চৌখে পানি আশার কাহিনী পড়ে
দেখুন
একবার বিশিষ্ট সাহাবী হযরত
জাবের [রা:] হযরত রাসূল[সা:]-এর
কাছে আরজ করলেন,ইয়া রাসূলুল্লাহ্ !
দয়া করে এই গোলামের বাড়িতে
দাওয়াত কবুল করে নিন । নবীজী
তাঁর দাওয়াত কবুল করে নিলেন।
জাবের [রা:] খুশীতে আত্মহারা
হয়ে বাড়িতে চলে গেলেন ।
বাড়িতে গিয়ে স্রী
ও পুত্রদের খোশ…খবর দিলেন- আজ
আমাদের ভাগ্য খুলে,গেছে
আল্লাহর নবী দয়া করে আমাদের
বাড়িতে তশরীফ নিবেন । এর চেয়ে
আনন্দের ব্যাপার আমাদের জীবনে
আর কি হতে পারে! তিনি
তাঁদেরকে নিয়ে মহানন্দে
নবীজীকে আপ্যায়ন করার
আয়োজনে লেগে গেলন । বাড়ি-ঘর
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সুন্দরভাবে
সাজালেন । সুগন্ধী দ্রব্য ছিটিয়ে
ঘরকে সুবাসিত করলেন-ঘরে পালিত
খাসীজবাই করলেন। বড় ছেলে
আবদুল্লাহকে নিয়ে খাসী জবাই
করে নিজ হাতে তার চামড়া
ছাড়িয়ে সুন্দর করে মাংস টুকরো
টুকরো করে নিলেন । অত:পর স্রীর
কাছে মাংস নিয়ে বললেন,যত্ন
করে মাংসের টুকরোগুলো ভুনা করে
নাও । স্রীকে এ কথা বলে হযরত
জাবের[রা:] বাড়ী-ঘর তদারক করতে
থাকলেন,কোথাও কোন কাজ বাকী
রয়েগেল কি-না । মাঝে মাঝে
রান্না ঘরে গিয়ে দেখেন-রান্না
আর কতদূর হয়েছে; আবার বাড়ীর
সামনের রাস্তায় গিয়ে দেখেন-
নবীজী আসছেন কি-না । ইতিমধ্যে
হযরত জাবের [রা:]-এর ছোট ছেলে ঘুম
থেকে উঠে খাসী তালাশ করতে
লাগলো । তারা দুই ভাই মিলে
খাসীটিকে আদর-যত্ন করে লালন -
পালন করতো ।বড় ভাই তাকে
জানাল -নবীজীর মেহমানদারী
করার জন্য খাসীটিকে জবাই করা
হয়েছে । ছোট ভাই বায়না ধরলো-
খাসী কিবাবে জবাই করে
আমাকে তা দেখাও । অগত্যা বড়
ভাই ছুরি হাতে করে ঘরের পেছনে
গিয়ে বললো, এখানে খাসী জবাই
করা হয়েছে । ছোট ভাই জানতে
চাইলো,কিভাবে ? বর্ণনা করে
বোঝতে না পেরে অবশেষে বড়
ভাই বললো, তাহলে তুমি মাটিতে
শুয়ে পড় । আমি তোমাকে দেখাই ।
ছোট ভাই মাটিতে শোয়ার পর বড়
ভাই তার গলায় ছুরি চালিয়ে জবাই
করার নমুনা দেখাতে গিয়ে ছোট
ভাইকে সত্যি সত্যি জবাই করে
ফেললো । বড় ভাই যখন দেখলো-ছোট
ভাইয়ের গলা থেকে রক্ত গড়িয়ে
পড়ছে, সে ছটফট করতে করতে এক সময়
নিস্তেজ হয়ে গেছে, তখন বুঝলো
ব্যাপারটি কি ঘটেছে । আতঙ্কিত
হয়ে সে নিকটবর্তী এক খেজুর
গাছের চূড়ায় উঠে আত্মগোপন করে
রইলো। এদিকে হযরত জাবের[রা:]
পুত্রদের খোজে বাড়ীর পেছনে
এসে ছোট ছেলের অবস্হা দেখে
থমকে গেলেন । অত:পর তাকে বুকে
করে স্রীর কাছে গিয়ে
বললেন,তাড়াতড়ি একটি কম্বল
নিয়ে এসো, বাচ্চাটিকে শুইয়ে
দিই । স্রী রক্তমাখা সন্তানের লাশ
দেখে চিৎকার করে কাঁদতে
লাগলেন। কিন্ত স্বামী তাকে
সান্ত্বনা দিয়ে বললো আজ
আমাদের শোক প্রকাশ করার দিন না
আমাদের দুঃখ দেখলে নবীজীও
দুঃখিত হবেন । অতএব,ধৈর্য ধারণ
করো । মুখে হাসি ফুটিয়ে তোল ।
তারপর তাঁরা দু’জনে মিলে ছোট
ছেলেকে কম্বল মুড়ে রান্নঘরের
পেছনে রেখে আসলেন ।স্রী
রান্নার কাজে মন দিলেন । জাবের
[রাঃ] বের হলেন বড় পুত্র আবদুল্লাহর
খোজে । বাড়ীর পেছনে গিয়ে
ছেলের নাম ধরে জোরে হাঁক
দিলেন । গাছের উপর আত্মগোপন
করে বড় ছেলে সব. ঘটনা প্রত্যক্ষ
করছিল,R ভয়ে কাঁপছিল । পিতার
ডাক শুনে ভাবলো, এখন পালাতে
না পারলে আব্বার হাতে ধরা
পড়তে হবে । ধরা পড়লে R রক্ষা
থাকবেনা । পালানোর উদ্দেশ্যে
গাছ থেকে লাফিয়ে পড়ে
আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে সেও মৃত্যুর কোলে
ঢলে পড়লো । পিতা কাছে গিয়ে
গায়ে হাত দিয়ে দেখেন-
আবদুল্লাহর দেহে প্রাণের স্পন্দন
নেই ! বড় ছেলে কে কোলে তুলে
তিনি বাড়ীর ভিতরে আসলেন ।
স্রীকে বললেন, R একটি কম্বল নিয়ে
আসার জন্যে । বড় ছেলের অবস্হা ।
দেখে মাতা পুনরায় আর্তনাদ করে
উঠলেন । স্বামী তাকে পুনরায়
সান্ত্বনা দিয়ে বললেন,ধৈর্য্য ধরো
। আজ আমাদের দুঃখ প্রকাশের দিন
না । আজ আমাদের পরম আনন্দের দিন ।
তারপর দু’জনে মিলে বড় ছেলের
লাশও কম্বলে মুড়ে ছোট ছেলের
লাশের পাশে রাখলেন ।স্বামী-
স্রী তদের চোখের পানি মুছে মুখে
হাসি ফুটিয়ে তুলেন । যাঁর ”নূরে”
সমগ্র মাখলুকাত পয়দা,সেই
রাহমাতাল্লিল আলামীনের
সামনে অশ্র্র বিসর্জন দিলে তিনি
দুঃখ পাবেন । তাই আনন্দিত হয়ে
তাঁরা নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত
হয়ে পড়লেন । হযরত জাবের [রাঃ]
বাড়ীর সামনে দাড়িয়ে নবীজীর
আগমনের অপেক্ষা করতে লাগলেন ।
অল্পক্ষণের মধ্যে নবীজীকে উটের
পিঠে করে আসতে দেখা গেলো ।
হযরত জাবের [রাঃ] আনন্দে
আত্মহারা হয়ে দৌড়ে গিয়ে
স্রীকে নবীজীর আগমনের সংবাদ
দিলেন । পুনরায় তিনি দৌড়ে
বাড়ীর সামনে চলে এলেন ।
নবীজীর উটের কাছে গিয়ে
তাঁকে বাড়ী পর্যন্ত এগিয়ে
আনলেন নবীজী জাবের [রাঃ]-এর
ঘরের সামনে উট থামিয়ে তাঁর ডান
পা মোবারক মাটিতে
রাখলেন,বাম পা মোবারক এখনো
নামাতে বাকী । এমন সময় জিব্রাইল
[আঃ] আল্লাহর পক্ষ হতে নির্দেশ
নিয়ে উপস্হিত হয়ে বললেন ইয়া
রাসূলুল্লাহ! আল্লাহ্ আপনাকে
জাবেরের ছেলেদেরকে সংগে
নিয়ে খানা খেহে বলেছেন ।
অতঃপর নবীজী
সাহাবায়েকেরামকে নিয়ে
জাবের [রাঃ]-এর ঘরে তশরীফ
নিলেন ।তাদের সামনে জাবের
রা] দস্তর খানা বিছিয়ে দিলেন
তার স্রী খাবার বেরে দিলেন R
তিনি সেগুলো এনে মেহমানদের
সামনে হাজির করলেন তারপর
