আযান যখন দেশে দেওয়া হলো তখন তাদের ফতোয়ার ছড়াছড়ি। কারণ দেশে ফতোয়াবাজের অভাব নেই। আপনি খবর নিয়ে দেখুন, একি আযান ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলমানরাও দিয়েছে। ভারতের বিভিন্ন সংগঠন এ আযানের আহবান করেছেন। আমার কাছে ফোন করেও তারা জানিয়েছে। তবে সেখানে অনেকে ভূমিকম্প ভেবে বিভ্রান্ত হয়েছে জানতে পেরে আমি অবিহিত করেছিলাম আমাদের দেশে কেউ যেন বিভ্রান্ত না হয়।
এবার আসুন সাধারণ মানুষ কেন বিভ্রান্ত হয়েছে? উত্তর একটাই আমাদের সমাজেও সবাই অবগত আছেন যে বিপদে আযান দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। মূলত এটা নতুন কোন নিয়ম নয়, এতোদিন কোন ফতোয়াও দেয়নি কেউ। আজ ভূমিকম্পের পরিবর্তে করোনাভাইরাসের হওয়ায় ফতোয়াবাজদের গায়ে আগুন লেগেছে। আমি নিশ্চিত যে ইসলামে কোথাও নিষেধ নেই যে নামাজ ব্যতীত অন্য কোথাও আযান দেওয়া যাবেনা। যদি থাকে দলিল দিয়ে সাহায্য করার অনুরোধ রইলো।
আসলে বিপদে আযান দেওয়াকে যারা আজ বিদায়াত বলে প্রচার করছে তাদের ফতোয়া মতে পৃথিবীর অধিকাংশ মুসলমানই বিদায়াতকারী। কারণ বিপদে আযান অনেক দেশে দেওয়া হয়। মূলত ফতোয়াবাজরা জানেওনা বিদায়াতের প্রকৃত সংজ্ঞা কি।
প্রশ্নঃ বিদায়াত কাকে বলে❓ এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর যদি বলি তো সংক্ষেপে বলতে পারি " ইসলামের মূল বিষয়গুলিতে ইবাদতের উদ্দেশ্যে নতুন কিছু সংযোজন করাকে বিদায়াত বলে"। কিন্তু যখন কোন ব্যক্তি স্বইচ্ছায় আযান দেয়, উদ্দেশ্য তার যাইহোক বিদায়াত নয়। বিপদ থেকে রক্ষার আযানটি ইসলামে নতুন কিছু নয় এবং আযানদাতা ইবাদতের উদ্দেশ্যে আযানটি দেয়নি। নামাজ ব্যতীত আযান দেওয়ার হুকুম বিদায়াত হলে নিন্মোক্ত হাদিসের হুকুমে কি ফতোয়া দেওয়া যায় একটু বলুন! আসুন নামাজ ব্যতীত আযান দেওয়া যায় কিনা দেখি।
◾হযরত আবু রাফেই (রা.) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেন:
” رأيتُ رسول الله صلى الله عليه و سلم أذّنَ في أُذُنِ الحسنِ ابن عليٍّ حين ولدتهُ فاطمة بالصلاة ” رواه أبو داود والترمذي و قال: هذا حديث صحيح.
অর্থাৎ “ আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আলীর (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) পুত্র হাসানের (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) কানে নামাযের আযানের মত আযান দিতে দেখেছি। যখন ফাতেমা (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহা) তাঁকে জন্ম দেয়।”
(আবু দাউদ এবং তিরমিযী)
▪উল্লেখঃ ইমাম তিরমিযী (রহঃ) হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন।
👉 উপরোক্ত হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে আযানটি ঠিক নামাজের মতোই দেওয়া হয়েছিল। এখানেই স্পষ্ট যে নামাজ ব্যতীতও আযান দেওয়া যায়। এটি বিদায়াত নয়। আরবি বুঝলে এবারতটি ভালো করে দেখে নিন।
◾খলিফাতুল মুসলেমীন হজরত আলী রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত,
قَالَ رَایٰ النَّبِیُّ صَلّٰی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَسَلَّم حُزِیْناً فَقَالَ یَا ابْنَ اَبِیْ طَالِبٍ اِنِّیْ اَرَاكَ حُزِیْناً فَمُرْ بَعْضَ اَھْلِكَ یُؤَذِّنُ فِیْ اُذُنِكَ فَاِنَّهٗ دَرْءُ الْھَّمِ
অর্থাৎ ; রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আমাকে চিন্তিত অবস্থায় দেখে বললেন, হে আলী! (রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) আমি তোমাকে উদ্বিগ্ন অবস্থায় দেখছি। তোমার পরিবারের কাওকে তোমার কানে আযান দিতে বলো। কেননা আযান চিন্তা ও উদ্বিগ্নতা দূর করতে সহায়ক।
(মুলতান থেকে প্রকাশিত মিরকাতুল মাফাতীহ শরহে মিশকাতুল মাসাবীহ, আযান পর্ব)
বাকীটা নিজেই ভেবে দেখুন আযান কি শুধু নামাজের জন্য খাস! নাকি বিপদমুক্ত হতেও দেওয়া যায়।
◾ হাদিস শরীফে আরও বর্ণিত আছে যে, যখন আযানের শব্দগুলো উচ্চারণ করা হয় তখন আযানের শব্দ যে পর্যন্ত শুনা যায়, সে পর্যন্ত শয়তান পলায়ন করে থাকে। (মুত্তাফাকুন আলাইহ)
