Saturday, October 20, 2018

সর্ব প্রথম আল্লাহ কি সৃষ্টি করেছেন??

তাখলিকে নূরে মোহাম্মাদী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কিত হাদিসটি তাসনীফ করেছেন হাফিজুল কবির,মুহাদ্দিস মশহুর,
ইমাম আবদুর রাজ্জাক বিন হুম্মাম বিন নাফে আল সানআনি (রহঃ).যিনি ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহঃ) এর উস্তাদ ,, ইমাম বুখারীর (রহঃ) উস্তাদের উস্তাদ..তাঁহার এই মুসান্নাফ 
১১০০ আগে লেখা হয়েছে.সুবহানাল্লাহ ..
নবীজির নূর হওয়ার হাদিস নং-১৮
প্রকাশনা- বৈরুত ,লেবানন..
হাদিসে নূর এর সনদ পর্যালোচনা::
উক্ত সহীহ হাদিসের সনদের রাবীগণ বিশ্বস্ত এবং সিহা সিত্তার কিতাবে তাঁহাদের বর্ণিত অনেক হাদিস রয়েছে..বিশেষ করে জলিল কদর তাবেয়ী হজরত মোহাম্মদ ইবনে মোনকাদির (রহঃ) তাঁহার উস্তাদ সাহাবী হজরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ (রাদি.) থেকে এই হাদিস বর্ণনা করেন.. তাবে তাবেয়ী হজরত আবু উরওয়া মুয়াম্মার বিন রাশিদ (রহঃ) বিশ্বস্ত..তিনি তাঁহার উস্তাদ হজরত ইবনে মোনকাদির (রহঃ) থেকে এবং মুহাদ্দিস ইমাম আব্দুর রাজ্জাক (রহঃ) তাঁহার উস্তাদ হজরত মুয়াম্মার (রাদি.) এই সহীহ হাদিস বর্ণনা করেন..
বিখ্যাত ছাহাবী হজরত জাবির বিন আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত..
হাদীস শরীফ –
ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮ ﺭﺻﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ ﻗﻠﺖ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺻﻠﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﺑﺎﺑﻲ ﺍﻧﺖ ﻭ ﺍﻣﻲ ﺍﺧﺒﺮﻧﻲ ﻋﻦ ﺍﻭﻝ ﺷﻴﻲﺀ ﺧﻠﻖ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﻗﺒﻞ ﺍﻻﺷﻴﺎﺀ ﻗﺎﻝ ﻳﺎ ﺟﺎﺑﺮ ﺍﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﻗﺪ ﺧﻠﻖ ﻗﺒﻞ ﺍﻻﺷﻴﺎﺀ ﻧﻮﺭ ﻧﺒﻴﻚ ﻣﻦ ﻧﻮﺭﻩ ﻓﺠﻌﻞ ﺫﺍﻟﻚ ﺍﻟﻨﻮﺭ ﻳﺪﻭﺭ ﺑﺎﻟﻘﺪﺭﺓ ﺣﻴﺚ ﺷﺎﺀ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻲ ﻭﻟﻢ ﻳﻜﻦ ﻓﻲ ﺫﺍﻟﻚ ﺍﻟﻮﻗﺖ ﻟﻮﺡ ﻭﻻ ﻗﻠﻢ ﻭﻻ ﺟﺘﺔ ﻭﻻ ﻧﺎﺭ ﻭﻻ ﻣﻠﻚ ﻭﻻ ﺳﻤﺎﺀ ﻭﻻ ﺍﺭﺽ ﻭﻻ ