Tuesday, March 31, 2015

পীর সাহেব জৌনপুরীর সামনে ফরিদপুরের মধুখালীতে মিলাদ কিয়াম বিরোধীরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা

পীর সাহেব জৌনপুরীর সামনে ফরিদপুরের মধুখালীতে মিলাদ কিয়াম বিরোধীরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা

স্টাফ রিপোর্টার : পূর্বচুক্তি অনুযায়ী মিলাদ কিয়ামের পক্ষে-বিপক্ষের বাহাছে মিলাদ কিয়ামের বিরোধী আলেমগণ উপস্থিত না হওয়ায় জৌনপুরী পীর সাহেব মুফতী এনায়েত উল্লাহ আব্বাসীর উপস্থিতিতে ফরিদপুরের মধুখালীর জনগণ মিলাদ কিয়াম বিরোধী আলেমদের এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন।
মিলাদ কিয়াম বিষয়ে পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তি দিয়ে নিজেদের পক্ষের মতামত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে উভয়পক্ষের মধ্যে সম্প্রতি একটি দালিলিক চুক্তি সম্পাদিত হয়। সে অনুযায়ী গত ২ আগস্ট ফরিদপুরের মধুখালী ঈদগাঁহ মাঠে বাহাছ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।
মিলাদ কিয়ামের পক্ষে ছিলেন, জৌনপুরী পীর সাহেব ড. মুফতী সৈয়দ এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী, অন্যান্য সাহেবজাদাগণসহ বিশিষ্ট উলামায়ে কেরাম। মিলাদ কিয়ামের বিপক্ষে ছিলেন মাও: নূরুল ইসলাম ওলীপুরী মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ ও ড. আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীরসহ তাদের পক্ষের আলেমগণ।
নির্ধারিত দিনের নির্দিষ্ট সময়ে জৌনপুরী পীর সাহেব ড. সৈয়দ এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী ও তার সাথের উলামায়ে-কেরাম ফরিদপুরের মধুখালী ঈদগাঁহ মাঠে উপস্থিত হন। সময় অতিক্রান্ত হলে মিলাদের বিপক্ষের কাউকে ঈদগাঁহ ময়দানসহ সংলগ্ন এলাকার কোথাও খোঁজে পাওয়া যায়নি। জানা গেছে, মিলাদের পক্ষের পীর মাশায়েখ এবং উলামায়ে কেরামগণের উপস্থিতির খবর পেয়ে, মাও: ওলীপুরী গংরা নিজেদের আত্মগোপন করেন। এ পরিস্থিতিতে ড. সৈয়দ এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী ও তাঁর সঙ্গী সাথীগণ মধুখালী থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তাদের বাহাছের কথা উল্লেখ করেন এবং বিরোধীপক্ষের কাউকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান। তখন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মওদুদ সাহেব তাদেরকে জানান যে বিপক্ষদল বাহাছে আসবে না বলে জানিয়ে গেছেন যার ভিডিও রেকর্ড থানায় রক্ষিত আছে।
এ পরিস্থিতিতে উপস্থিত জনতার অনুরোধে পীর সাহেব জৌনপুরী, মাওলানা তাজুল ইসলাম চাঁদপুরী, মাও: আলমগীর আনসারী মিলাদ কিয়ামের পক্ষের যুক্তিসমূহ উপস্থিত জনতার সামনে তুলে ধরেন। এ পর্যায়ে এলাকাবাসী মিলাদ কিয়াম বিরোধী মাও: নূরুল ইসলাম ওলীপুরী, ড. আবদুল্লাহ জাহাঙ্গীরসহ অন্যান্যদের এলাকায় ভবিষ্যতের জন্য অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। এ সময় আলোচনা স্থলে জৌনপুরী পীর সাহেবের সাথে ছিলেন তাঁর সহযোগী পীরজাদা এহসানুল্লাহ আব্বাসী আলমগীর হোসাইন আনসারীসহ অন্যান্যরা.

Thursday, March 26, 2015

Sajra Sharif


Bismillahir Rahmanir Rahim
Allahumma Salli Ala Syedena Moulana Mohammadin Oalihi Oashabihi Wale ershadihi Hazrat Gausul Azam Kutobul Afkom Mohiuddin Syed Abdul Kader Jilani (k) wa Hazrat Gauslul Azam Kutobul Afkom Moulana Shah Sufi Syed Ahmadullah Maizbhandary Oal korom (k) oa kalifae Azam Bil berasote Gausul Azam Kutobul Alam Hazrat Moulana Shah sufi shek Osior Rahman Al Faruque Charandwipi kaddasa sirrohul Aziz Oalihi Oashabihi wa Jamie Molaeke Tarikatihi obarik wa sallim.
Elahi Bahurmate Rahmatullil Alamin Rahatul Ashekin, Muradul Mustakim, Shafiul Mujnibin, khatemun Nabieen syedul ambi wal aulia Hazrat Mohammad Mustafa Ahmed Mujtaba Sallahlahu Alaihe wasallama wala alehi wa Ashebihi wa Ahle baitihi wa sallama sallama tasliman kasiran.
Elahi Bahurmate Asadillahil Ghaleb Amirul Momenin Ali Ibne Abi Taleb (k).

Elahi Bahurmate syedus shuhada Hazrat Imam Hossain (R)

Elahi Bahurmate Syedus salekin Hazrat Syed Zainal Abedin (R)

Elahi Bahurmate Syedul waselin Hazrat Imam Mohammad Bakar (R)

Elahi Bahurmate Syedul Kamelin Hazrat Imam Jafar Sadek (R)

Elahi Bahurmate Syedul Alam Hazrat Imam Musa Kazem (R)

Elahi Bahurmate Syedus Saqlain Hazrat Imam Ali Ibne Musa (R)

Elahi Bahurmate Syedul waselin Hazrat shek Maruf Karkhi (R)

Elahi Bahurmate Sultanul Mahbubin Hazrat Sirre sakti (R)

Elahi Bahurmate Syedul Asfia Hazrat Junaid Bagdadi (R)

Elahi Bahurmate Sultanul Aulia Hazrat Abu Bakar Sibli (R)

Elahi Bahurmate Mohbubus Salekin Hazrat Shek Abdul Aziz Tamimi (R)

Elahi Bahurmate Imamul Kamelin Hazrat Abul fazl Abdul wahed Tamimi (R)

Elahi Bahurmate Syedul Aulia Hazrat Moulana Abul Farha Yusuf tartusi (R)

Elahi Bahurmate Syedus Saqlain Hazrat Moulana Abul Hassan Quaraishi (R)

Elahi Bahurmate Shekus Shoukh Hazrat Abu Saeed Makhjumi (R)

Elahi Bahurmate Kutubul Alam, Gausul azam Hazrat Syed Mohiuddin Abdul Qadir Jilani (R)

Elahi Bahurmate Sultanul Arafin Hazrat Shahabuddin Sohrawardy (K)

Elahi Bahurmate Syedul Arafin Hazrat Nazamuddin Ghaznabi (K)

Elahi Bahurmate Hazrat Sufiul Asfia Syed Mobarak Ghaznabi (K)

Elahi Bahurmate Hadiul Ashekin Hazrat Nozomuddin Ghaznabi (k)

Elahi Bahurmate Sultanul Mahbubin Hazrat Sufi Kutubuddin Roushan Zamir (K)

Elahi Bahurmate Hadi Elallah Hazrat Sufi Fazlullah (K)

Elahi Bahurmate Zobdatul Kamelin Hazrat syed Mahmud (k)

Elahi Bahurmate Sultanul Mokarrabin Hazrat Nasir Uddin (K)

Elahi Bahurmate Imamul Moshaikh Hazrat Sufi Taki uddin (k)

Elahi Bahurmate Maksudut Talebin Hazrat sufi Nezamuddin (K)

Elahi Bahurmate syedul arefin Hazrat Syed Ahalullah (k)

Elahi Bahurmate kodwatus salekin Hazrat syed sufi Jafar Hossaini (K)

Elahi Bahurmate Matlubut Talabin Hazrat Sufi Khaliluddin (k)

Elahi Bahurmate kutubul Aktab Hazrat Moulana Monaem (k)

Elahi Bahurmate Imame Haiul Qayum Hazrat Sufi Mohammad Dayem (k)

Elahi Bahurmate Motwakkal Alallah Hazrat sufi Ahmed Ullah (k)

Elahi Bahurmate Hadi Elallah Hazrat Hazi sufi Lakitullah (k)

Elahi Bahurmate Hajiul Harmain Gause Zamam Hazrat Sufi syed Mohammad saleh Lahori (k)
Elahi Bahurmate Gausul Azam, Kutubul afkham, sultanul Arefin, Ruhul Ashekin Fani Fillah, Baki Billah Hazrat Moulana shah sufi syed Ahmed ullah Al Qadiri Al Maizbhandari (K)
Elahi Bahurmate Bil Berasote Gausul Azam, kutubul afkham, sultanul Masukin, sirajus salekin, Majjobe Salek, Sheke Faal Hazrat Moulana Shah Sufi shek Osior Rahman Al Faruque charandwipi (K)
Elahi Bahurmate Oli –e– kamil, peer –e- Mokammil, Shah sufi Moulana Shek Mohammad Abul Basar faruque charandwipi (k).

হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে "নূর"

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন,
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে "নূর"
বা নুরে মুজাসসাম এ বিষয়ে কুরআন
শরীফে অনেক আয়াত শরীফ নাজিল
হয়েছে! এপ্রসঙ্গে আল্লাহ পাক
ইরশাদ মুবারক করেন---
ﻗﺪ ﺟﺎ ﻋﻜﻢ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻧﻮﺭ ﻭ ﻛﺘﺎﺏ ﻣﺒﻴﻦ
অর্থ : নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট মহান
আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এক
মহান " নূর" এবং একখানা সুস্পষ্ট
কিতাব এসেছে !"
দলীল-
√ সূরা মায়েদা ১৫
উক্ত আয়াত শরীফে " নূর" শব্দ
দ্বারা হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম
উনাকে বুঝানো হয়েছে |
উক্ত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায়
বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ
সমূহে কি আছে দেখুন --
বিখ্যাত ছাহবী রঈসুল মুফাসসিরিন
ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু বলেন -
) ﻗﺪ ﺟﺎ ﻋﻜﻢ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻧﻮﺭ ) ﻳﻌﻨﻲ ﻣﺤﻤﺪ
ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ
অর্থ : নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক
উনার পক্ষ থেকে তোমাদের নিকট "নূর"
অর্থাৎ সাইয়্যিদুনা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন !"
দলীল-
√ তাফসীরে উবনে আব্বাস
রদ্বিয়াল্লাহু আনহু ৬ খন্ড ৭২ পৃষ্ঠা
ইমামুল মুফাসসিরীন
আল্লামা ফখরুদ্দিন
রাজী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
ﺍﻥ ﺍﻟﻤﺮﺍﺩ ﺑﺎﻟﻨﻮﺭ ﻣﺤﻤﺪ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭ ﺑﺎﻟﻜﺘﺎﺏ ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ
অর্থ : নূর দ্বারা উদ্দেশ্যে হলো- হুজুর
পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং কিতাব
দ্বারা উদ্দেশ্যে হলো কুরআন শরীফ !"
দলীল-
√ তাফসীরে কবীর ১১ তম খন্ড ১৮৯
পৃষ্ঠা !
ক্বাজিউল কুজাত ইমাম আবু সাউদ
রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
( ﻗﺪﺟﺎ ﻋﻜﻢ ﻣﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﻧﻮﺭ ) .. ﺍﻟﻤﺮﺍﺩ ﺑﺎ ﻻﻭﻝ
ﻫﻮ
ﺍﻟﺮﺳﻮﻝ ﺻﻠﻲ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭﺑﺎ ﻟﺜﺎﻧﻲ
ﺍﻟﻘﺮﺍﻥ অর্থ : বর্নিত আয়াত
শরীফে প্রথম শব্দ অর্থাৎ " নূর"
দ্বারা উদ্দেশ্যে হলো হুজুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর
দ্বিতীয় শব্দ দ্বারা উদ্দেশ্যে কুরআন
শরীফ !'"
দলীল-
√ তাফসীরে আবী সাউদ ৩য় খন্ড ১৮
পৃষ্ঠা !
ইমামুল মুফাসসিরীন
আল্লামা জালালুদ্দীন
সূয়ুতি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
ﻣﻦﺍﻟﻠﻪ ﻧﻮﺭ ) ﻫﻮ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻭ
ﻛﺘﺎﺏ ﻗﺮﺍﻥ ﻣﺒﻴﻦ অর্থ: এ আয়াত
শরীফে নূর অর্থ হলো হুজুর পাক
ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর
কিতাব অর্থ কুরআন শরীফ !'"
দলীল--
√ তাফসীরে জালালাইন ৯৭ পৃষ্ঠা !
উক্ত আয়াত শরীফের তাফসীর
থেকে সুস্পষ্ট প্রমাণ হলো, উক্ত
আয়াত শরীফের বর্নিক " নূর" হলেন
হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম!!
এছাড়া আরো শতাধিক তাফসীরের
কিতাবে উক্ত মতামতই ব্যাক্ত
করা হয়েছে | সুবহানাল্লাহ্ !!