এ হাদিস থেকে স্পষ্ট যে শয়তান একজন মুমিন বান্দার জন্য বিপদজনক। সুতরাং মানুষের নাফরমানীর ফলে মানবকূলে গজব আসার মূলে শয়তানের প্ররোচনাই যথেষ্ট। শয়তান থেকে রক্ষা পেতে আযানের শব্দগুলো একজন মুসলমান উচ্চারণ করতেই পারে, দোষের কিছু নেই। এ আযান দেওয়া ছিলো মূলত উত্তম কাজ হিসেবে। বাধ্যতামূলক কোন আযান নয়। তবে অসময়ে আযান দিয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা অনুচিৎ। আযান দেওয়াটাই ছিলো মূলত একটি ধার্মিকতার প্রতি আহবান। যে আহবানে মানুষ করুনাময় দয়ালু আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানানোর প্রতি অনুপ্রাণিত হয়। এছাড়া ইসলামে যদি উত্তম কোন ধ্বনি থেকেই থাকে সেটা কেবল আযানের মধুর ধ্বনিই। আযানের মাধ্যমেই তো আল্লাহর রহমত অবতীর্ণ হয়। দূরীভূত হয় বিপদ আপদ।
◾এছাড়াও খাদেমে রাসুল হজরত আনাস বিন মালিক রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,
"اِذَا اُذِّنَ فِیْ قَرِیَةٍ اٰمَنَھَا اللہُ مِنْ عَذَابِهٖ فِیْ ذٰلِكَ الْیَوْمِ"
অর্থাৎ ; যখন কোন গ্রামে আযান দেয়া হয়,তখন মহান আল্লাহ সেদিন গ্রামটিকে তার আযাব থেকে নিরাপদে রাখেন। (মু'জামুল কবীর,খ-১,পৃ-২৫৭/৭৪৬)
◾হানাফী মাজহাবের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ রদদুল মুখতার বা ফতোয়ায়ে শামীতে আযানদানের ১০টি মুস্তাহাব সময়ের মধ্যে মহামারীর সময় আযানের কথা উল্লেখ রয়েছে। কথা হচ্ছে যারা আজ মুস্তাহাব আযানের বিরোধিতা করছে তারা মূলত লা মাজহাবী। তাদের কাজেই হচ্ছে মাজহাবীদের বিরুদ্ধে বলে সমাজে ফিতনা করা।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া মহামারী করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে আল্লাহ দরবারে তাঁর পবিত্র শব্দের মাধ্যমে আহবান দিয়ে আমরা কোন অন্যায় করিনি। আমি কৃতজ্ঞ তাদের কাছে যারা অধমের আহবানে সাড়া দিয়ে দেশবিদেশে আযানের রেকর্ড করেছেন। তবে গভীরভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি যারা না বুঝে মানুষকে অসমে আযান দিয়ে কষ্ট দিয়েছেন। আমি জানিয়েছিলাম কোন মানুষ যেন বিভ্রান্ত না হয়। এর পরেও পবিত্র এ ধ্বনি উচ্চারিত হওয়ায় কোন মুসলমানদের অখুশি হওয়ার কারণ দেখিনা। আল্লাহ সবাইকে কবুল করুন। আমিন।
মহামারিতে আজান দেওয়া
আযান ইসলামের এক মৌলিক ইবাদত নামাজের দিকে আহবানের মাধ্যম। আযানের মাধ্যমে আল্লাহর রহমত অবতীর্ণ হয়,বিপদ ও আযাব দূরীভূত হয়।
হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা:)থেকে বর্ণিত হাদীসে হুযুর (ﷺ) এরশাদ করেন,
"اِذَا اُذِّنَ فِیْ قَرِیَةٍ اٰمَنَھَا اللہُ مِنْ عَذَابِهٖ فِیْ ذٰلِكَ الْیَوْمِ"
-যখন কোন গ্রামে আযান দেয়া হয়,তখন মহান আল্লাহ (ﷻ) সেদিন ওই গ্রামকে তার আযাব থেকে নিরাপদে রাখেন।
[আল-মু'জামুল কবীর,খ-১,পৃ-২৫৭,হাদিস:৭৪৬,মুদ্রণ:মাকতাবায়ে ফয়সলীয়া,বৈরুত। ফতোয়ায়ে রযভীয়্যা, খন্ড:৫,পৃ-৩৬৯,রেযা ফাউন্ডেশন, লাহোর]
মহামারীর সময় আযান দেয়া একটি মুস্তাহাব বিষয়।
ফিকহে হানাফীর প্রসিদ্ধ গ্রন্থ রদ্দুল মুখতার বা ফতোয়ায়ে শামীতে আযানদানের ১০টি মুস্তাহাব সময়ের মধ্যে মহামারীর সময় আযানের কথা উল্লেখ রয়েছে।
মুজাদ্দিদে দীনো মিল্লাত,ইমামে আহলে সুন্নাত,শাহ ইমাম আহমদ রেজা খান (রা.)লিখেন-
”وبا کے زمانے میں اذان دینا مستحب ہے“
- মহামারীর সময় আযান দেয়া মুস্তাহাব।
[ফতোয়ায়ে রযভীয়্যা,খ-৫,পৃ-৩৭০,মুদ্রণ-রেযা ফাউন্ডেশন লাহোর। বাহারে শরীয়ত,প্রথম খন্ড, অংশ-৩,পৃ-৪৬৬,মাকতাবাতুল মদীনা করাচী]
কারণ এ মহামারীর কারণে জনমনে ভয় ও অাতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে,যার ফলে জনগণ উদ্বিগ্ন থাকে, ভীতি ও ত্রাসের শিকার হয়,এমন পরিস্থিতিতেও আযান আত্নার প্রশান্তি ও ভয়-ত্রাস দূর করার মাধ্যম।
আবু নাঈম ও ইবনে আসাকির হযরত আবু হুরায়রা (রা.)থেকে বর্ণণা করেন,হুযুর ( ﷺ) ইরশাদ করেন,
نَزَلَ آدَمُ بِالْھِندِ فَاسْتَوْحَشَ فَنَزَلَ جِبْرَئِیْلُ عَلَیْه الصَّلَاۃُ وَالسَّلَام فَنَادیٰ بِالْاَذَاَنِ.