তিনি নবীজীকে আরজ করলেন, ইয়া
রাসূলুল্লাহ্! বিস্মল্লাহ্ করুন নবীজী
বললেন, হে জাবের ! তোমার
ছেলেরা কোথায় ? তাদেরকে
ডাক হযরত জাবের [রাঃ] বললেন,
ইয়া হাবীবাল্লাহ! আপনি দয়া করে
খেয়ে নিন ছেলেদেরকে আমি
পরে ডাকবো হযরত রাসূল [সাঃ]
পুনরায় বললেন তোমার ছেলেদের
ডেকে নিয়ে এসো তাদেরকে
সাথে নিয়ে খানা খাবো হযরত
জাবের ও তার স্রী হাত জোড় করে
পুনরায় আরজ করলেন ,ইয়া
রাসূললুল্লাহ ! আপনি খানা খেয়ে
নিন আমরা তাদেরকে ডেকে
দিচ্ছি তখন নবীজী বললেন, হে
জাবের ! এইমাত্র জিব্ররাইল
ফেরেশতা আমাকে আল্লাহর
নির্দেশ জানিয়ে গেলেন ,আমি
যেন তোমার ছেলেদেরকে সাথে
নিয়ে খানা খাই নবীজীর একথা
শুনে হযরত জাবের [রা] ও তার স্রী R
ধৈর্য্য ধারণ করতে পারলেনা ।
তারা হাউমাউ করে কেদে বললেন
ইয়া রাসূলূল্লাহ্! ছেলেদেরকে
কোথায় পাবো ? তারা তো জগতে
বেঁচে নেই নবীজী জানতে
চাইলেন ,তাদের কি হয়েছে ?তখন
তারা নবীজীকে সমস্ত ঘটনা খুলে
বললেন তাদের দুঃখের কাহিনি
শুনে সাহাবায়েকেরামও কাঁদতে
শুরু করলেন ।নবীজীর প্রেমিক হযরত
জাবের[রা] ও তার স্রীর ঘটনা শুনে
অনেকে চিল্লাচিল্লি করে
মাটিতে গড়াগড়ি খেতে থাকেন
তারপর নবীজী উঠে দাঁড়িয়ে হযরত
জাবের [রা:]-কে বললেন
,তাদেরকে কোথায় রেখেছো,
সেখানে আমাকে নিয়ে চলো।
*hozrut*জাবের [রা:] নবীজীকে
রান্না ঘরের পেছনে নিয়ে গেলন।
আল্লাহ্র নবী *hozrut* রাসূল [স:]
কম্বলাবৃত দুই ছেলের মৃতদেহের উপর
তাঁর দুই হাত মোবারক রেখে বললেন,
হে জাবেরের ছেলেরা! তোমরা
কি দেখ না, তোমাদের আব্ব-আম্মা
আল্লাহ্র নবীকে কত ভালোবাসেন!
আমি মনে কষ্ট পাবো বলে
তোমাদের কথা তারা আমাকে
জানায়নি । তোমরা শীঘ্রই ওঠ,
তোমাদেরকে সঙে করে আমি
খানা খাবো । এ কথা বলে নবীজী
যখন তাদের. দেহ থেকে কম্বল
সরিয়দিলেন , সংগে সংগে তারা
দু’জনউঠে নবীজীর কদম মোবারক
জড়িয়ে ধরলো । তখন নবীজীর
প্রেমে কেউ সুস্হির ছিলেন না ।
সবাই কাঁদতে কাঁদতে বেহুঁশের
মতো হয়ে গেলন। পরিস্হিতি শান্ত
হলে নবীজী হযরত জাবের [রা:]-এর
দুই ছেলেকে নিয় খানা খেতে
বসলেন ।
সবাইকে বললেন , মাংস খাবার পর
হাড় চিবিয় না খেয়ে তা জমা
করে রাখার জন্যে।
এভাবে সবার খাওয়া শেষ হলে
নবীজী তাঁর পবিত্র হাত মোবারক
*হাড়ের* ওপর রেখে বললেন, ওহে
জাবেরের খাসী! তুমি কি দেখো
না তোমার মনিব আল্লাহ্র নবীকে
কতখানি ভালোবাসেন? তুমি
পুনরায় তোমার মনিবের হয়ে যাও।
নবীজী *a* কথা বলার সাথে সাথে
খাসী জীন্দা হয়ে সামনে
দাঁড়িয়ে গেলো ।
দেখুন
একবার বিশিষ্ট সাহাবী হযরত
জাবের [রা:] হযরত রাসূল[সা:]-এর
কাছে আরজ করলেন,ইয়া রাসূলুল্লাহ্ !