হজরত ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু

কারবালার প্রান্তরে একে-একে যখন সবাই শাহাদাত বরণ করেন, হজরত ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু কেবল তখন একা দাঁড়িয়ে ছিলেন। ঐ সময়টাতে তাঁর শেষ কয়েকটি কথার কিছু অংশ নিম্নে উদ্ধৃত করলাম।
“হজরত ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, “কেন আমাকে হত্যা করতে চাও? আমি কি কোন পাপ অথবা অপরাধ করেছি?” এজিদের সৈন্য বাহিনী বোবার মত দাঁড়িয়ে রইলো। পুনরায় ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, “আমাকে হত্যা করলে আল্লাহর কাছে কি জবাব দেবে ? কি জবাব দেবে বিচার দিবসে মহানবীর কাছে?” এজিদের সৈন্য বাহিনী পাথরের মত দাঁড়িয়ে আছে। আবার ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, ‘হাল্ মিন্ নাস্রিন ইয়ানসুরুনা? অর্থাৎ “আমাদের সাহায্য করার মত কি তোমাদের মাঝে একজনও নাই ?” তারপরের আহ্বানটি সাংঘাতিক মারাত্বক। ঐতিহাসিকদের মতে এটাই ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু’র শেষ আহ্ববান। আর তা হচ্ছে, আলাম্ তাস্মাও ? আলাইসা ফিকুম্ মুসলিমু?” অর্থাৎ আমার কথা কি শুনতে পাও না ? তোমাদের মাঝে কি একজন মুসলমানও নাই?’

মুসলিম লেবাসধারী এই অপদার্থের দল ইমাম পাকের খুতবার কোন জবাব দিতে পারলো না। সমস্ত কারবালা নিরব-নিস্তব্ধ হয়ে গেল। এবার যারা ইমাম পাককে চিঠি লিখে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল,তাদের কয়েকজনের নাম ধরে তিনি জিজ্ঞেস করতে লাগলেন,
“হে শাবস ইবনে রাবয়ী ! হে হাযর ইবনে আবযার ! হে কায়েস বিন আশআস ! হে ইয়াযিদ ইবনে হারেস! হে যায়েদ ইবনে হারেস ! হে আমর ইবনে হাজ্জাজ ! …………… তোমরা কি চিঠি লিখে আমাকে আমন্ত্রণ জানাও নাই? তোমরা কি আমাকে কুফায় আসার জন্য বার বার চিঠি লিখে অনুরোধ কর নাই? তোমরা কি চিঠিপত্র ও দূত পাঠিয়ে বলো নাই যে, আমাদের কোন ইমাম নেই, আপনি আমাদের মাঝে তাশরীফ আনুন এবং আপনার মাধ্যমেই আল্লাহ তায়ালার হয়তো আমাদের সঠিক নির্দেশনা দিবেন। তোমরা এও লিখেছিলে যে, যাদের অধিকার না থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতা দাবী করে ও অন্যায় আচরণ করে, তাদের চাইতে ইসলামী শাসন পরিচালনার ক্ষেত্রে আহলে বাইত-ই অধিকযোগ্য (বেশি হকদ্বার) ।
ইবনে সা’দের সৈন্যবাহিনী এবারও নিরব নিথর। হঠাৎ নির্দিষ্ঠ ব্যক্তিবর্গ (যাদের নাম ধরে ধরে ইমাম পাক উপরের কথা বললেন) তারা বলে উঠল, না ! না ! আমরা কোন চিঠিপত্র লিখিনি। মিথ্যা, সবই মিথ্যা কথা। আমরা এ সম্পর্কে কিছুই জানি না।
পুনরায় ইমাম পাক বললেন, ছি: ! ছি : (ধিক)! তোমাদের। বড়ই অনুতাপ ও পরিতাপের বিষয়। এই চেয়ে দেখো তোমাদের চিঠি। এই তোমাদের স্বাক্ষরযুক্ত আবেদনপত্র। খোদার কসম ! এগুলো তোমরাই লিখেছো এবং লোক মারফত আমার নিকট প্রেরণ করেছো ।
ঐ বেহায়া লম্পট মিথ্যুকের দল বলল, যদি লিখে থাকি তাহলে মন্দ কাজ করেছি। আমরা আমাদের কাজের প্রতি অসন্তুষ্ট।
মজলুম ইমাম পাক বললেন, এখন আমার আগমণ যদি তোমাদের মন:পূত না হয়, তোমরা যদি আমাকে না চাও, তাহলে আমাকে ফিরে যেতে দাও। আমি যেখান থেকে এসেছি সেখানেই ফিরে যাব । তোমাদের সাথে আমার কোন বিরোধ ও বিদ্বেষ নাই ।

ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু-এর শেষ ভাষণটি মাত্র একটি ছোট্ট বাক্য ছিল। তবে এর ব্যাখ্যা যদি কাঁচ ভাঙ্গার মত টুকরো-টুকরো করে দেখাতে চাই তাহলে সেই বাক্যটি হবে খুবই বেদনা দায়ক। তাই বেশি কিছু না বলে শেষ বাক্যটির সামান্য ব্যাখ্যা দিয়ে শেষ করতে চাই। খাজা গরীব নাওয়াজ রহমাতুল্লাহি আলাইহি যেমন বলেছেন, “ইমাম হোসাইন হক্ব এবং বাতিলের নির্ধারণটা পরিস্কার করে দেখিয়ে গেলেন; সে রকমই অর্থ বহন করছে ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু শেষ ভাষণটিতে। কারণ এজিদের সৈন্যবাহিনীতে একজনও হিন্দু,বৌদ্ধ,খ্রিস্টান অথবা অন্য কোন ধর্মের কেউই ছিল না। সবাই ছিল মুসলমান। অথচ কি সাংঘাতিক এবং ভয়ংকর ভাষণ, “তোমাদের মাঝে কি একজনও মুসলমান নাই?” এজিদের সৈন্যবাহিনীর সবাই মুসলমান ছিল। অথচ ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু এ কি তাক লাগানো কথা বলেছেন? “তোমাদের মাঝে কি একজনও মুসলমান নাই? ” একটিও সত্যিকারের আসল মুসলমান ছিল না বলেই ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু আনহু এই আহ্বান জানিয়ে পৃথিবীকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন। তিনি বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন যে, যারা দাঁড়িয়ে আছে তারা সবাই নকল মুসলমান।

তথ্যসূত্রঃ
[১.ইবনে আসীর, ৪ খন্ড, পৃ. ২৫ । ২. ত্বাবারী, ৬খন্ড, পৃ. ২৪৩। ৩. হাসান ও হুসাইনের কারবালার কাহিনী ও এজিদ বধ পর্ব, পৃষ্ঠা-৬৭-৭০ । ৪. দুই ইমাম দুই ফুল, পৃ.১২৩-১২৫ । ৫. শামে কারবালা, পৃ. ১২৫-১২৭। ৬. আহলে বাইত ও কারবালা, পৃ. ৪৪-৪৫ । ৭. কিতাবুল ইরশাদ : শেখ মুফিদ, ২য় খন্ড, পৃ. ৯৭ । ৮.মাকতালুল হুসাইন : খারাযমী, ২য় খন্ড, পৃ. ৬

বাঘের উপর গাউসে পাকের দরবারের কুকুরের হামলা !!←←←

হযরত শায়খ আবু মাস'উদ (র.)
বর্ণনা করেছেন,আহমদ জামী নামক এক
ভন্ড তপস্বী ছিলো। সে সাধনা ও যাদুর
জোরে এক বাঘকে বশীভূত করে নিয়েছিল।
আর ঐ বাঘের পিঠে আরোহণ
করে সে ইচ্ছামত বিচরণ করতো।
লোকেরা তার এই কান্ড দেখে তাকে বুযুর্গ
বলে মনে করতো।
ঐ তপসীর নিয়ম ছিলো - সে যেখানে ও যার
কাছে যেতো, তার নিকট বাঘের খোরাক
স্বরূপ একটি গরু চেয়ে নিতো।একদিন
সে গাউসে পাকের দরবারের
অদূরে একটি গাছের নিচে বসে তার খাদিমের
মাধ্যমে হুজুর গাউসে পাকের
দরবারে পাঠালো,'যেন বাঘের খোরাক
হিসাবে একটি গরু পাঠিয়ে দেন।
গাউসে পাক বললেন,"তুমি যাও,আমি একটু
পর গরু পাঠিয়ে দিচ্ছি।"তপসীকে তার খাদিম
গিয়ে খবরটি জানালো।তপসীও
খুশীতে আটখানা।তার
ধারণা ছিলো যে,গাউসে পাকের দরবার
থেকে তার জন্য হাদিয়া আসলে তার
খ্যাতি আরো বেড়ে যাবে।তার
ভন্ডামী বুযুর্গী হিসাবে স্বীকৃতি পেয়ে যাবে।
সুতরাং, সে ঐ হাদিয়ার জন্য
অপেক্ষা করছিলো।
এ দিকে হুজুর গউসে পাক একটি মোটা-
তাজা গরুসসহ তাঁর খাদিমকে পাঠালেন।
হুজুরের পাশে ছিলো দরবারের উচ্ছিষ্ট
খেয়ে পোষা কুকুরটি।কুকুরটিও লেজ
উঁচিয়ে খাদিমের পেছনে পেছনে যেতে লাগলো।
মোটাতাজা গরু দেখে বাঘের
মুখে পানি আসতে লাগলো।হুম্কার
ছেড়ে যখনি বাঘ
গরুটিকে হামলা করতে উদ্যত হলো,তখনই ঐ
কুকুরটি বাঘের উপর
ঝাপিয়ে পড়লো এবং বাঘের
কন্ঠনালী ছিঁড়ে ফেললো।বাঘটি গরুর উপর
হামলা করার পূর্বেই গাউসে পাকের কুকুরের
আঘাতে মারা পড়লো।কুকুরটি বাঘটির দেহ
ছিন্ন ভিন্ন করে সেটাকে সাবাড় করেছিল
বলেও বর্ণনাদিতে রয়েছে।
**সংগ্রহে:-কাযী মুহাম্মদ তোহা হাশেমী।

তুমি কি মিলাদ মাহফিলের কথা শুনলে বেদাত বেদাত বলে চিল্লাচিল্লি করো??