-যখন হযরত আদম (আ.)জান্নাত থেকে ভারতবর্ষে অবতরণ করলেন,ভীত-সন্ত্রস্থ হলেন,তখন জিবরাইল (আ.)নেমে (ভয় দূর করার জন্য) আযান দিলেন।
[হিলয়াতুল আউলিয়া,খ-২,পৃ-১০৭,হাদিস:২৯৯,মুদ্রণ-দারুল কিতাব আল-আরাবিয়্যা,বৈরুত]
মুসনাদুল ফিরদৌস-এ আমীরুল মু'মিনীন,সৈয়্যদুনা আলী আল-মুরতাদ্বা (রা.)থেকে বর্ণিত,
قَالَ رَایٰ النَّبِیُّ صَلّٰی اللہُ تَعَالٰی عَلَیْهِ وَسَلَّم حُزِیْناً فَقَالَ یَا ابْنَ اَبِیْ طَالِبٍ اِنِّیْ اَرَاكَ حُزِیْناً فَمُرْ بَعْضَ اَھْلِكَ یُؤَذِّنُ فِیْ اُذُنِكَ فَاِنَّهٗ دَرْءُ الْھَّمِ
-তিনি বলেন,হুযুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন আমাকে চিন্তিত অবস্থায় দেখে বললেন,হে আলী! আমি তোমাকে উদ্বিগ্ন অবস্থায় দেখছি, তোমার পরিবারের কাউকে তোমার কানে আযান দিতে বলো,কেননা তা চিন্তা ও উদ্বিগ্নতা দূরকারী।
[মিরকাতুল মাফাতীহ শরহে মিশকাতুল মাসাবীহ, আযান পর্ব,খ-২, পৃ-১৪৯,মুদ্রণ-মাকতাবায়ে ইমদাদীয়া,মুলতান]
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা মহামারি থেকে রক্ষায় অন্যান্য আমলের পাশাপাশি আযান দেয়া একটি শরীয়ত সমর্থিত মুস্তাহাব আমল। এটার জন্য কোন সময় নির্ধারিত নেই। মহান রাব্বুল আলামীন আমলের তাওফিক নসীব করুন। তদীয় প্রিয় হাবীব (ﷺ)'র উসীলায় মুসলিম মিল্লাতকে সকলপ্রকার বিপদাপদ ও মহামারী থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
Saturday, February 29, 2020
আল-ওয়াকিয়াহ
(নিশ্চিত ঘটনা)
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
পরম করুণাময় অতি দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
৫৬.১। ইযা-অক্বা‘আতিল্ ওয়া-ক্বি‘আতু।
৫৬.১ যখন কিয়ামত সংঘটিত হবে।
৫৬.২। লাইসা লিঅক‘আতিহা-কা-যিবাহ্।
৫৬.২ তার সংঘটনের কোনই অস্বীকারকারী থাকবে না।
৫৬.৩। খ-ফি দ্বোয়ার্তু র-ফি‘আহ।
৫৬.৩ তা কাউকে ভূলুণ্ঠিত করবে এবং কাউকে করবে সমুন্নত।
৫৬.৪। ইযা- রুজ্জ্বাতিল্ র্আদু রজ্জ্বান্।
৫৬.৪ যখন যমীন প্রকম্পিত হবে প্রবল প্রকম্পনে।
৫৬.৫। অবুস্সাতিল্ জ্বিবা-লু বাস্সা-।
৫৬.৫ আর পর্বতমালা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে পড়বে।
৫৬.৬। ফাকা-নাত্ হাবা-য়াম্ মুম্বাছ্ছাঁও।
৫৬.৬ অতঃপর তা বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় পরিণত হবে।
৫৬.৭। অকুন্তুম্আয্ওয়া-জ্বান্ ছালা-ছাহ্।
৫৬.৭ আর তোমরা বিভক্ত হয়ে পড়বে তিন দলে।
৫৬.৮। ফাআছ্হা-বুল্ মাইমানাতি মা য় আছ্হা-বুল্ মাইমানাহ্।
৫৬.৮ সুতরাং ডান পার্শ্বের দল, ডান পার্শ্বের দলটি কত সৌভাগ্যবান!
৫৬.৯। অআছ্হা-বুল্ মাশ্য়ামাতি মা য় আছ্হা-বুল্ মাশ্য়ামাহ্।
৫৬.৯ আর বাম পার্শ্বের দল, বাম পার্শ্বের দলটি কত হতভাগ্য!
৫৬.১০। অস্সা-বিকু নাস্ সা-বিকুন।
৫৬.১০ আর অগ্রগামীরাই অগ্রগামী।
৫৬.১১। উলা-য়িকাল্ মুর্ক্বরাবূন্।
৫৬.১১ তারাই সান্নিধপ্রাপ্ত।
৫৬.১২। ফী জ্বান্না-তিন্ না‘ঈম্।
৫৬.১২ তারা থাকবে নিআমতপুর্ণ জান্নাতসমূহে ।
৫৬.১৩। ছুল্লাতুম্ মিনাল্ আউয়্যালীন।
৫৬.১৩ বহুসংখ্যক হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে,
৫৬.১৪। অক্বালীলুম্ মিনাল্ আ-খিরীন্।
৫৬.১৪ আর অল্পসংখ্যক হবে পরবর্তীদের মধ্য থেকে।
৫৬.১৫। ‘আলা- সুরুরিম্ মাওদ্বূনাতিম্।
৫৬.১৫ স্বর্ণ ও দামী পাথরখচিত আসনে!