দয়া করে এই গোলামের বাড়িতে
দাওয়াত কবুল করে নিন । নবীজী
তাঁর দাওয়াত কবুল করে নিলেন।
জাবের [রা:] খুশীতে আত্মহারা
হয়ে বাড়িতে চলে গেলেন ।
বাড়িতে গিয়ে স্রী
ও পুত্রদের খোশ…খবর দিলেন- আজ
আমাদের ভাগ্য খুলে,গেছে
আল্লাহর নবী দয়া করে আমাদের
বাড়িতে তশরীফ নিবেন । এর চেয়ে
আনন্দের ব্যাপার আমাদের জীবনে
আর কি হতে পারে! তিনি
তাঁদেরকে নিয়ে মহানন্দে
নবীজীকে আপ্যায়ন করার
আয়োজনে লেগে গেলন । বাড়ি-ঘর
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সুন্দরভাবে
সাজালেন । সুগন্ধী দ্রব্য ছিটিয়ে
ঘরকে সুবাসিত করলেন-ঘরে পালিত
খাসীজবাই করলেন। বড় ছেলে
আবদুল্লাহকে নিয়ে খাসী জবাই
করে নিজ হাতে তার চামড়া
ছাড়িয়ে সুন্দর করে মাংস টুকরো
টুকরো করে নিলেন । অত:পর স্রীর
কাছে মাংস নিয়ে বললেন,যত্ন
করে মাংসের টুকরোগুলো ভুনা করে
নাও । স্রীকে এ কথা বলে হযরত
জাবের[রা:] বাড়ী-ঘর তদারক করতে
থাকলেন,কোথাও কোন কাজ বাকী
রয়েগেল কি-না । মাঝে মাঝে
রান্না ঘরে গিয়ে দেখেন-রান্না
আর কতদূর হয়েছে; আবার বাড়ীর
সামনের রাস্তায় গিয়ে দেখেন-
নবীজী আসছেন কি-না । ইতিমধ্যে
হযরত জাবের [রা:]-এর ছোট ছেলে ঘুম
থেকে উঠে খাসী তালাশ করতে
লাগলো । তারা দুই ভাই মিলে
খাসীটিকে আদর-যত্ন করে লালন -
পালন করতো ।বড় ভাই তাকে
জানাল -নবীজীর মেহমানদারী
করার জন্য খাসীটিকে জবাই করা
হয়েছে । ছোট ভাই বায়না ধরলো-
খাসী কিবাবে জবাই করে
আমাকে তা দেখাও । অগত্যা বড়
ভাই ছুরি হাতে করে ঘরের পেছনে
গিয়ে বললো, এখানে খাসী জবাই
করা হয়েছে । ছোট ভাই জানতে
চাইলো,কিভাবে ? বর্ণনা করে
বোঝতে না পেরে অবশেষে বড়
ভাই বললো, তাহলে তুমি মাটিতে
শুয়ে পড় । আমি তোমাকে দেখাই ।
ছোট ভাই মাটিতে শোয়ার পর বড়
ভাই তার গলায় ছুরি চালিয়ে জবাই
করার নমুনা দেখাতে গিয়ে ছোট
ভাইকে সত্যি সত্যি জবাই করে
ফেললো । বড় ভাই যখন দেখলো-ছোট
ভাইয়ের গলা থেকে রক্ত গড়িয়ে
পড়ছে, সে ছটফট করতে করতে এক সময়
নিস্তেজ হয়ে গেছে, তখন বুঝলো
ব্যাপারটি কি ঘটেছে । আতঙ্কিত
হয়ে সে নিকটবর্তী এক খেজুর
গাছের চূড়ায় উঠে আত্মগোপন করে
রইলো। এদিকে হযরত জাবের[রা:]
পুত্রদের খোজে বাড়ীর পেছনে
এসে ছোট ছেলের অবস্হা দেখে
থমকে গেলেন । অত:পর তাকে বুকে
করে স্রীর কাছে গিয়ে
বললেন,তাড়াতড়ি একটি কম্বল
নিয়ে এসো, বাচ্চাটিকে শুইয়ে
দিই । স্রী রক্তমাখা সন্তানের লাশ
দেখে চিৎকার করে কাঁদতে
লাগলেন। কিন্ত স্বামী তাকে
সান্ত্বনা দিয়ে বললো আজ