তুমি কি মিলাদ মাহফিলের
কথা শুনলে বেদাত বেদাত
বলে চিল্লাচিল্লি করো??
আর বলো , মিলাদ নবীর আমলে ছিলো না।
কাজেই, মিলাদ পড়া যাবে না।
তোমাকে বলছি,, আরোও কিছু বেদাত আছে,
যেগুলো তোমার জানা দরকার। যেমনঃ
এক)) "নাওয়াইতুয়ান
উসাল্লিয়া লিল্লাহে......."পড়ে
তুমি যেভাবে নামাজের নিয়ত করো,
এটি নবীজীর আমলে ছিলো না। হযরতের
যামানার কয়েকশ বছর পর এটির প্রচলন
হয়।।
দুই)) তুমি যে মাদরাসা মক্তবে ছাত্র
পড়িয়ে বেতনভাতা নিচ্ছো, এটা তো নবীজীর
জামানায় ছিলো না,
তাহলে তুমি এমনটা করছো কেন??
তিন)) রাসুল (স) সবসময়
একটি তরকারি দিয়ে আহার করতেন,
অল্প খেতেন।
তুমি কেন একাধিক
তরকারি দিয়ে গলা পর্যন্ত
খাবার ঢুকাও? ইহা বেদাত।
চার)) বর্তমানে মাদরাসা বা মসজিদের জন্য
যে বিরাটাকার দালান নির্মিত হচ্ছে,
এবং বিভিন্ন উপকরণ দ্বারা সজ্জিত
করা হচ্ছে,
নবীজীর জামানায় এমনটি ছিলো না।
তুমি কেন এমনটি করছো? এটি তো বেদাত।
পাঁচ)) রাসুল (স) এর জামানার বহু বছর
পরে কুরআন শরীফে জের, জবর, পেশ
সংযোজিত হয়, এটা তো বেদাত।
তাহলে তুমি জের,জবর, পেশ ওয়ালা কুরআন
পড়ছো কেন?
ছয়)) তুমি যে প্রতি বছর মাদরাসা/মসজিদের
সামনে সম্মেলন করো, এটা তো নবীজীর
জামানায় ছিলো না,
কাজেই এটা বেদাত। তুমি এটা করছো কেন?
সাত)) তুমি যে আজানের সময় মসজিদে মাইক
ব্যবহার করো,
এটা তো নবী (স) করেন নাই,
কাজেই এটা বেদাত।
আট)) তুমি যে বিমানে চড়ে হজ্ব করতে আরব
দেশে যাও,
এটা তো নবীজীর আমলে ছিলো না। কাজেই
এটা বেদাত।
নয়)) সবশেষে মুন্সী তোমারে বলি,, নবীর
জামানায় তুমিও তো ছিলা না, কাজেই
তুমিও তো বেদাত

মাযহাব কাকে বলে ?

আজকাল অনেক ভাইকে দেখা যায় মাযহাব শব্দটি নিয়ে বিভ্রান্তিতে ভুগে থাকেন।
আবার অনেকে এই শব্দটির সঠিক অর্থ জানা সত্ত্বেও এই শব্দটি নিয়ে সাধারন মুসলমানদের ভিতরে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা করেন।
যারা জেনে শুনে মাঝহাব নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেন তাদের জন্য এই পোষ্ট নয়।
কারন ঘুমন্ত মানুষকে জাগানো আমার সম্ভব কিন্তু জাগ্রত ব্যক্তিকে সম্ভব নয়।
যারা সত্যিকার অর্থেই মাযহাব নিয়ে জানতে চান তাদের জন্য আমার এই পোষ্ট।
............................................................................................................
বর্তমান পৃথিবীতে প্রসিদ্ধ চারটি মাযহাব আছে। (১) হানাফী মাযহাব, (২) মালেকী মাযহাব (৩) শাফেয়ী মাযহাব, (৪) হাম্বলী মাযহাব। আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষ হানাফী মাযহাব অনুসরন করে। ইমাম আবূ হানিফা (রহ.) দ্বীনের কিভাবে সঠিক পথে চলার যায় তার জন্য আমাদেরকে নিখুঁতভাবে দিকনির্দেশনা দিয়ে গেছেন। তিনি একজন তাবেয়ী ছিলেন। স্বচক্ষে সাহাবাদেরকে দেখেছেন। এই বৈশিষ্ট্য অন্য কোন ইমামের মধ্যে নেই। দ্বিতীয় ইমাম হলেন, ইমাম মালেক (রহ.)। তিনি ইমাম আবূ হানিফা (রহ.) এর ছাত্রতুল্য। তৃতীয় ইমাম হলেন,ইমাম শাফেয়ী (রহ.)। তিনি ইমাম আবূ হানিফা (রহ.)-এর প্রথম স্তরের শীর্ষস্থানীয় ছাত্রদ্বয়ের তথা ইমাম আবূ ইউসূফ (রহ.) ও ইমাম মুহাম্মদ বিন হাসান শায়বানী (রহ.) এর ছাত্র, অর্থাৎ ইমাম আবূ হানিফা (রহ.) এর নাতি ছাত্র। চতুর্থ ইমাম হলেন, ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (রহ.)। তিনিও ইমাম আবূ হানিফা (রহ.) এর নাতি ছাত্র।
মাজহাব মানে মতামত, বিশ্বাস, ধর্ম, আদর্শ, পন্থা, মতবাদ, উৎস।
মিসবাহুল লুগাত (থানবী লাইব্রেরী-২৬২ পৃষ্ঠা)
মাজহাব শব্দের অনেক অর্থ আছে। তার ভিতরে একটি হল মতামত।
আসুন এবার মাজহাব শব্দের উৎস কোথায় দেখি.....
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর ও আবু হুরায়রা রা. হুজুরে দঃ'র হাদীস বর্ণনা করেছেন, যখন কোন হাকীম (বিচারক ও মুফতী) কোন বিষয়ে ইজতিহাদ করে এবং তা সঠিক হয়, তবে সে দ্বিগুন সওয়াব পাবে। আর ইজতিহাদে যদি ভুল করে, তবুও সে একগুন সওয়াব পাবে।
-বুখারী 2/109, মুসলিম 2/72, তিরমিজী 193
ইজতিহাদের শাব্দিক অর্থ, উদ্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য যথাসাধ্য পরিশ্রম করা। ইসলামী ফেকাহ শাস্ত্রের পরিভাষায় ইজতিহাদ অর্থ,কোরআন ও সুন্নায় যে সকল আহকাম ও বিধান প্রচ্ছন্ন রয়েছে সেগুলো চিন্তা-গবেষণার মাধ্যেমে আহরণ করা। যিনি এটা করেন তিনি হলেন মুজতাহিদ। মুজতাহিদ কুরআন ও সুন্নাহ থেকে যে সকল আহকাম ও বিধান আহরণ করেন সেগুলোই হলো মাযহাব। অথাৎ কুরআন ও সুন্নাহ থেকে যে সকল আহকাম ও বিধান আহরণ করে মুজতাহিদগণ যে সকল মতামত পেশ করেছেন তাকে মাযহাব বলে।যাদের কোরআন ও সুন্নাহ থেকে চিন্তা গবেষণার মাধ্যমে আহকাম ও বিধান আহরণের যোগ্যতা নেই তাদের কাজ হল মুজতাহিদদের আহরিত আহকাম অনুসরনের মাধ্যমে শরীয়তের উপর আমল করা।
কুরআন ও সুন্নাহ থেকে যে সকল আহকাম ও বিধান আহরণ করার জন্য কি কি যোগ্যতা অর্জন করতে হবে ?
১. কোরআনের কোন আয়াত কখন নাজিল হয়, কোন আয়াত নাছেখ (রহিতকারী), কোন আয়াত মানছুখ (রহিত), কোন আয়াত মুজমাল (সংক্ষিপ্ত), কোন আয়াত মুতাশাবেহ ইত্যাদি বিষয়গুলো সবিস্তারে জানার সাথে সাথে কোরআনের নিগুঢ় তথ্যগুলোর সঠিক মর্মগুলি বুঝার পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে।
২. হুজুর দঃ. কর্তৃক ত্রিশ পারা কোরআনের ব্যাখ্যায় রেখে যাওয়া দশ লক্ষ হাদীস সনদের ভিন্নতাসহ জানা আবশ্যক। আর হাদীসের এ বিশাল ভান্ডার থেকে কমপক্ষে যেসব হাদীস দ্বারা শরীয়তের বিধি-বিধান সাব্যস্ত হয়, সেসব হাদীস সনদ (বর্ণনাকরী), মতন (মূল বিষয়) এবং উক্ত হাদীস সমূহের বর্ণনাকারীদের জীবন ইতিহাস (সাহাবা ও তাবেয়ীনদের জীবনাচার)সহ কন্ঠস্থ থাকতে হবে। তারই সাথে হাদীসের নিগুড় তথ্যগুলি, সঠিক মর্মগুলি বুঝার পূর্ণ জ্ঞান থাকতে হবে। যাতে করে মতবিরোধ বিশিষ্ট মাসআলাসমূহে কোরআন, হাদীস,সাহাবা ও তাবেয়ীনদের নির্দেশিত সীমা অতিক্রম না করা হয়।
৩. মুজতাহিদ আরবী ভাষা সম্পর্কে দক্ষ ও অভিজ্ঞ হতে হবে। কেননা কোরআন ও হাদীস উভয়টি আরবী। তাই আরবী ভাষা সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা ছাড়া ইজতিহাদ তো দূরের কথা শুধু কোরআন-হাদীসের অর্থ বুঝাও সম্ভবপর নয়। আরবী ভাষায় দক্ষতা অর্জনের জন্য আরবী আভিধানিক অর্থ ও পারিভাষিক অর্থ, নাহু-ছরফ, উসূল, আলাগাতের পূর্ণ দক্ষতা অপরিহার্য।
৪. মুজতাহিদ আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বুদ্ধিমত্তা ও অন্তদৃর্ষ্টি দ্বারা বিশেষভাবে ভূষিত হয়ে অত্যাধিক স্মরণশক্তি ও জ্ঞান সম্পন্ন হতে হবে। মুজতাহিদের জন্য কেবল সাধারণ বুদ্ধিমত্তাই যথেষ্ট নয়। সাধারণ বুদ্ধিমত্তাতো সকল আলেমেরই থাকে। এতে মুজতাদিরে বিশেষ গুরুত্ব আর রইল কোথায়? মুজতাদি তাক্ব ওয়া ও খোদাভীতি সম্পন্ন হতে হবে। তাকে কখনও মনপূজারী হওয়া চলবে না।
৫. ইজতিহাদ ও মাসআলা চয়নের প্রক্রিয়া সমূহের উপর পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখতে হবে।
সূত্র :- তাফসীরে আহমদী, পৃষ্ঠা- ১০১
হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলবী রহ. ইমাম বাগাবী রহ. সূত্রে বর্ণনা করেন যে, ইজতিহাদের জন্য পাঁচটি শর্ত রয়েছে। যার মধ্যে এ পাঁচটি হতে একটিও কম পাওয়া যাবে, তার জন্য তাক্বলীদ ছাড়া কোন পথ নেই।
- কাঞ্জুল উসূল ইলা মা’রিফাতিল উসূল- ২৭০, উসূলে ফিক্বাহ লি আবি হুরায়রা- ২৩৬, আল মালাল ওয়ান নাহাল- ১/২০০ মিশরী ছাপা।
হযরত ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. কে জিজ্ঞাসা করা হল, যার এক লক্ষ হাদীস স্মরণ থাকে, সে কি ফক্বীহ বা মুজতাহিদ হতে পারেবে, তদুত্তরে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল বললেন, না। পুনারায় জিজ্ঞাসা করা হলো, যদি পাঁচ লক্ষ হাদীস স্মরণ থাকে, তদুত্তরে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল বললেন, সে সময় তাকে ফক্বীহ হবে আশা করা যেতে পারে।
- এমদাদুল ফতোয়া ৪/৮৭
হিজরি চতুর্থ শতাব্দীর পর শুধুমাত্র হানাফী, মালিকী, শাফিয়ী ও হাম্বলী উক্ত চার মাযহাবেই (কুরআন ও হাদীসের বিশ্লেষন) তাক্বলীদ (অনুসরন) সীমাবদ্ধ হয়েছে। কেননা, চার মাযহাব ছাড়া অন্যান্য মুজতাহিদদের মাযহাব তেমন সংরক্ষিত হয়নি। ফলে আস্তে আস্তে সেসব মাযহাব বিলুপ্ত হয়ে পড়ে।
- আহসানুল ফতোয়া ১/৪৪১, তাফসীরে আহমদী- ২৯৭, আল ইনসাফ- ৫২।
যারা এই বিষয়ে খুব বেশি প্রশ্ন করে থাকেন তাদের বলছি.............যদি বুঝার জন্য প্রশ্ন করে থাকেন তবে ধন্যবাদ।
আর যদি মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি অথবা আটকানোর জন্য প্রশ্ন করে থাকেন তবে আপনারা প্রশ্ন করতে থাকুন,
আল্লাহ তায়ালা যতক্ষন তৌফিক দেন উত্তর দিয়ে যাব।
তবে হিদায়াত তো আল্লাহ তা’য়ালার হাতে।
যারা মাঝহাব নিয়ে বিস্তারিত জানতে চান তারা এই বই দুটি পড়ে দেখতে পারেন.........
http://www.banglakitab.com/…/SchoolOfThoughts-WhatAndWhy-Pa…
http://www.banglakitab.com/…/SchoolOfThoughts-WhatAndWhy-Pa…
আল্লাহ আমাদের সকলকে বুঝার ও আমল করার তৌফিক দান করুন। আমীন।