৫৬.১৬। মুত্তাকিয়ীনা ‘আলাইহা-মুতাক্ব-বিলীন্।
৫৬.১৬ তারা সেখানে হেলান দিয়ে আসীন থাকবে মুখোমুখি অবস্থায়।
৫৬.১৭। ইয়াতুফু ‘আলাইহিম্ ওয়িল্দা-নুম্ মুখাল্লাদূন।
৫৬.১৭ তাদের আশ-পাশে ঘোরাফেরা করবে চির কিশোররা,
৫৬.১৮। বিআক্ওয়া-বিঁও অআবা-রীক্বা অকাসিম্ মিম্ মা‘ঈনিল্।
৫৬.১৮ পানপাত্র, জগ ও প্রবাহিত ঝর্ণার শরাবপুর্ণ পেয়ালা নিয়ে,
৫৬.১৯। লা-ইয়ুছোয়াদ্দা‘ঊনা ‘আন্হা-অলা- ইয়ুন্যিফূন।
৫৬.১৯ তা পানে না তাদের মাথা ব্যথা করবে, আর না তারা মাতাল হবে।
৫৬.২০। অফা-কিহাতিম্ মিম্মা-ইয়াতাখাইয়্যারূন।
৫৬.২০ আর (ঘোরাফেরা করবে) তাদের পছন্দমত ফল নিয়ে।
৫৬.২১। অলাহ্মি ত্বোয়াইরিম্ মিম্মা-ইয়াশ্তাহূন।
৫৬.২১ আর পাখির গোশ্ত নিয়ে, যা তারা কামনা করবে।
৫৬.২২। অহূরুন্ ‘ঈনুন্।
৫৬.২২ আর থাকবে ডাগরচোখা হূর,
৫৬.২৩। কাআম্ছা-লিল্ লুলুয়িল্ মাক্নূন্ ।
৫৬.২৩ যেন তারা সুরক্ষিত মুক্তা,
৫৬.২৪। জ্বাযা-য়াম্ বিমা-কা-নূ ইয়া’মালূন্।
৫৬.২৪ তারা যে আমল করত তার প্রতিদানস্বরূপ।
৫৬.২৫। লা-ইয়াস্মাঊ’না ফীহা-লাগ্ওয়াঁও অলা-তাছীমান্।
৫৬.২৫ তারা সেখানে শুনতে পাবে না কোন বেহুদা কথা, এবং না পাপের কথা;
৫৬.২৬। ইল্লা-ক্বীলান্ সালা-মান্ সালা-মা-।
৫৬.২৬ শুধু এই বাণী ছাড়া, ‘সালাম, সালাম’
৫৬.২৭। অআছ্হা-বুল্ ইয়ামীনি মা য় আছ্হা-বুল্ ইয়ামীন্।
৫৬.২৭ আর ডান দিকের দল; কত ভাগ্যবান ডান দিকের দল!
৫৬.২৮। ফী সিদ্রিম্ মাখ্দ্বুদিঁও।
৫৬.২৮ তারা থাকবে কাঁটাবিহীন কুলগাছের নিচে,
৫৬.২৯। অত্বোয়াল্হিম্ মান্দ্বুদিঁও।
৫৬.২৯ আর কাঁদিপণূর্ কলাগাছের নিচে,
৫৬.৩০। অজিল্লিম্ মামদূদিঁও।
৫৬.৩০ আর বিস্তৃত ছায়ায়,
৫৬.৩১। অমা-য়িম্ মাস্কূবিঁও।
৫৬.৩১ আর সদা প্রবাহিত পানির পাশে,
৫৬.৩২। অ ফা- কিহাতিন্ কাছীরাতিল্।
৫৬.৩২ আর প্রচুর ফলমূলে,
৫৬.৩৩। লা-মাকতুআতিঁও অলা-মাম্নূ‘আতিঁও ।
৫৬.৩৩ যা শেষ হবে না এবং নিষিদ্ধও হবে না।
৫৬.৩৪। অফুরুশিম্ মারফূ‘আহ্।
৫৬.৩৪ (তারা থাকবে) সুউচ্চ শয্যাসমূহে;
৫৬.৩৫। ইন্না য় আন্শানা-হুন্না ইন্শা-য়ান্।
৫৬.৩৫ নিশ্চয় আমি হূরদেরকে বিশেষভাবে সৃষ্টি করব।
৫৬.৩৬। ফাজ্বা‘আল্না-হুন্না আব্কা-রন্।
৫৬.৩৬ অতঃপর তাদেরকে বানাব কুমারী,
৫৬.৩৭। উ’রুবান্ আত্র-বাল্
৫৬.৩৭ সোহাগিনী ও সমবয়সী।
৫৬.৩৮। লিআছ্হা-বিল্ ইয়ামীন্।
৫৬.৩৮ ডানদিকের লোকদের জন্য।
৫৬.৩৯। ছুল্লাতুম্ মিনাল্ আউয়্যালীনা।
৫৬.৩৯ তাদের অনেকে হবে পূর্ববর্তীদের মধ্য থেকে।
৫৬.৪০। অছুল্লাতুম্ মিনাল্ আ-খিরীন্।
৫৬.৪০ আর অনেকে হবে পরবর্তীদের মধ্য থেকে।
৫৬.৪১। অআছ্হা-বুশ্ শিমা- লি মা য় আছ্হা-বুশ্ শিমা-ল্।
৫৬.৪১ আর বাম দিকের দল, কত হতভাগ্য বাম দিকের দল!
৫৬.৪২। ফী সামূমিঁও অহামীমিঁও।
৫৬.৪২ তারা থাকবে তীব্র গরম হাওয়া এবং প্রচণ্ড উত্তপ্ত পানিতে,
৫৬.৪৩। অজিল্লিম্ মিঁ ইয়াহ্মূমিল্।
৫৬.৪৩ আর প্রচণ্ড কালো ধোঁয়ার ছায়ায়,
৫৬.৪৪। লা-বা-রিদিঁও অলা-কারীম্।
৫৬.৪৪ যা শীতলও নয়, সখু করও নয়।
৫৬.৪৫। ইন্নাহুম্ ক্বা-নূ ক্বব্লা যা-লিকা মুত্রাফীন্।
৫৬.৪৫ নিশ্চয় তারা ইতঃপূবের্ বিলাসিতায় মগ্ন ছিল,
৫৬.৪৬। অকা-নূ ইয়ুর্ছিরূ-না ‘আলাল্ হিন্ছিল্ ‘আজীম্।
৫৬.৪৬ আর তারা জঘন্য পাপে লেগে থাকত।
৫৬.৪৭। অ কা-নূ ইয়াকু লূনা আইযা-মিত্না-অকুন্না-তুরা-বাঁও অই’জোয়া-মান্ য়াইন্না-লামাব্ঊছূনা।
৫৬.৪৭ আর তারা বলত, ‘আমরা যখন মরে যাব এবং মাটি ও হাড়ে পরিণত হব তখনও কি আমরা পুনরুত্থিত হব?’
৫৬.৪৮। আ ওয়া আ-বা-য়ু নাল্ আওয়ালূন্।
৫৬.৪৮ ‘আমাদের পূর্ববর্তী পিতৃপুরুষরাও?’