আমাদের শোক প্রকাশ করার দিন না
আমাদের দুঃখ দেখলে নবীজীও
দুঃখিত হবেন । অতএব,ধৈর্য ধারণ
করো । মুখে হাসি ফুটিয়ে তোল ।
তারপর তাঁরা দু’জনে মিলে ছোট
ছেলেকে কম্বল মুড়ে রান্নঘরের
পেছনে রেখে আসলেন ।স্রী
রান্নার কাজে মন দিলেন । জাবের
[রাঃ] বের হলেন বড় পুত্র আবদুল্লাহর
খোজে । বাড়ীর পেছনে গিয়ে
ছেলের নাম ধরে জোরে হাঁক
দিলেন । গাছের উপর আত্মগোপন
করে বড় ছেলে সব. ঘটনা প্রত্যক্ষ
করছিল,R ভয়ে কাঁপছিল । পিতার
ডাক শুনে ভাবলো, এখন পালাতে
না পারলে আব্বার হাতে ধরা
পড়তে হবে । ধরা পড়লে R রক্ষা
থাকবেনা । পালানোর উদ্দেশ্যে
গাছ থেকে লাফিয়ে পড়ে
আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে সেও মৃত্যুর কোলে
ঢলে পড়লো । পিতা কাছে গিয়ে
গায়ে হাত দিয়ে দেখেন-
আবদুল্লাহর দেহে প্রাণের স্পন্দন
নেই ! বড় ছেলে কে কোলে তুলে
তিনি বাড়ীর ভিতরে আসলেন ।
স্রীকে বললেন, R একটি কম্বল নিয়ে
আসার জন্যে । বড় ছেলের অবস্হা ।
দেখে মাতা পুনরায় আর্তনাদ করে
উঠলেন । স্বামী তাকে পুনরায়
সান্ত্বনা দিয়ে বললেন,ধৈর্য্য ধরো
। আজ আমাদের দুঃখ প্রকাশের দিন
না । আজ আমাদের পরম আনন্দের দিন ।
তারপর দু’জনে মিলে বড় ছেলের
লাশও কম্বলে মুড়ে ছোট ছেলের
লাশের পাশে রাখলেন ।স্বামী-
স্রী তদের চোখের পানি মুছে মুখে
হাসি ফুটিয়ে তুলেন । যাঁর ”নূরে”
সমগ্র মাখলুকাত পয়দা,সেই
রাহমাতাল্লিল আলামীনের
সামনে অশ্র্র বিসর্জন দিলে তিনি
দুঃখ পাবেন । তাই আনন্দিত হয়ে
তাঁরা নিজেদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত
হয়ে পড়লেন । হযরত জাবের [রাঃ]
বাড়ীর সামনে দাড়িয়ে নবীজীর
আগমনের অপেক্ষা করতে লাগলেন ।
অল্পক্ষণের মধ্যে নবীজীকে উটের
পিঠে করে আসতে দেখা গেলো ।
হযরত জাবের [রাঃ] আনন্দে
আত্মহারা হয়ে দৌড়ে গিয়ে
স্রীকে নবীজীর আগমনের সংবাদ
দিলেন । পুনরায় তিনি দৌড়ে
বাড়ীর সামনে চলে এলেন ।
নবীজীর উটের কাছে গিয়ে
তাঁকে বাড়ী পর্যন্ত এগিয়ে
আনলেন নবীজী জাবের [রাঃ]-এর
ঘরের সামনে উট থামিয়ে তাঁর ডান
পা মোবারক মাটিতে
রাখলেন,বাম পা মোবারক এখনো
নামাতে বাকী । এমন সময় জিব্রাইল
[আঃ] আল্লাহর পক্ষ হতে নির্দেশ
নিয়ে উপস্হিত হয়ে বললেন ইয়া
রাসূলুল্লাহ! আল্লাহ্ আপনাকে
জাবেরের ছেলেদেরকে সংগে
নিয়ে খানা খেহে বলেছেন ।
অতঃপর নবীজী
সাহাবায়েকেরামকে নিয়ে
জাবের [রাঃ]-এর ঘরে তশরীফ
নিলেন ।তাদের সামনে জাবের
রা] দস্তর খানা বিছিয়ে দিলেন
তার স্রী খাবার বেরে দিলেন R
তিনি সেগুলো এনে মেহমানদের