জ্বীন জাতির বাদশাহ ও একটি অন্যরকম ঘটনা!!

হযরত অাবু সাদ অাব্দুল্লাহ বিন অাহমদ
রহমাতুল্লাহ অালাহে বর্ণনা করেন,
একবার অামার অাদরের কন্যা ফাতেমা ঘরের ছাদ হতে উধাও হয়ে গেলো !! অামি দুশ্চিন্তাগ্রস্ত
হয়ে সৈয়্যদুনা গাউছে পাক শাহে বাগদাদ
রহমাতুল্লাহ অালাইহ উনার দরবারে খেদমতে
উপস্থিত হলাম এবং অামার মেয়েকে উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য অারজি জানালাম!!
গাউছে পাক রাহমাতুল্লাহ অালাইহ ফরমালেন,
করখ নামক জায়গায় গিয়ে রাত্রে কোন নির্জন
বিজন টিলার উপর অবস্থান নিবে, তারপর তোমার চারপাশে কুন্ডলী বানিয়ে তার মধ্যখানে বসে থাকবে ! অতঃপর বিছমিল্লাহ পাঠ করবে অার অামাকে কল্পনা করতে থাকবে!! দেখবে রাতের অন্ধকারে জ্বীন সম্প্রদায় তোমার অাশে পাশে দলবেধে চলাফেরা করছে!! তাদের অাকৃতি বড়ই ভয়ানক ও অাশ্চর্যজনক হবে,তবে তুমি ভয় করবেনা!! সেহরীর সময় জ্বীনের বাদশাহ উপস্থিত হয়ে তোমার উদ্দেশ্য জানতে চাইবে!
তুমি বলবে শায়খ অাব্দুল কাদের জীলানী
রহমাতুল্লাহ অালাইহ অামাকে পাঠিয়েছেন
অাপনি অামার কন্যা উদ্ধার করে দিন!!
অতঃপর অামি গাউছে পাকের রহমাতুল্লাহ
অালাইহ নির্দেশ মোতাবেক "কারখের" বিজান
ভূমিতে গিয়ে সব কিছু করলাম। রাতের অন্ধকারে
দেখলাম জ্বীনেরা অামার কুন্ডলীর বাইরে
অাসা যাওয়া করছে, তাদের অাকৃতি এতই ভয়ঙকর ছিলো যে তাকানো যাচ্ছিলো না!!
সেহরীর সময় জ্বীনদের বাদশাহ একটা ঘোড়ায়
চড়ে কুন্ডলীর বাইরে উপস্থিত হলেন, তার
চারপাশে অসংখ্য জীন ভিড় করেছিল, সে অামার
এখানে অাসার উদ্দেশ্য জানতে চাইল!
অামি বললাম অামাকে গাউছুল অাজম
রাহমাতুল্লাহ অালাহে পাঠিয়েছেন, এটুকু
শোনার পর সে ঘোড়া হতে নেমে একদম মাটিতে
বসে পড়লো!! বাকি সমস্ত জ্বীনরাও তাই করলো!!
অামি তাকে কন্যা হারানোর কথা জানালাম,
সে বাকি জ্বীনদের মাঝে ঘোষনা করলো
""তোমাদের মাঝে কে মেয়েটা অপহরন করেছে??
কিছুক্ষণ পর জ্বীনেরা চীন দেশীয় এক জ্বীনকে
অপরাধী স্বাব্যস্ত করে উপস্থিত করলো!!
বাদশাহ জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কেনো
জামানার কুতুব,গাউছে পাক রাহমাতুল্লাহ
অালাইহেে শহর হতে মেয়েটা তুলে নিয়ে
গেছো??
সে ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললো,হুজুর অামি তাকে দেখা মাত্রই অাসক্ত হয়ে গিয়েছিলাম""
একথা শুনার পর পরই বাদশাহ তার গর্দান কাটার নির্দেশ দিলেন!! এবং অামার প্রিয়তমা কন্যা কে ফেরত দিলেন!
অামি তার অমায়িক ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে গেলাম
এবং জীনের বাদশার নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর
বললাম " অাপনি সৈয়্যদুনা গাউছে পাক রাহমাতুল্লাহ অালাইহ কে অশেষ ভালোবাসেন!
একথা শুনে বাদশাহ বললেন, অবশ্যই, অবশ্যই, হুজুর গাউছুল অাজম রাহমাতুল্লাহ অালাইহ যখন অামাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করেন তখন সমস্ত
জ্বীনজাতি থর থর করে কাপতে থাকে!!
যখন অাল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা কাউকে
জামানার কুতুব বানিয়ে দেন, তখন সমস্ত মানব-
দানব কে তার অনুগত করে দেন!!

সূত্র : বাহজাতুল অাছরার ওয়া' মাদাদুল অানওয়ার (পৃষ্টা: ১৪০)

শানে বু-আলি কলন্দর (রহঃ)

বুয়ালি শাহ্ কলন্দর ছিলেন ইমামুল আজম
হযরত আবু হানিফার (রহঃ) বংশধর।
বু আলী শাহ্ কলন্দরের প্রকৃত নাম হল শেখ শরফ
উদ্দিন চিশতী।
বুয়ালি শাহ্ তার উপাধি। পরবর্তীতে
এ উপাধি তার নাম হিসেবে বিশ্বের
দরবারে পরিচিতি লাভ করে।বুয়ালি
শাহ্ আওলিয়া হযরত খাজা কুতুবউদ্দিন
বখতিয়ার কাকির (রহঃ) কাছে মুরিদ হয়ে
মুর্শিদের নির্দেশে সাধনা করতে
জঙ্গলে চলে যান। সেখানে নদীর জলে
১ পায়ে দাড়িয়ে ১২ বছর
আল্লাহ পাকের হরদম জিকির চালিয়ে
যান।নানা প্রতিকূল অবস্থায়ও তিনি
ইবাদত বন্দেগিতে কোন শিথিলতা
দেখান নি। তার এ কঠোর এবাদতে
আল্লাহপাক খুশি হয়ে জিজ্ঞাসা করেন
" হে শরফুদ্দিন তুমি আমার কাছে কি
চাও"। উত্তরে তিনি বললেন " আমাকে
নবী মুহাম্মাদ (স) এর মত সম্মানিত করুন।
আল্লাহপাক বললেন " ইহা কখনও সম্ভব
না, এটা ছাড়া তুমি অন্য কিছু প্রার্থনা
কর"বুয়ালি বললেন " তাহলে আমাকে
হযরত আলির মত সম্মানিত কর"
আল্লাহপাক বললেন "যদিও হযরত আলির
মত ২য় আর কেউ এই দুনিয়াতে আসবে
না,তারপর ও তোমার প্রার্থনার প্রতি
সম্মান হেতু আমি তোমাকে হযরত
আলির রুহানি ফায়েজ দান করলাম।যখনই
কেউ তোমার সান্নিদ্ধে আসবে তখনই
সে তোমার কাছ হইতে হযরত আলি সহবত
লাভ করবে" এজন্য পরবর্তীতে তাহার
নাম হয়ে যায় বুউ(ঘ্রান)+আলি = বুয়ালি
শাহ্। তিনি ধ্যান যোগে কলব
সংশোধনের সাধনায় প্রসিদ্ধ হওয়ায়
তাকে কলন্দরও বলা হয়।
তিনি অনেক উঁচু মাপের কারামত সম্পন্ন
আউলিয়া ছিলেন। বুয়ালি শাহ্ প্রায়ই
আল্লাহর প্রেমে মত্ত হয়ে থাকতেন।এ
জন্য বাইরে কি হচ্ছে না হচ্ছে সে
ব্যাপারে তার কোন খেয়ালই থাকত
না।এমন কি তার দেহের ও প্রতি তার
কোন ভ্রুখেপ ছিল না।তৎকালীন
শরীয়তের আলেম কাজী জিয়াউদ্দিন
সানামি বুয়ালি শাহর মুখের মুচ বর্ধিত হওয়ায়
তা কর্তনে ফতোয়া জারি করলে
বুয়ালি উত্তরে বলেন যে "হে কাজী
সানামি,তোমাদের মুখই কেবল
আল্লাহর জিকির করে,আর আমার
দেহের সর্বাঙ্গ আল্লাহর জিকির করে
থাকে,এই মুচ ও তাহার বাহিরে না"।
বুয়ালি শাহের এত উঁচু মর্তবাওলা কথা
বুঝতে না পেরে কাজি রেগে গিয়ে
বুয়ালি শাহের ৫ টি বড় মুচ জোর করে
কেটে ফেলেন। আল্লাহর অলিদের
সাথে বেয়াদবি করার দরুন সেইদিনই
কাজি জিয়াউদ্দিনের ৫ সন্তান কোন
সুনির্দিষ্ট কারন ছাড়াই মৃত্যু মুখে পতিত
হয়।তাই আল্লাহর অলিদেরকে যদি মন
থেকে সম্মান না করতে পারেন,অন্তত
তাদের সাথে কোন প্রকার বেয়াদবি
করার দুঃসাহস কখনও দেখাতে যাবেন
না।

শানে বায়েজীদ বোস্তামী (রহঃ)

ঐশীপ্রেমের মত্ততায় মহান আউলিয়া হযরত
বায়েজিদ বোস্তামী (র.) এর মুখ হতে একদিন
বেরিয়ে পড়ল,"আমিই খোদা এবং সমস্ত শান
আমারই"।বাবা বায়েজিদের মুখে এমন কথা শুনে তারঁ ভক্তরা হতভস্ত হয়ে গেল,এবং মত্ততার অবসান হলে উপস্থিত ভক্তগণ বায়েজিদকে বললেন,"আপনিতো নিজেকে খোদা বলে দাবি করেছেন।" একথা শুনে তিনি বললেন, আবার কখনো আমার মুখে এরূপ কথা শোনা মাএই তোমরা আমাকে কতল করে ফেলবে।এরপর অন্য একদিন
মত্ততাবশত বাবা বায়েজিদ পুনরায় একই বাক্য উচ্চারণ করতে লাগলে, ভক্তরা তাঁকে কতল করতে প্রস্তূত হলো,কিন্তূ আশ্চর্যের বিষয় ভক্তরা তখন দেখতে পেল সারা ঘরে হাজার হাজার বায়েজিদ অবস্থান করছেন,ফলে কোনটিকে হত্যা করবে তা তারা নিদিষ্ট করতে পারেনি।তিনি আবারও বললেন,"প্রকৃতপক্ষে আমিই আল্লাহ্, আমি ছাড়া
আর অন্য কোনো উপাস্য নেই, অতএব তোমরা আমার ইবাদত করো"।

বাদশাহ হারুনুর রশীদ এবং বাহলূল”

আব্বাসী খলীফা হারুনুর রশীদ এর শাসন আমলে বাহলুল নামে এক পাগল ছিল। যে অধিকাংশ সময় কবরস্থানে কাটাতো। কবরস্থানে থাকা অবস্থায় একদিন বাদশাহ হারুনুর রশীদ তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন।বাদশাহ তাকে ডাক দিলেনঃ
বাহলুল ! ওহে পাগল ! তোমার কি আর জ্ঞান ফিরবে না ?
বাহলুল বাদশাহর এ কথা শুনে নাচতে নাচতে গাছে উপরের ডালে চড়লেন এবং সেখান থেকে ডাক দিল- হারুন ! ওই পাগল ! তোর কি কোনদিন জ্ঞান ফিরবে না ? বাদশাহ গাছের নিচে এসে বাহলুলকে বললেন, আমি পাগল নাকি তুমি, যে সারা দিন কবরস্থানে বসে থাকে?
বাহলুল বলল, আমিই বুদ্ধিমান।
বাদশাহঃ কীভাবে?
বাহলুল রাজপ্রাসাদের দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বললেনঃ আমি জানি এই রঙ্গীলা দালান ক্ষণিকের আবাসস্থল, এবং এটি (কবরস্থান) স্থায়ী নিবাস; এজন্য আমি মরার পূর্বেই এখানে বসবাস শুরু করেছি। অথচ তুই গ্রহণ করেছিস ঐ রঙ্গীনশালাকে আর এই স্থায়ীনিবাসকে (কবর) এড়িয়ে চলছিস। রাজপ্রসাদ থেকে এখানে আসাকে অপছন্দ করছিস যদিও তুই জানিস এটাই তোর শেষ গন্তব্য। এবার বল, আমাদের মধ্যে কে পাগল ? বাহলুলের মুখে এ কথা শোনার পর বাদশাহর অন্তর কেঁপে উঠল, তিনি কেঁদে ফেললেন। তাঁর দাড়ি ভিজে গেল। তিনি বললেন: খোদার কসম ! তুমিই সত্যবাদী। আমাকে আরও কিছু উপদেশ দাও!
বাহলুল: তোমার উপদেশের জন্য আল্লাহর কিতাবই যথেষ্ট। তাকে যথার্থভাবে আকড়ে ধর।
বাদশাহ: তোমার কোন কিছুর অভাব থাকলে আমাকে বল, আমি তা পূরণ করব।
বাহলুল: হ্যা, আমার তিনটি অভাব আছে, এগুলো যদি তুমি পূরণ করতে পার তবে সারা জীবন তোমার কৃতজ্ঞতা স্বীকার করব।
বাদশাহ:তুমি নিঃসঙ্কুচে চাইতে পার।
বাহলুল: মরণের সময় হলে আমার আয়ূ বৃদ্ধি করতে হবে।
বাদশাহ: আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
বাহলুল: আমাকে মৃত্যুর ফেরেশতা থেকে রক্ষা করতে হবে
বাদশাহ: আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
বাহলুল: আমাকে জান্নাতে স্থান করে দিতে হবে এবং জাহান্নাম থেকে আমাকে দূরে রাখতে হবে।
বাদশাহ: আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
বাহলুল: তবে জেন রাখ, তুমি বাদশাহ নও বরং তুমি অন্য কারও অধীনস্থ। অতএব তোমার কাছে আমার কোন চাওয়া বা প্রার্থনা নেই।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে এই দুনিয়ার রং-তামাশা ছেড়ে কবরের প্রস্তুতি গ্রহন করার তাউফীক দান করুন। আমীন

Thursday, March 19, 2015

দেশে বিরাজ করছে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি।



দেশে বিরাজ করছে এক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি। এক অশুব শক্তি যেন এ দেশকে ধ্বংসের দারপান্তে নিয়ে যাওয়ার খেলায় মেতে উঠেছে। রাজনীতির নামে চলছে নিষ্ঠুরতা ও উন্মত্ততা। রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে দেশে এই সব কি দেখছি আমরা ? জীবন্ত মানুষকে পুড়ে মারা- ভাবতেই গা শিউরে উঠে। যারা এই সব করে তারা কি মানুষের পর্যায়ে রয়েছে ? ক্ষমতার উদগ্র বাসনায় কতিপয় মানুষ আজ মনুস্যত্ত বিসর্জন দিয়ে দানবে পরিনত হয়েছে। তাদের তৈরি কিছু মানুষরূপী পিচাশ চারদিকে যেন শুরু করেছে ধ্বংসের তাণ্ডব। তাদের হাত থেকে শিশু নারী বৃদ্দ কেউ রেহাই পাচ্ছেনা। মানুষকে পুড়িয়ে মারার পর তারা বর্বর ও পৈশাচিক্তার সাফল্য উল্লাস করছে।
গত ৫ জানুয়ারী থেকে ২০ দলীয় জোটের হরতাল-অবরোদকে কেন্দ্র করে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতায় এ যাবত নিহত হয়েছে ৮০ জন। যাদের মধ্য ৫১ জনের নির্মম মৃত্য হয়েছে পেট্রোল বোমা ও কক্টেলের আগুনে। দগ্ধ হয়েছে আরও শত শত লোক। পোড়া মানুষের গন্ধ ও রোগী-স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে উঠেছে হাঁসপাতালগুলুর বার্ন ইউনিট।
কিন্তু অগ্নিদগ্ধ অসহায় মানুষের যন্ত্রণা ও আর্তনাদ স্পর্শ করছেনা দূরবৃতদের পাষাণ হৃদয়। রাতের আঁধারে হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছে দুর্বৃত্তরা। আজকের নষ্ট রাজনীতি যেন কিছু মানুষকে ক্রমেই পশু বানিয়ে দিচ্ছে। তাদের না আছে কোন হিতাহিত ঙান, না আছে মনুষ্যত্ব ও মানবতাবোদ। মধ্যযুগীয় কবি বিহারিলাল এর ভাসায় বলতে হয়, ব্যাঘ্রে-সর্পে তত নাহি ডরি, মানুষ জুন্তুরে যত ডরি। বর্তমানেও বোমা হামলাকারী এসব দানবের ভয়ে দেশের মানুষ তটস্থ। একজন কর্মজীবী মানুষ, ব্যবসায়ী কিংবা শিক্ষার্থী বাসা-বাড়ি থেকে বের হয়ে আবার নিরাপদে ঘরে ফিরতে পারবে কিনা সে আশঙ্খা ও ভীতি বিরাজমান সবার মনে। বর্তমানে অবস্তা এমন এক পর্যায়ে যে, সহিংসতার আগুনে পুড়ছে সাধারণ মানুষ, দিনমজুর। তাদের ঘরে-বাহিরে বিভীষিকার আগুনে পুড়তে হচ্ছে। কর্মহীন হয়ে ঘরে বসে থাকলে ক্ষুধার আগুনে পুড়তে হয়। আর ঘর থেকে বের হলে পেট্রোল বোমায় জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মরতে হয়। এভাবে মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা শুদু মানবতাবিরোধী নয়, বরং ইসলামবিরোধী। কাউকে অন্যায়ভাবে হত্যার অনুমোদন দেয়নি ইসলাম। এ ধরনের জঘ্নন্য কর্মকাণ্ডকে সব ছেয়ে বড় গুনাহ বা কবিরা গুনাহ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

‘আনাল হক’ তত্ত্ব ও রহস্য




আনাল হক একটি আরবী বাক্য। এর আভিধানিক অর্থ হলো আমি সত্য এবং পারিভাষিক অর্থ আমি আল্লাহ্‌ এটাই শরিয়ত সমর্থিত। হযরত মনছুর হিল্লাজ রহমাতুল্লাহি আলায়হি খোদার প্রেম সাগরে অবগাহন ও তাঁর প্রেমে পাগল হয়েই বলেছিলেন, হক হক আনাল হক, অর্থাৎ আল্লাহ্‌ আল্লাহ্‌ আমিই আলাহ। কিংবা সত্য সত্য আমিই একমাত্র সত্য। দ্বিতীয় সত্য বলতে আর কিছুই নেই। সবই অস্তিত্বহীন, বিলীন।
ইশক্বে এলাহিতে বিভোর হয়ে, দুনিয়ার সকল সৃষ্টির অস্তিত্বকে একমাত্র আল্লাহ্‌তে বিলীন মনে করে, এমনকি স্বীয় অস্তিত্বকেও হারিয়ে সম্পূর্ণ দিওয়ানা অবস্থায় হযরত মনছুর হিল্লাজ বলেছিলেন- আনাল হক। এ কালামটি তিনি বারংবার বলেছিলেন তখন স্তানীয় আলেম, পীর মাশায়েখগন উক্ত কালামটি তাকে উচ্চারণ করতে নিষেধ করেছিলেন। কিন্তু তিনি কিছুতেই আনাল হক বলা থেকে বিরত হননি। খোদা প্রেমিক হযরত মনছুর হিল্লাজ আধ্যাত্মিক তত্বের যে সকল কথাবার্তার জন্য শরিয়তি আলেম-ওলামা ও পীর মাশায়েখদের বিরাগভাজন হয়ে চরম নিন্দনীয় হয়ে পড়েছিলেন। সে সবের মধ্য প্রধান কাজটি হল আলান হক, আমিই আল্লাহ। যার শেষ পরিনতি হয়েছিল শূলদন্ড। আর এজন্যই শরিয়তি আলেমগণ তাকে কাফের ফতোয়া দিয়েছিলেন।
হযরত মনছুর হিল্লাজ রহমাতুল্লাহি আলায়হির মুখ থেকে আনাল হক বাক্যটি উচ্চারিত হওয়া সম্পর্কে আশ্চাযজনক ঘটনা রয়েছে। হযরত মনছুর হিল্লাজ রহমাতুল্লাহি আলায়হি আল্লাহর প্রেমে এমনভাবে ডুবে থাকতেন যে, তিনি সর্বঅবস্তায় আল্লাহর জিকির করতেন। এমনকি রাতের বেলায় তিনি কখনো বিছানায় শুতেন না। যদি কোন অবস্থায় তাঁর নিদ্রা এসে যেত, তখন তিনি মসজিদের দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে নিদ্রা দূর করতেন। মোটকথা প্রতিটি নিঃশ্বাসেই তিনি আল্লাহর যিকিরে মুসগুল থাকতেন। একদা গভীর রাতে যিকির করতে করতে নিজেকে একেবারে বিলীন করে দিলেন। বাহ্যিক ঙান ও দুনিয়াবি চিন্তা-চেতনা সবই লোপ পেয়ে গেল। তিনি এক নতুন জগতে বিচরন করতে লাগলেন। অনেক নব নব অদৃশ্য তাঁর চোখের সম্মুখে উদ্ভাসিত হয়ে উঠলো। তিনি একেবারে তন্ময় হয়ে গেলেন। হঠাত দেখতে পেলেন এক আশ্চার্জ জ্যোতির্ময় রুপচ্চবি। এতে তিনি মুদ্ধ ও আত্নহারা হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, হে আগন্তক মহান রুপছায়া! কে আপনি ? এ সময় সে মহান জ্যোতির্ময় রুপছায়া হতে আওয়াজ এলো- আনাল হক, আমি আল্লাহ্‌। এ উত্তর শেষ হতে না হতেই সে অপূর্ব জ্যোতির্ময় রুপচ্চবি তাঁর সম্মখ থেকে অদৃশ্য হয়ে গেল। হযরত মনছুর হিল্লাজ রহমাতুল্লাহি আলায়হির তন্দ্রাভাব দূরীভূত হলে মুহূর্তেই তাঁর মুখ থেকে বের হয়ে এলো সেই অপূর্ব মহনীয় বাক্যটি আনাল হক, আমি আল্লাহ্‌। হযরত মনছুর হিল্লাজের চিরবাঞ্চিত ও প্রিয় মাহবুবের ক্ষণিকের দর্শন স্রিতি তাঁর নজর হতে দূরীভূত হওয়ার সাথে সাথেই তিনি যেন একেবারে দিশেহারা হয়ে পড়েন। নিজেকে সামলাতে না পেরে পাগলের ন্যায় দিগ্বিদিক হারিয়েই মনের অজান্তেই বলতে শুরু করলেন, সেই মহান বাক্যটি আনাল হক। হক হক, আনাল হক। কি সাংঘাতিক কথা, কি কুফরি বাক্য। সৃষ্টি হয়ে স্রষ্টার দাবী, দাস হয়ে প্রভুর দাবী, এ কি কখনো হতে পারে ??? নির্বিকার হযরত মনছুর হিল্লাজের মুখে বারবার সেই একই ধ্বনি, একই বাক্য-আনাল হক, তাঁর মুখে ঐ ধ্বনি শুনে শরীয়তপন্থী আলেমগণ ক্রমশ বিরুদ্ধচরন করতে শুরু করলেন। তাদের দৃষ্টিতে আনাল হক হলো কুফরি কালাম। এ কারনে আলেম সমাজ তাকে কাফের ফতোয়া দিলেন। অবশ্য ইতিপূর্বে এ বাক্য বলা থেকে বিরত থাকার জন্য হযরত মনছুর হিল্লাজকে বারবার অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু অনঢ় অটল থেকে এবং একখানা পুস্তুকের কিছু কথা নিয়েও লোক সমাজে বেশ আপত্তি উঠেছিল। এজন্য খলীফার দরবারেও তাকে আসামীর কাঠগড়ায় দাড়িয়ে জবাবদিহি পর্যন্ত করতে হয়েছে। শুদু তাই নয় হযরত মনছুর হিল্লাজ রহমাতুল্লাহি আলায়হির আল্লাহর সৃষ্টি তত্বের এমন কিছু নিগুঢ় তত্ত্ব লোক সমাজে প্রকাশ করে ফেলেছিলেন। যার জন্য শরীয়তপন্থী আলেমগণ তাকে কাফের ফতোয়া দিয়ে খলীফার নিকট তাঁর মৃত্যুদণ্ড দাবী করেছিলেন। খলিফা আলেমদের দাবীর প্রেক্ষিতে হযরত মনছুর হিল্লাজকে কারারুদ্ধ করলেন। দীর্ঘ ৮/৯ বছর পর্যন্ত কারান্তরালে থাকতে হবে। এ সময় হযরত মনছুর হিল্লাজের জাতশুত্রু ( আনাল হক বলায় শুত্রুতা শুরু হয়)  বাগদাদের প্রদান উজিরের ব্যাক্তিগত নির্দেশে অন্য বন্দীদের থেকে হযরত মনছুর হিল্লাজের প্রতি অতিরিক্ত কিছু নতুন ব্যবস্তা নেয়া হয়। তাকে প্রত্যহ ১০টি বেত্রাঘাত ও অন্যান্য কয়েদীদের থেকে নিম্নমানের খাবার পরিবেষণের নির্দেশ দেয়া হল। সব নির্যাতন তিনি নীরবে সহ্য করতে লাগলেন। বিন্দুমাত্র বিচলিত হলেন না। এই অমানবিক অত্যাচার ও নির্যাতনের মধ্যে তিনি আপন প্রেমাসম্পদ ও প্রিয় মাহবুবের সরণ ও সর্বক্ষণের জন্যই করে যেতে লাগলেন, বলেই চললেন, আনাল হক, কারাগারে থাকাবস্তায় হযরত মনছুর হিল্লাজের পায়ে বেড়ী পরিহিত থাকতো। এ অবস্থায়ও গভীর রাতে তিনি অন্তত এক হাজার রাকআত নামায আদায় করতেন। এ অবস্থা দেখে জেলখানায় অনেক কয়েদী এবং কারারক্ষী অনেকেই তাঁর মুরিদ হয়ে যান। হযরত মনছুর হিল্লাজকে কোন উপায়ে দমাতে না পেরে ইরাকের প্রধান উজির দেশের কাজীর (বিচারক) নিকট হতে মৃত্যুর ফতোয়া লিখিয়ে খলিফার নিকট পেশ করেন এবং অবিলম্বে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার সুপারিশ করলেন। প্রধান উজির এবং আলেম সমাজ হযরত মনছুর হিল্লাজের কারামাতকে যাদুবিদ্যা বলে খলিফা এবং জনসাধারণের মধ্যে মিথ্যা প্রচারণা চালান। ফলে, নানারকম অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খলীফা হযরত মনছুর হিল্লাজকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার নির্দেশ দেন। হযরত মনছুর হিল্লাজকে কারাগার হতে বের করে আনার আদেশ শুনে কালবিলম্ব না করে তিনি কারাগারের বাহিরে চলে আসেন। কেননা তিনি স্পষ্টভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন যে, এবারে আর কারাগার বদল নয়, এবার পার্থিব জীবন ও দুনিয়ার বদল, এ বদল চিরদিনের জন্য। তাঁর চেহারার দীপ্ত আভা দেখে মনে হচ্ছিল তিনি যেন কোন শুভ সংবাদ শুনে যাত্রা করছেন। বাগদাদের দজলা নদীর তীরে শূলদন্ড স্থাপিত হয়েছিল। মুহূর্তের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডের খবর দেশব্যাপি ছড়িয়ে পড়লে বাদশাহ ও প্রধান উজির অতিশয় চিন্তিত হয়ে পড়লেন। কেননা হযরত মনছুর হিল্লাজের দুনিয়াব্যাপি খ্যাতি ছিল। এছাড়া লক্ষাধিক মুরিদ ও তখনও বর্তমান ছিল। তাই সরকারি পুলিশ দ্বারা বিরাট এলাকাটি মিশ্চিদ্র পাহারার ব্যবস্তা করা হল। যাতে কোন প্রানী সে এলাকায় প্রবেশ করার সুযোগ না পায়। অপরদিকে কারাগার হতে বের করার সাথে সাথে অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাকে চিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা গ্রহন করে মুরিদবৃন্দ। কিন্তু খলীফার প্রধান উজিরের পরিকল্পনা মোতাবেক মনছুর হিল্লাজকে রাতের অন্ধকারে ভিন্নপথে বধ্যভূমিতে শূলদন্ড দেওয়ার জন্য নিয়ে যাত্রা হয়। মুরিদগণ এ ব্যর্থতার শোকে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে ক্রন্দন করতে থাকেন। শুদু তাই নয়, হুজুরের চির শুত্রুগন সরকারের এমন কঠোর সিদ্ধান্তে গভীর নুঃখবোধ করেন। চাবুক মারার পরেই শুরু হল শূলে চড়ানোর পালা। পূর্ব প্রস্ততি সম্পন্ন। কোতোয়াল তলোয়ার হাতে এগিয়ে এসে উজিরকে খুশী করার মানসে হযরত মনছুর হিল্লাজের একটি হাত কেটে ফেলল। হযরত মনছুর হিল্লাজ সচেতন অথচ নির্বাক। পর্বতের মত অটল দাঁড়িয়ে রইলেন। মুখে উচ্চারিত হচ্ছে  আনাল হক। এ অবস্তা দেখে বর্বর কোতোয়াল ২য় হাতটিও কেটে ফেলল। একে একে দুটি পাও কেটে ফেলা হল। নির্বিকার হযরত মনছুর হিল্লাজ উহ! আহ শব্দ পর্যন্ত উচ্চারণ করলেন না। ক্রোধোম্মুক্ত কোতোয়াল এবার শিরচ্চেদ করার পরিকল্পনা গ্রহন করল। এবারে হযরত মনছুর হিল্লাজকে শূলদন্ডে চড়ানো হল। একখানা কাষ্ঠফলক তাঁর গ্রীবাদেশে পতিত হবার সাথে সাথে দেহ থেকে পবিত্র মস্তক বিচ্ছিন্ন হয়ে দূরে ছিটকে পড়লো। মহান আধ্যাত্মিক সাধক শাহাদাতের অমীও শুধা পান করলেন।
মহান আল্লাহর কুদরতের কি অপার মহিমা! শাহাদাতের পরেই তাঁর কারামত প্রকাশ পেতে লাগল। এমনকি তাঁর পবিত্র দেহ হতে প্রবাহিত রক্ত কণিকা হতেও ঐ আনাল হক উচ্চারিত হতে লাগলো। হক, হক, আনাল হক। মহান স্রষ্টার প্রিওবন্ধু হযরত মনছুর হিল্লাজের এ ধরণের বিস্ময়কর কারামত প্রত্যক্ষ করে উপস্থিত জনতা সরকারি আমলা, ও এলমে মারিফাত সম্পর্কে অজ্ঞ শরিয়তি আলামগন বিস্মিত ও হতবাক হয়ে গেলেন। দর্শকরা ভিতসন্তস্থ হয়ে চারদিকে ছুটাছুটি করতে লাগলো এবং মুখে উচ্চারিত সোবহানাল্লাহ ধ্বনি আকাশ বাতাস প্রকম্পিত করে তুললো। আনাল হক ধ্বনি বন্ধ করার লক্ষ্য আলেম ও সরকারি আমলারা ঐক্যমত হয়ে তাঁর দেহ, মস্তক, জমাট রক্ত স্তূপীকৃত করে জ্বালিয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে পুড়িয়ে ফেলল। হক বা সত্য কখনো ধ্বংস করা যায়না। এটা সর্বদা জাগ্রত। দেহপোড়া ভম্ম হতেও ঐ গগনবিদারী আনাল হক ধ্বনি উঠতে লাগল। এ দেখে সকলেই স্তম্বিত, বাকরুধ্ব ও বিবেকহীন হয়ে পড়লো। অগত্যা স্থির হল ভম্ম রাশি দজলা নদীতে নিক্ষেপ করে বিপদ দূর করা হোক। কিন্তু যতোই তারা বিপদ দুর করতে সচেস্টা হোল, ততোই  মারাত্মক বিপদ তাদের ঘিরে ধরলো। আল্লাহর অলীর (বন্ধু) সাথে বেয়াদবী আল্লাহ্‌ তালা কখনো বরদাশত করেন না। দেহ পোড়া ভম্ম দজলা নদীতে নিক্ষেপ করার সাথে সাথে পূর্বের চেয়েও গুরুগম্ভীর ধ্বনি উঠলো আনাল হক আনাল হক। শুধুই কি ধ্বনি হৃদয় কাঁপানো আওয়াজ, মোদিনী প্রকম্পিত নিনাদ। মুহূর্তের মধ্যে শান্তভাবে প্রবাহিত পানি হঠাত বিক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো। বান ডেকে দজলা নদীর অতি গভীরের পানি নু,কূল ভাসিয়ে দ্রুতগতীতে জনপদে , গ্রাম থেকে গ্রামে, মাঠে-ময়দানের দিকে ধাবিত হতে লাগলো। দজলার ক্ষিপ্ত প্লাবিত পানি জনতাকে তাড়িয়ে যাচ্ছে। স্রতধারা পা বেয়ে হাটু পর্যন্ত উঠে গেলো, পানির উচ্চতা ক্রমবর্দমান হয়ে এগুচ্ছে কমার কোনো লক্ষণ নেই। হযরত নূহ আলাইহিস সালামের সময়কার প্লাবনের কথা প্রত্যক্ষ করছে। ভীত সন্ত্রস্ত মানুষ গন্তব্যস্থলের ঠিকানায় ছুটছেতো ছুটছে। দজলা নদীর পানি তাদেরকে আনাল হক আনালহক বলে যেন পেছনে হতে তাড়িয়ে নিচ্ছে। দজলার পানির প্রতি বিন্দু হতেই আনাল হক আওয়াজ উঠতে থাকে। জনতা-দৌড়িয়ে বাড়িতে পৌছার পূর্বেই ঘর বাড়ি প্লাবিত হয়ে গেছে। দাঁড়ানোর স্থান পর্যন্ত নেই। গৃহহারা আশ্রয়হীন লক্ষ লক্ষ জনতা অবশেষে হ্যামিলন শহরের ইঁদুরের মতো পানিতে ডুবে মরার দুশ্চিন্তায় দিশেহারা। ডুবুডুবু পানির মধ্যে দাঁড়িয়ে কাকুতি-মিনতি, কান্নাকাটি করে বিপদমুক্ত হবার জন্য আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানাল বিপদগ্রস্ত জনতা। চৈতন্যেদয় হলো উপস্তিত আলেম সরকারি আমলাদের। উদ্ভুত পরিস্তিতির ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করে তারা হযরত মনছুর হিল্লাজ কত বড় ঙানী উচ্চ মার্গের সাধক ও যুগশ্রেস্ট অলিয়ে কামেল এবং তাঁর স্তান আল্লাহর নিকট কতো ঊরদে তা হৃদয়ঙ্গম করতে সমর্থ হল। তাঁর সাথে বেয়াদবি, শূলে চড়ানো, অত্যাচার-নির্যাতন পাপের কারনে দেশের মানুষের এ দুরবস্থা। প্রকৃত খদাপ্রেমিক অলি-আল্লাহ্‌ নিজের মৃত্যু সম্পর্কে আগেই অবগত হয়ে থাকেন। হযরত মনছুর হিল্লাজও তাঁর মৃত্যুর ঘটনাবলী মৃত্যুর পরে দেশ ও জাতির জীবনে যে দুরযুগ নেমে আসবে সে ঘটনা এবং দজলা নদীবক্ষে তাঁর দেহ ভম্ম ফেলে দিলে কি ভয়াবহ পরিনতি নেমে আসবে, তা তিনি আগেই অবহিত হয়েছিলেন এবং এর থেকে বাঁচার উপায়ও আল্লাহর তাআলার পক্ষ হতে তাকে ঙাত করা হয়। তাইতো তিনি একান্ত বিশ্বাসী ও অনুগত জনৈক মুরিদকে সে বিষয়ে আগেই বলে দিয়েছিলেন। দজলা নদীর বিক্ষিপ্ত প্লাবনের অবস্তা দেখে সেই মুরিদের পীরের উপদেশের কথা স্মরণ হল। উপায় তো তাঁর জানা। মুরিদ তৎক্ষণাৎ দৌড়ে গিয়ে হযরত মনছুর হিল্লাজের ব্যবহৃত একটি কম্বল এনে দজলার উৎক্ষিপ্ত পানিতে নিক্ষেপ করলো। এক আশ্চারজ ব্যাপার!!! কম্বল নিক্ষেপ করার সাথে সাথে দজলার পানি শান্ত হল। জনপদ থেকে পানি সরে নদীর দিকে যেতে থাকলো। অশান্ত দজলা আগের মত শান্ত হয়ে গেল। নদীর এতসব বিবর্তন সত্ত্বেও দেহভম্মের কোন পরিবর্তন হল না। যেরূপ ভম্ম সে রূপই রয়ে গেল। সকল ভম্ম একত্রিত হয়ে একস্থানে স্তপিক্রিত হল, একটি ভাসমান মাথার আকৃতি ধারন করে যথাস্তানে অবস্থান করে জলতরঙ্গের সাথে হেলে দুলে খেলা করতে লাগলো। তখনও ঐ ভম্মরাশি থেকে আনাল হক আনাল হক ধ্বনি উচ্চারিত হয়ে চারদিকে মুখরিত করে তুললো। উপস্তিত ঙানি-গুণী ব্যাক্তিদের সিদ্দান্ত অনুযায়ী ভম্মরাশি সসম্মানে তুলে এনে যথাযথ শ্রদ্ধার সাথে একটি নির্দিষ্ট স্তানে দাফন করা হয়। আল্লাহর কি অপার মহিমা !! হযরত মনছুর হিল্লাজের ভম্মরাশির দাফন সমাধা করার পর সে স্থান হতে আর আনাল হক ধ্বনি উঠলো না।