৫৬.৪৯। কুল্ ইন্নাল্ আউয়্যালীনা অল্আ-খিরীনা
৫৬.৪৯ বল, ‘নিশ্চয় পূর্ববর্তীরা ও পরবর্তীরা,
৫৬.৫০। লামাজ্ব্ মূ‘ঊ না ইলা-মীক্ব-তি ইয়াওমিম্ মা’লূম্।
৫৬.৫০ এক নির্ধারিত দিনের নির্দিষ্ট সময়ে অবশ্যই একত্র হবে’।
৫৬.৫১। ছুম্মা ইন্নাকুম্ আইয়ুহাদ্দোয়া-ল্লূনাল্ মুকায্যিবূন।
৫৬.৫১ তারপর হে পথভ্রষ্ট ও অস্বীকারকারীরা,
৫৬.৫২। লাআ-কিলূনা মিন্ শাজ্বারিম্ মিন্ যাককুমিন্
৫৬.৫২ তোমরা অবশ্যই যাক্কূম গাছ থেকে খাবে,
৫৬.৫৩। ফামা-লিয়ূনা মিন্হাল্ বুতুন্ ।
৫৬.৫৩ অতঃপর তা দিয়ে পেট ভর্তি করবে।
৫৬.৫৪। ফাশা-রিবূনা ‘আলাইহি মিনাল্ হামীম্।
৫৬.৫৪ তদুপরি পান করবে প্রচণ্ড উত্তপ্ত পানি।
৫৬.৫৫। ফাশা-রিবূনা র্শুবাল্ হীম্।
৫৬.৫৫ অতঃপর তোমরা তা পান করবে তৃষ্ণাতুর উটের ন্যায়।
৫৬.৫৬। হা-যা-নুযুলুহুম্ ইয়াওমাদ্দীন্।
৫৬.৫৬ প্রতিফল দিবসে এই হবে তাদের মেহমানদারী,
৫৬.৫৭। নাহ্নু খলাকনা-কুম্ ফালাওলা তুছোয়াদ্দিক্বূন্।
৫৬.৫৭ আমিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি: তাহলে কেন তোমরা তা বিশ্বাস করছ না?
৫৬.৫৮। আফারায়াইতুম্ মা তুম্নূন্।
৫৬.৫৮ তোমরা কি ভেবে দেখেছ, তোমরা যে বীযর্পাত করছ সে সম্পর্কে?
৫৬.৫৯। আআন্তুম্ তাখ্লুকু নাহূ য় আম্ নাহ্নুল ‘খ-লিকুন্ ।
৫৬.৫৯ তা কি তোমরা সৃষ্টি কর, না আমিই তার স্রষ্টা?
৫৬.৬০। নাহ্নু ক্বার্দ্দানা-বাইনাকুমুল্ মাওতা অমা-নাহ্নু বিমাস্বূক্বীন।
৫৬.৬০ আমি তোমাদের মধ্যে মৃত্যু নির্ধারণ করেছি এবং আমাকে অক্ষম করা যাবে না,
৫৬.৬১। ‘আলা য় আন্ নুবাদ্দিলা আম্ছা-লাকুম্ অনুন্শিয়াকুম্ আম্ছা-লাকুম্ অনুন্শিয়াকুম্ ফীমা-লা-তা’লামূন্।
৫৬.৬১ তোমাদের স্থানে তোমাদের বিকল্প আনয়ন করতে এবং তোমাদেরকে এমনভাবে সৃষ্টি করতে যা তোমরা জান না।
৫৬.৬২। অলাক্বদ্ ‘আলিম্তুমুন্ নাশ্য়াতাল্ ঊলা-ফালাওলা- তাযাক্কারূন্।
৫৬.৬২ আর তোমরা তো প্রথম সৃষ্টি সম্পর্কে জেনেছ, তবে কেন তোমরা উপদেশ গ্রহণ করছ না?
৫৬.৬৩। আফারায়াইতুম্ মা-তাহারুছূন্।
৫৬.৬৩ তোমরা আমাকে বল, তোমরা যমীনে যা বপন কর সে ব্যাপারে,
৫৬.৬৪। আআন্তুম্ তায্রঊ’নাহূ য় আম্ নাহ্নুয্ যা-রিঊ’ন্।
৫৬.৬৪ তোমরা তা অঙ্কুরিত কর, না আমি অঙ্কুরিত করি?
৫৬.৬৫। লাও নাশা-য়ু লাজ্বা‘আল্না-হু হুত্বোয়া-মান্ ফাজোয়াল্তুম্ তাফাক্কাহূন্।
৫৬.৬৫ আমি চাইলে তা খড়-কুটায় পরিণত করতে পারি, তখন তোমরা পরিতাপ করতে থাকবে-
৫৬.৬৬। ইন্না-লামুগ্রমূন্।
৫৬.৬৬ (এই বলে,) ‘নিশ্চয় আমরা দায়গ্রস্ত হয়ে গেলাম’।
৫৬.৬৭। বাল্ নাহ্নু মাহ্রূমূন্।
৫৬.৬৭ ‘বরং আমরা মাহরূম হয়েছি’।
৫৬.৬৮। আফারয়াইতুমুল্ মা-য়াল্ লাযী তাশ্রবূন্।
৫৬.৬৮ তোমরা যে পানি পান কর সে ব্যাপারে আমাকে বল।
৫৬.৬৯। আআন্তুম্ আন্ যাল্তুমূহু মিনাল্ মুয্নি আম্ নাহ্নুল্ মুন্যিলূন্।
৫৬.৬৯ বৃষ্টিভরা মেঘ থেকে তোমরা কি তা বষর্ণ কর, না আমি বৃষ্টি বষর্ণ কারী?
৫৬.৭০। লাও নাশা-য়ু জ্বা‘আল্না-হু উজ্বা-জ্বান্ ফালাওলা- তাশ্কুরূ ন্।
৫৬.৭০ ইচ্ছা করলে আমি তা লবণাক্ত করে দিতে পারি: তবুও কেন তোমরা কৃতজ্ঞ হও না?
৫৬.৭১। আফারয়াইতুমু ন্না-র ল্লাতী তূরূন্।
৫৬.৭১ তোমরা যে আগুন জ্বালাও সে ব্যাপারে আমাকে বল,
৫৬.৭২। আ-আন্তুম্ আন্শাতুম্ শাজ্বারতাহা য় আম্ নাহ্নুল্ মুন্শিয়ূন্।
৫৬.৭২ তোমরাই কি এর (লাকড়ির গাছ) উৎপাদন কর, না আমি করি?
৫৬.৭৩। নাহ্নু জ্বা‘আল্না-হা তায্কিরতাঁও অমাতা-‘আল্ লিল্মুকওয়ীন্।
৫৬.৭৩ একে আমি করেছি এক স্মারক ও মরুবাসীর প্রয়োজনীয় বস্তু
৫৬.৭৪। ফাসাব্বিহ্ বিস্মি রব্বিকাল্ ‘আজীম্।
৫৬.৭৪ অতএব তোমার মহান রবের নামে তাসবীহ পাঠ কর।
৫৬.৭৫। ফালা য় উক্বসিমু বিমাওয়া-ক্বি‘ইন্ নুজুমি।
৫৬.৭৫ সুতরাং আমি কসম করছি নক্ষত্ররাজির অস্তাচলের,
৫৬.৭৬। অইন্নাহূ লাক্বাসামু ল্লাও তা’লামূনা ‘আজীম।
৫৬.৭৬ আর নিশ্চয় এটি এক মহাকসম, যদি তোমরা জানতে,
৫৬.৭৭। ইন্নাহূ লা কুর আ-নুন্ কারীমুন্।
৫৬.৭৭ নিশ্চয় এটি মহিমান্বিত কুরআন,
৫৬.৭৮। ফী কিতা-বিম্ মাক্নূনিল্।
৫৬.৭৮ যা আছে সুরক্ষিত কিতাবে,
৫৬.৭৯। লা ইয়া স্সুহূ য় ইল্লাল্ মুত্বোয়াহ্ হারূন্।
৫৬.৭৯ কেউ তা স্পর্শ করবে না পবিত্রগণ ছাড়া।
৫৬.৮০। তান্যীলুম্ র্মি রব্বিল্ ‘আ-লামী ন্।
৫৬.৮০ তা সৃষ্টিকুলের রবের কাছ থেকে নাযিলকৃত।
৫৬.৮১। আফাবিহা-যাল্ হাদীছি আন্তুম্ মুদ্হিনূনা।
৫৬.৮১ তবে কি তোমরা এই বাণী তুচ্ছ গণ্য করছ?
৫৬.৮২। অতাজ্ব ‘আলূনা রিয্ক্বকুম্ আন্নাকুম্ তুকায্যিবূন্।
৫৬.৮২ আর তোমরা তোমাদের রিয্ক বানিয়ে নিয়েছ যে, তোমরা মিথ্যা আরোপ করবে।
৫৬.৮৩। ফালাওলা য় ইযা-বালাগতিল্ হুল্ক্বুম্।
৫৬.৮৩ সুতরাং কেন নয়- যখন রূহ কণ্ঠদেশে পৌঁছে যায়?
৫৬.৮৪। অআন্তুম্ হীনায়িযিন্ তান্জুরূনা।
৫৬.৮৪ আর তখন তোমরা কেবল চেয়ে থাক।
৫৬.৮৫। অনাহ্নু আকরাবু ইলাইহি মিন্কুম্ অলা-কিল্লা-তুব্ছিরূন্।
৫৬.৮৫ আর তোমাদের চাইতে আমি তার খুব কাছে; কিন্তু তোমরা দেখতে পাও না।
৫৬.৮৬। ফালাওলা য় ইন্ কুন্তুম্ গইর মাদীনীন।
৫৬.৮৬ তোমাদের যদি প্রতিফল দেয়া না হয়, তাহলে তোমরা কেন
৫৬.৮৭। র্তাজ্বি‘ঊনাহা য় ইন্ কুন্তুম্ ছোয়া-দিক্বীন্।
৫৬.৮৭ ফিরিয়ে আনছ না রূহকে, যদি তোমরা সত্যবাদী হও?
৫৬.৮৮। ফা আম্মা য় ইন্ কা-না মিনাল্ মুর্ক্বারবীন।
৫৬.৮৮ অতঃপর সে যদি নৈকট্যপ্রাপ্তদের অন্যতম হয়,
৫৬.৮৯। ফারওহুঁও অরইহা-নুঁও অজ্বান্নাতু না‘ঈম্।
৫৬.৮৯ তবে তার জন্য থাকবে বিশ্রাম, উত্তম জীবনোপকরণ ও সুখময় জান্নাত।
৫৬.৯০। অ আম্মা য় ইন্ কা-না মিন্ আছ্হা-বিল্ ইয়ামীন।
৫৬.৯০ আর সে যদি হয় ডানদিকের একজন,
৫৬.৯১। ফাসালা-মুল্ লাকা মিন্ আছহা-বিল্ ইয়ামীন্।
৫৬.৯১ তবে (তাকে বলা হবে), ‘তোমাকে সালাম, যেহেতু তুমি ডানদিকের একজন’।
৫৬.৯২। অ আম্মা য় ইন্ কা-না মিনাল্ মুকায্যিবীনাদ্ব্ দ্বোয়া-ল্লীন।
৫৬.৯২ আর সে যদি হয় অস্বীকারকারী ও পথভ্রষ্ট,
৫৬.৯৩। ফা নুযুলুম্ মিন্ হামীমিঁও।
৫৬.৯৩ তবে তার মেহমানদারী হবে প্রচণ্ড উত্তপ্ত পানি দিয়ে,
৫৬.৯৪। অ তাছ্লিয়াতু জ্বাহীম্।
৫৬.৯৪ আর জ্বলন্ত আগুনে প্রজ্জ্বলনে।
৫৬.৯৫। ইন্না হা-যা-লাহুওয়া হাককুল্ ইয়াক্বীন্।
৫৬.৯৫ নিশ্চয় এটি অবধারিত সত্য।
৫৬.৯৬। ফাসাব্বিহ্ বিস্মি রব্বিকাল্ ‘আজীম্।
৫৬.৯৬ অতএব তোমার মহান রবের নামে তাসবীহ পাঠ কর।
Friday, February 21, 2020
সৌদি আরবে পীর নাই কেন??
"সৌদি আরব নাকি পীর নাই"!