সামনে হাজির করলেন তারপর
তিনি নবীজীকে আরজ করলেন, ইয়া
রাসূলুল্লাহ্! বিস্মল্লাহ্ করুন নবীজী
বললেন, হে জাবের ! তোমার
ছেলেরা কোথায় ? তাদেরকে
ডাক হযরত জাবের [রাঃ] বললেন,
ইয়া হাবীবাল্লাহ! আপনি দয়া করে
খেয়ে নিন ছেলেদেরকে আমি
পরে ডাকবো হযরত রাসূল [সাঃ]
পুনরায় বললেন তোমার ছেলেদের
ডেকে নিয়ে এসো তাদেরকে
সাথে নিয়ে খানা খাবো হযরত
জাবের ও তার স্রী হাত জোড় করে
পুনরায় আরজ করলেন ,ইয়া
রাসূললুল্লাহ ! আপনি খানা খেয়ে
নিন আমরা তাদেরকে ডেকে
দিচ্ছি তখন নবীজী বললেন, হে
জাবের ! এইমাত্র জিব্ররাইল
ফেরেশতা আমাকে আল্লাহর
নির্দেশ জানিয়ে গেলেন ,আমি
যেন তোমার ছেলেদেরকে সাথে
নিয়ে খানা খাই নবীজীর একথা
শুনে হযরত জাবের [রা] ও তার স্রী R
ধৈর্য্য ধারণ করতে পারলেনা ।
তারা হাউমাউ করে কেদে বললেন
ইয়া রাসূলূল্লাহ্! ছেলেদেরকে
কোথায় পাবো ? তারা তো জগতে
বেঁচে নেই নবীজী জানতে
চাইলেন ,তাদের কি হয়েছে ?তখন
তারা নবীজীকে সমস্ত ঘটনা খুলে
বললেন তাদের দুঃখের কাহিনি
শুনে সাহাবায়েকেরামও কাঁদতে
শুরু করলেন ।নবীজীর প্রেমিক হযরত
জাবের[রা] ও তার স্রীর ঘটনা শুনে
অনেকে চিল্লাচিল্লি করে
মাটিতে গড়াগড়ি খেতে থাকেন
তারপর নবীজী উঠে দাঁড়িয়ে হযরত
জাবের [রা:]-কে বললেন
,তাদেরকে কোথায় রেখেছো,
সেখানে আমাকে নিয়ে চলো।
*hozrut*জাবের [রা:] নবীজীকে
রান্না ঘরের পেছনে নিয়ে গেলন।
আল্লাহ্র নবী *hozrut* রাসূল [স:]
কম্বলাবৃত দুই ছেলের মৃতদেহের উপর
তাঁর দুই হাত মোবারক রেখে বললেন,
হে জাবেরের ছেলেরা! তোমরা
কি দেখ না, তোমাদের আব্ব-আম্মা
আল্লাহ্র নবীকে কত ভালোবাসেন!
আমি মনে কষ্ট পাবো বলে
তোমাদের কথা তারা আমাকে
জানায়নি । তোমরা শীঘ্রই ওঠ,
তোমাদেরকে সঙে করে আমি
খানা খাবো । এ কথা বলে নবীজী
যখন তাদের. দেহ থেকে কম্বল
সরিয়দিলেন , সংগে সংগে তারা
দু’জনউঠে নবীজীর কদম মোবারক
জড়িয়ে ধরলো । তখন নবীজীর
প্রেমে কেউ সুস্হির ছিলেন না ।
সবাই কাঁদতে কাঁদতে বেহুঁশের
মতো হয়ে গেলন। পরিস্হিতি শান্ত
হলে নবীজী হযরত জাবের [রা:]-এর
দুই ছেলেকে নিয় খানা খেতে
বসলেন ।
সবাইকে বললেন , মাংস খাবার পর
হাড় চিবিয় না খেয়ে তা জমা
করে রাখার জন্যে।
এভাবে সবার খাওয়া শেষ হলে
নবীজী তাঁর পবিত্র হাত মোবারক
*হাড়ের* ওপর রেখে বললেন, ওহে
জাবেরের খাসী! তুমি কি দেখো
না তোমার মনিব আল্লাহ্র নবীকে
কতখানি ভালোবাসেন? তুমি
পুনরায় তোমার মনিবের হয়ে যাও।
নবীজী *a* কথা বলার সাথে সাথে
খাসী জীন্দা হয়ে সামনে
দাঁড়িয়ে গেলো ।