গায়েবানা জানাযা জায়েয কি না ???




শরিয়তের দৃষ্টিতে জানাযার নামায আদায় করা ফরজে কিফায়া। কোনো এলাকায় যদি কাউকে জানাযার নামায ছাড়া দাফন করে দেওয়া হয় তাহলে ঐ এলাকার সবাই গুনাহগার হবে। জানাযার নামায শুদ্ধ হওয়ার জন্য বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। যেমনঃ-
১। মৃত ব্যক্তিকে অবশ্যই মুসলমান হতে হবে। কেননা কোনো অমুসলিম, কাফের, নাস্তিক, মুরতাদের জানাযার নামায পড়া জায়েয নয়।
২। ঐ ব্যক্তিকে জীবিত জন্মগ্রহণ করতে হবে। কেননা মৃত নবজাতক বা মৃত ভ্রুনের জানাযার নামায পড়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
৩। মৃত ব্যক্তির শরীর ও কাপড় প্রকাশ্য ও অপ্রকাশ্য সব ধরনের নাপাকি থেকে পবিত্র হতে হবে। সে পবিত্রতা গোসলের দ্বারা হোক বা তায়াম্মুমের দ্বারা হোক।
৪। মৃতের সতর আবৃত থাকতে হবে। অন্যথায় জানাযার নামায সহিহ হবে না।
৫। মৃতের লাশ ইমাম ও মুক্তাদিগনের সামনে থাকতে হবে। পাশে বা পিছনে থাকলে বা একেবারে অনুপস্তিত থাকলে জানাযা শুদ্ধ হবে না।
৬। মৃতের লাশ মাটিতে বা খাটিয়ার ওপর রাখতে হবে। কোনো ওজর ছাড়া মৃতের লাশ যানবাহনের ওপর বা মানুষের কাঁধের ওপর রেখে জানাযার নামায আদায় করলে তা শুদ্ধ হবে না।
৭। মৃতের লাশ অবশ্যই জানাযা স্থলে উপস্তিত থাকতে হবে। অনুপস্তিত লাশের ওপর জানাযা অর্থাৎ গায়েবানা জানাযা পড়া জায়েয নয়। 

সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে, আমাদের সমাজে যারা রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে বা সহিংসতায় মারা যান, কর্মসুচি দিয়ে তাদের গায়েবানা জানাযা পড়া হয়।
হানাফী, মালিকী মাযহাবের সব ফকিহ ও হাম্বলী মাযহাবের ফকিহদের একাংশের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হল লাশ অনুপস্তিত রেখে গায়েবানা জানাযা জায়েয নয়। কেননা সাহাবায়ে কেরানের যুগের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায় যে, সে যুগে গায়েবানা জানাযা পড়ার কনো প্রচলন ছিল না। অথচ সে যুগেও বড় বড় সাহাবি দূর-দূরান্তে ইন্তেকাল করেছিলেন; কিন্তু তাদের গায়েবানা জানাযা পড়া হয়নি। যেমন বীরে মাঊনার ঘটনায় সত্তরজন কারী আলেম সাহাবীর শাহাদাতের খবর জেনেও নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গায়েবানা জানাযা পড়েননি। এমনকি স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইন্তেকালের পরও কোথাও কোনো সাহাবী এমনকি মক্কা শরিফ যা হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্মস্তান সেখানেও কোনো গায়েবানা জানাযা পড়া হয়নি। আর নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কোনো কাজ ব্যাপকভাবে বর্জন করা তা বর্জননিও হওয়ার প্রমান।
হানাফি, মালেকি ও হাম্বলি ঊলামায়ে কেরামদের মতে জানাযার নামাযে মৃত ব্যাক্তি সামনে থাকা জরুরী নতুবা গায়েবানা জানাযা পড়া যাবেনা আর গায়েবানা জানাযা সুন্নাহসম্মত নয়।

Thursday, March 12, 2015

সাহাবীদের যামানায় মাযহাব ছিলঃ

সাহাবীদের যামানায় মাযহাব ছিলঃ
++++++++++++++++++
১/ ইবনু তাইমিয়াহ এর কিতাব থেকে সরাসরি প্রমাণঃ
______________________________
ওয়াহাবী, লা মাযহাবী মানে মাযহাব নিয়ে তামাশা, টিটকারী ও অস্বীকারকারী ফেতনাবাযদের ইমাম, তাদের শায়েখুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়্যাহ স্বীকার করেছেন, সাহাবায়ে কেরামের যামানায় মাযহাব ছিল। তিনি তাঁর কিতাবে সাহাবাদের কথা বলতে গিয়ে “মাযহাব” শব্দটি স্বয়ং উল্লেখ করেছেন।
ইবনু তাইমিয়্যাহ বলেন,
কোর’আনে কারীমের কোন একটি আয়াতের তাফসীরের ব্যাপারে যদি সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীগণ এবং ইমামগণের কোন কাওল বা বানী থাকে, আর অন্য কোন দল যদি তাদের নিজেদের মাযহাবের পক্ষে অন্য কোন কাওল বা কথা দ্বারা ঐ আয়াতের তাফসীর করে, যা সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেয়ীগণের মাযহাবের বিরুদ্ধে চলে যায়, তবে তা হবে বেদ’আতীদের কাজ।
তিনি তাঁর কিতাবে “মাযাহিবুস সাহাবাহ” অর্থাৎ সরাসরি “মাযাহিব” শব্দ উল্লেখ করেছেন। মাযাহিব বহুবচন। একবচনে মাযহাব। অর্থাৎ তিনি প্রমাণ করেছেন, সাহাবায়ে কেরামের যুগে ও মাযহাব বিদ্যমান ছিল।
রেফারেন্সঃ
মাজমু উল ফাতাওয়াঃ খন্ড ১৩
___________________
ঠিক তেমনি তিনি ফেকহী মাস’আলার ক্ষেত্রে ও সাহাবীদের মাযহাব রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন। এখানে ও তিনি সরাসরি ‘মাযহাব’ শব্দটি উল্লেখ করেছেন।
রেফারেন্সঃ
মাজমু উল ফাতাওয়াঃ খন্ড৩২
নিকাহ অধ্যায়।
++++++++++++++++++++++
২/ আলী বিন মাদীনী রাহিমাহুল্লাহ এর কিতাব থেকে প্রমাণঃ
____________________________________
আলী বিন মাদীনী রাহিমাহুল্লাহ হচ্ছেন, বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ এর অন্যতম শ্রেষ্ঠ উস্তাদ। তিনি তাঁর কিতাবে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে প্রমাণ করেছেন, সাহাবায়ে কেরামের যুগে মাযহাব বিদ্যমান ছিল।
আলী বিন মাদীনী বলেন,
সাহাবায়ে কেরামের মধ্যে মাত্র তিনজন সাহাবী ছিলেন, যাদের মাযহাবকে বাকী সকলে অনুসরণ করতেন।
যে তিনজন সাহাবীর মাযহাবকে অনুসরণ করা হত, তারা হচ্ছেন,
১/ আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু
২/যায়েদ বিন সাবিত রাদিয়াল্লাহু আনহু
৩/আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু।
আলী বিন মাদীনী বলেছেন,
এই তিনজন সাহাবীর প্রত্যেকের ছিলেন অনুসারীগণ। একেক দল সাহাবায়ে কেরাম একেক সাহাবীর মাযহাব অনুসরণ করতেন এবং ঐ সাহাবীর ফতোয়া মেনে চলতেন এবং একই ফতোয়া দিয়ে অন্যদেরকে ফতোয়া দিতেন।
রেফারেন্সঃ
কিতাবুল ইলাল
পৃষ্ঠা : ১০৭-১৩৫
____________________________
তাহলে কী দাঁড়ালো?
সাহাবাদের তিনটি মাযহাব প্রমাণিত হলোঃ
১/হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রা) এর মাযহাবঃসাহাবাগণের মধ্য থেকে এই মাযহাবের আলাদা অনুসারী ছিলেন। তাঁরা আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রা) এর মাযহাবকে ফলো করতেন এবং সে অনুসারে ফতোয়া দিতেন। এ মাযহাব যারা অনুসরণ করতেন তারা হলেন নিন্মোক্ত ছয়জন।
আলকামাহ (মৃত্যু : ৬২ হিজরী),
আসওয়াদ (মৃত্যু : ৭৫ হিজরী),
মাসরূক (মৃত্যু : ৬২ হিজরী),
আবীদাহ (মৃত্যু : ৭২ হিজরী),
আমর ইবনে শারাহবীল (মৃত্যু : ৬৩ হিজরী) ও
হারিস ইবনে কাইস (মৃত্যু : ৩৬ হিজরী)।
লক্ষ্য করুন,
এখানে আরেক বিষয় প্রমাণিত হয়ে গেল, হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঊদ (রা) এর অনুসারীগণ তাঁর তাকলীদ করতেন। অর্থাৎ কোন প্রকার যাচাই বাচাই না করে সরাসরি তাঁর ফতোয়া তাঁরা মেনে নিতেন।
২/ হযরত যায়েদ বিন সাবিত (রা) এর মাযহাবঃ যায়েদ বিন সাবিত (রা) এর এই মাযহাবের আলাদা অনুসারী ছিলেন। তারা এই মাযহাবকে ফলো করতেন এবং সে অনুসারে ফতোয়া প্রদান করতেন। যায়েদ বিন ছাবিত রা. এর যে শাগরিদগণ তাঁর মাযহাবের অনুসারী ছিলেন এবং তাঁর মত ও সিদ্ধান্তসমূহ সংরক্ষণ ও প্রচার প্রসারে মগ্ন ছিলেন তাঁরা বারো জন।
তাদের নাম উল্লেখ করার পর ইবনুল মাদীনী রাহ. লেখেন, এই বারো মনীষী ও তাদের মাযহাবের বিষয়ে সবচেয়ে বিজ্ঞ ছিলেন
ইবনে শিহাব যুহরী (৫৮-১২৪ হিজরী),
ইয়াহইয়া ইবনে সায়ীদ আনসারী (মৃত্যু : ১৪৩ হিজরী),
আবুয যিনাদ (৬৫-১৩১ হিজরী),
আবু বকর ইবনে হাযম (মৃত্যু ১২০ হিজরী)।
লক্ষ্য করুন,
এখানে ও প্রমাণিত হয়ে গেল, যায়েদ বিন সাবিত (রা) এর অনুসারীগণ তাঁর তাকলীদ করতেন। অর্থাৎ কোন প্রকার যাচাই বাচাই না করে সরাসরি তাঁর ফতোয়া মেনে নিতেন।
৩/হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা) এর মাযহাব। এই মাযহাবের ও একইভাবে আলাদা অনুসারী ছিলেন। তাঁরা শুধু আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা) এর মাযহাবকে ফলো করতেন এবং সে অনুসারে ফতোয়া দিতেন।হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা.এর যে শাগরিদগণ তার মত ও সিদ্ধান্তসমূহ সংরক্ষণ ও প্রচারে মগ্ন ছিলেন, সে অনুযায়ী ফতওয়া দিতেন এবং তার অনুসরণ করতেন, তাঁরা ছয়জন।
লক্ষ্য করুন,
এখানে ও প্রমাণিত হয়ে গেল, হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা) এর অনুসারীগণ তাঁর তাকলীদ করতেন। অর্থাৎ কোন প্রকার যাচাই বাচাই না করে তারা সরাসরি তাঁর ফতোয়া মেনে নিতেন।
এ লেখাটি পড়ার পর যে বিষয়টি পরিস্কার হয়ে গেলোঃ
_______________________________
মাযহাব নতুন উদ্ভাবিত কোন বিষয় নয়। সাহাবীগণের যামানায় মাযহাব বিদ্যমান ছিলো। গোটা কয়েক সাহাবী ফতোয়া প্রদান করতেন আর বাকী সকলে তাদের ফতোয়া অনুসরণ করতেন। নির্দ্বিধায় তা মেনে নিতেন।
সুতরাং—
১/কেউ যদি মাযহাব অস্বীকার করে, সে প্রকারান্তরে সাহাবী ও তাবেয়ীগণের পথ ও মতকে অস্বীকার করলো।
২/ কেউ যদি মাযহাব নিয়ে টিটিকারী, টাট্টা, উপহাস করে, তবে সে প্রকারান্তরে সাহাবা ও তাবেয়ীগণের পথ ও মত নিয়ে টাট্টা মশকরা করলো।
৩/ মাযহাব নিয়ে এমন বেয়াদবীপূর্ণ কথা যে বলে, তাকে ভালভাবে চিনে রাখা প্রয়োজন। কারণ এই লোক সাহাবাদের সম্পর্কে আপনার আমার মনে শয়তানী ওয়াসওয়াসা সৃষ্টি করতে পারে। আমাদেরকে সঠিক পথ থেকে ছিটকে দিতে পারে।

Thursday, March 5, 2015

হুজাফাহ (রাঃ) এর ঈমানী দৃঢ়তা ।


.
.
খলীফা হযরত ওমর (রাঃ) এর খেলাফতকাল। তিনি ১৯
হিজরী সনে রোমানদের
বিরুদ্ধে একটি বাহিনী পাঠালেন। সেই
বাহিনীতে ছিলেন সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ
ইববে হুজাফাহ
আস সাহমী (রাঃ)। রোমান সম্রাট প্রায়ই রাসূল (সঃ)
এর
সাহাবীদের ঈমান ও বীরত্বের কথা শুনতেন। তাই
তিনি নির্দেশ দিয়েছিলেন কোন মুসলিম সৈনিক
জীবিত
অবস্থায় বন্দী হলে যেন তার
কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
আল্লাহর ইচ্ছায় হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হুজাফাহ
(রাঃ)কে রোমানরা বন্দী করে এবং সম্রাটের
সামনে উপস্থিত
করে।
.
রোমান সম্রাট হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হুজাফাহ
(রাঃ)কে বললেন, ”আমি প্রস্তাব করছি তুমি খ্রিষ্টান
ধর্ম
গ্রহণ কর। যদি তা কর, তাহলে তোমাকে মুক্তি দেব
এবং তোমাকে সম্মানিত করবো।”
বন্দী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হুজাফাহ (রাঃ) খুব
দৃঢ়তার
সাথে বললেন, ”আফসোস! যেদিকে আপনি আহবান
জানাচ্ছেন
তার থেকে হাজার বার মৃত্যু আমার অধিক প্রিয়।”
তখন রোমান সম্রাট বললেন,
”আমি মনে করি তুমি একজন
বুদ্ধিমান লোক। আমার প্রস্তাব
মেনে নিলে আমি তোমাকে আমার ক্ষমতার অংশীদার
বানাবো, আমার কন্যা তোমার হাতে সমর্পণ
করবো এবং আমার এ সাম্রাজ্য তোমাকে ভাগ
করে দেব।”
বেড়ী পরিহিত বন্দী হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হুজাফাহ
(রাঃ)
মৃদু হেসে বললেন, ”আল্লাহর কসম! আপনার
গোটা সাম্রাজ্য
এবং সেই সাথে আরবদের অধিকারে যা কিছু আছে সবই
যদি আমাকে দেওয়া হয়, আর
বিনিময়ে আমাকে বলা হয় এক
পলকের জন্য মুহাম্মদের (সঃ) দ্বীন আমি পরিত্যাগ
করি,
আমি তা করবো না।”
রোমান সম্রাট বললেন,
”তাহলে আমি তোমাকে হত্যা করবো।”
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হুজাফাহ (রাঃ) দৃঢ়তার
সাথে বললেন,
”আপনার যা খুশী করতে পারেন।”
এরপর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হুজাফাহ
(রাঃ)কে শূলকাষ্ঠে হাত পা বেঁধে ঝুলিয়ে খ্রিষ্টধর্ম
গ্রহণ
করতে বলা হল। এতে রাজী না হওয়ায় বিশাল এক
কড়াই
এনে তাতে তেল ফুটানো হল। টগবগে সেই উত্তপ্ত
তেলে ফেলা হল একজন মুসলিম বন্দীকে। ফেলার
সাথে সাথে দেহের গোশত ছিন্ন ভিন্ন হয়ে হাড় পৃথক
হয়ে গেল।
.
সেটা দেখিয়ে এবার হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হুজাফাহ
(রাঃ)কে আবারও খ্রিষ্টান ধর্ম গ্রহণের আহবান
জানানো হল। এবারও তিনি দৃঢ়ভাবে তা প্রত্যাখ্যান
করেন।
সম্রাটের নির্দেশে তাকে উত্তপ্ত কড়াইয়ের নিকট
আনা হয়।
এতে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হুজাফাহ (রাঃ) এর
চোখে ।
পানি চলে আসে।
এতে তার মন পরিবর্তন হয়েছে মনে করে সম্রাট
তাকে আবারও খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করতে বললেন। কিন্তু
তিনি তা আবারও প্রত্যাখ্যান করেন। তাহলে কাঁদছ
কেন
জিজ্ঞেস করলে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে হুজাফাহ (রাঃ)
বলেন, “আমি একথা চিন্তা করে কাঁদছি যে, এখনই
আমাকে এই
কড়াইয়ের মধ্যে নিক্ষেপ করা হবে এবং আমি শেষ
হয়ে যাব।
অথচ আমার বাসনা, আমার দেহের পশমের সমসংখ্যক
জীবন
যদি আমার হতো এবং সবগুলিই আল্লাহর রাস্তায় এই
কড়াইয়ের মধ্যে বিলিয়ে দিতে পারতাম।” সত্যিই
আল্লাহর
রাসূল (সঃ) এর সাহাবীদের ঈমান ছিল পর্বতের
মতো অটল।
আল্লাহু আকবার!
.
মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে রাসূল (সঃ) এর
সাহাবীদের
মতো সুদৃঢ় ঈমান দান করুন। আমীন।