আমি কমেন্ট করলাম, সৌদি আরব তো নামাজও নাই।
আরেকজন আমার কমেন্টের রিপ্লাই দিলো,
"নামাজ গেলো কই"?
আমি লিখলাম, "পীর গেলো কই"?
অন্যজন এসে নাক গলিয়ে বলল যে,
"সৌদিআরব সালাত আছে , সালাত"!
তখন আমি বললাম, "সৌদিআরব তো শায়েখ আছে, শায়েখ "
#পরে আর কোন রিপ্লাই দেয়নি ওরা...!
-
বাংলার পানি, ভারতের জল, ইংল্যান্ডের ওয়াটার, আরবের মাউন।
ঠিক তেমনি বাংলার মুরুব্বী,পাশ্চাত্যের পীর,আরবের শায়েখ, আর কোরআনের মুর্শিদ বা আউলিয়া ।
#এখন যদি কোন ব্যাক্তি যদি বলে আমি মাউন বা জল খাই, পানি খাই না! সে যেমন গাধা!
#ঠিক তেমনি, কেউ যদি বলে আমি শায়েখ বা মুরুব্বী মানি,কিন্তুু পীর মানিনা- সেও তেমন গাধা!.........
আপনারা কি একমত??????
সংগ্রহীত
Copy
Saturday, February 1, 2020
মিজান অনুসারিদের কাছে প্রশ্ন।
👉যখন আল্লাহর শানে কুরুচিপূর্ণ কথা বলল তখন আপনার গায়ে লাগেনি !!?
👉যখন রাসুল (সাঃ) এর শানে কুরুচিপূর্ণ কথা বলল আপনার গায়ে লাগেনি !!?
👉যখন হযরত উমর (রাঃ) এর শানে কুরুচিপূর্ণ কথা বলল তখন আপনার গায়ে লগেনি !!?
👉যখন মা খাদিজা (রাঃ) এর শানে কটুক্তি করল তখন আপনার গায়ে লাগেনি !!?
👉যখন হযরত আলি (রাঃ) এর শানে কুরুচিপূর্ণ কথা বলল তখন আপনার গায়ে লাগেনি !!?
👉পর্দা বিরোধী অবস্থান আপনার ঈমানে আঘাত করেনি !!?
👉কিন্তু......
যখন ইহুদি খৃষ্টান মেয়েকে বিবাহ করা যাবে বলল তখন আপনি দারুণ খুশি!
👉তারাবি নামাজকে কমিয়ে ৪ রাকা'ত করা আপনার মনের মতো হয়েছে !
👉ক্বাজা নামাজ মাফ হয়ে যাওয়াতে আপনি খুশিতে আত্মাহারা !!
👉হালাল বিনোদনের নামে নাটক দেখার সুযোগ লুফে নিয়েছেন !!
👉সুন্নাত নামাজ না পড়লেই চলবে দারুণ মজা !
👉সুন্নতি পোশাক ছেড়ে শার্ট-প্যন্ট পড়ে কাবার ইমাম হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পেয়েছেন !
👉কমেডি বক্তার মুসা (আঃ) কে নিয়ে কটুক্তি করা আপনার ঈমানে আঘাত করেনি !
👉ভার্সিটিরমাল নাসেখ-মানসুখ অস্বীকার করা আপনার কাছে সামান্য ব্যাপার মনে হয়েছে !
👉অজু ছাড়া কোরআন শরীফ ধরা যাবে এই ফতোয়া আপনার অন্ততরে কোন প্রশ্ন সৃষ্টি করনি !
👉নিজের শরীরে ইসলাম কায়েম না করে সারাদেশে ইসলাম কায়েমের আন্দোলন আপনার শহিদী তামান্নাকে দ্বিগুন করে দেয় !
👉১৯৯০ তে সব অর্জন।
খেলা আর খতীবের দ্বায়িত্ব পালনের যৌগ্যতা আপনার চেয়ে আর কি গৌরবের কথা হতে পারে !!?
👉৩/৪ বছরের মেয়েদেরকে সন্তান লালন-পালন শেখাতে পুতুল ( মুর্তি) নিয়ে খেলা করতে দেয়া। কি সুন্দর নিয়ম তাই না?
👉এখন কি আমি কাটমোল্লা?
নাকি মাজার পুজারি?
ভন্ড পীরের মুরিদ?
নাকি জনপ্রিয়তা দেখে হিংসুক ?
👉আর.....
আপনি প্রকৃত ইমানদার ?
Sunday, January 19, 2020
মিথ্যুক কিভাবে মুফাসসির হয়!
أَلا إِنَّ أَوْلِيَاء اللّهِ لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ
নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর (ওলি) বন্ধু, তাদের না কোন ভয় ভীতি আছে, না তারা চিন্তান্বিত হবে।
لَهُمُ الْبُشْرَى فِي الْحَياةِ الدُّنْيَا وَفِي الآخِرَةِ لاَ تَبْدِيلَ لِكَلِمَاتِ اللّهِ ذَلِكَ هُوَ الْفَوْزُ الْعَظِيمُ
তাদের জন্য সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে। আল্লাহর কথার কখনো হের-ফের হয় না। এটাই হল মহা সফলতা। (সুরা ইউনুছ ৬২ এবং ৬৪)
👉 খাজা গরিব নওয়াজই উপমহাদেশের সর্বশ্রেষ্ঠ ইসলাম প্রচারক। নিখিল ভারতে ইসলামের ভিত্তিকে সুদৃঢ়ভাবে তিনিই স্থাপন করেছেন আর তারই দোয়ায় ভারতবর্ষে মুসলিম রাজত্বের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল।
◾ ব্যক্তিগত কোন আক্রোশে আমি পোস্ট করিনা। কিন্তু সাধারণ মানুষের কথা ভেবে চুপ থাকতেও পারিনা। তাই কারো নাম উল্লেখ না করেই কথাগুলো বলছি। আফসোস, আজ মুসলিম সমাজ কিছু বক্তা নামের মিথ্যুকের কাছে নিয়মিত ধোঁকা খেয়ে যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস নিয়ে তারা আজ নিজেদের প্রকাশের প্রতিযোগীতায় নেমেছে। প্রতিদিন নিত্যনতুন ইসূ নিয়ে মানুষকে বিভ্রান্তিতে নিমজ্জিত করছেন। ওয়াজের নামে আওয়াজ দিয়ে ঠিক বেঠিকের হাজিরা নিয়ে নিচ্ছেন শ্রোতাদের কাছ থেকে। আমলি শিক্ষার চেয়ে হিন্দি গানের সুরের মূর্ছনায় মঞ্চ মাতাচ্ছে। একবার ভেবে দেখুন তো সেসব বক্তা গান না শুনে কিভাবে গানের সেই সুর নকল করেন! নিয়মিত গান শুনা নিশ্চিত গায়ক থেকে ওয়াজের বক্তার কাতারে আজ তাদের অবস্থান।
একটি কথা সবার জানা থাকা উচিৎ যে, কারো সাথে মতের অমিল হলেই যে তার বিরোধিতা করতে হবে এমন নয়। কেবল "লা-নাতুল্লাহি আলাল কাজেবীন" মিথ্যাবাদির প্রতি আল্লাহর লানত যে বিদ্যমান তাই আজ বলতে বাধ্য হয়েছি।
এতোদিন believe it or not (বিশ্বাস করুন আর নাই করুন) কথাটি দিয়ে নিশ্চয় পত্রিকার পাতায় কিছু অবিশ্বাস্য কথা উল্লেখ করা দেখেছেন। কিন্তু বর্তমানে সেটি পত্রিকার পাতায় নয় বরং মাহফিলেও নিয়মিত লক্ষণীয়! এই যেমন,
১) আমেরিকার নাসার কর্তৃপক্ষ তাকে তিনবার আমন্ত্রণ জানিয়েছে এবং সেখানকার গবেষকরা বলেছে সূর্য পশ্চিম দিকেও উদিত হতে পারে। আরে নাসা কেন বলতে যাবে এটি তো কিয়ামতের আলামত এর অংশ।
২) সাঈদী সাহেবের চাঁদে দেখার গুজবটির সত্যতা প্রমানসাপেক্ষেও সে এক নতুন নাটকের অবতারণা করেছিলো ততকালীন সময়ে। আর তা হচ্ছে ঠিক এমন যে, আরবের এক ঈমাম নাকি তাকে বলতে এসেছিল উনি সাঈদী সাহেবকে চাঁদে দেখেছেন।
৩) তিন তিনবার বিশ্ববিখ্যাত অক্সফোর্ডের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছিল নাকি সে। আর সেই মিথ্যাকে সত্য প্রচারের চতুরতায় সে মাহফিলে বলে আমার এ শ্রেষ্ঠ শিক্ষকতার কথা আমার পরিবারের সদস্যরাও জানেনা। আশ্চর্য! এ কেমন পরিবার যারা এতোবড় সফলতার খবর জানেনা!
৪) ব্যাডমিন্টনে সে যে দেশ সেরা খেলোয়াড় তা আপাতত বিশ্বাস করলেও ৯০ এর দশকের প্রথম দিকে সে যে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগেও ফুটবল খেলে প্রচুর টাকা ইনকাম করেছিলেন তা কেমনে?
৫) আইফোন কার তৈরী সেটি ছোট্ট একটি বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করলেও হয়তো উত্তর মিলবে। অথচ সে বলে মাইক্রোসফটের বিশ্বের সবচেয়ে ধনী বিল গেটস নাকি আইফোন তৈরী করেছে। শুধু তাই নয় তার সাথে দেখাও হয়েছে নাকি তার। এবং বিল গেটস নাকি দেখতে টিকটিকির মতো! মানুষের রূপ কি সত্যি টিকটিকির মতো! এও কি সম্ভব?
৬) ইমাম মেহেদি নাকি ইয়ামেনের কারাগারে বন্ধি ছিলো এতোদিন! পরে সেখান থেকে পালিয়েছে। অর্থাৎ ইমাম মেহেদিরও তার ভাষ্যমতে জন্ম হয়েছে। এবং এ পৃথিবীতে অবস্থান করছেন।
৭) আফগানিস্তানে মার্কিন সৈন্যরা বোমার আঘাতে কোন মানুষের ক্ষতি করতে পারেনি কারণ সমস্ত বোম নাকি সাদা পাগড়ীওয়ালা ফেরেস্তারা নিয়ে নদীতে ফেলে দিয়েছে। একটি বোমাও নাকি সেখানে আঘাত হানেনি। এমন দৃশ্য নাকি মার্কিন সৈন্যরা বিমান থেকে বোমা ফেলার সময় দেখতে পেতো! অথচ খবরের কাগজ আফগানি মুসলমানদের রক্তে রক্তাক্ত দেখছিলাম। মার্কিনীরা তো আফগানিস্তানকে নাস্তানাবুদ করে দিয়েছে।
৮) হেফাজতের আমীর মুফতি শফি নাকি স্বপ্নে দেখেছিলেন ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামাত নেতা কাদের মোল্লা জান্নাতে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে মোসাবাহা করছেন! এই আজগুবি বানোয়াট কাহিনীটিরও মঞ্চায়ন করেছেন ঠিক একই ব্যক্তি।
৯) সিরিয়া থেকে নাকি 'ডোনাল্ড ট্রাম্প'কে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বানিয়েছে আল্লাহ! তাও নাকি কুরআনের আয়াত দিয়ে প্রমাণিত!
১০) নাসার গবেষকরা তাকে জানিয়েছে আগামী ৭৫ বছরের মধ্যে এ পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে। কেন কুরআনে কি কিয়ামত এর কোন আলামত নেই?
👉 এভাবে আরো কতো কি⁉ শুধু ১০টি উপস্থাপন করেছি। তবুও যে আমরা আজ জন্মান্ধে পরিণত হয়েছি। বিবেক বুদ্ধি যেন তাদের মিথ্যের কাছে বন্ধক রেখেছি। ভালোমন্ধ বুঝার ক্ষমতা হারিয়ে তাদেরকে মুফাসসির বলে আখ্যায়িত করছি । জানেন কেন? শুধু রাজনৈতিক পরিচয়ের খাতিরে।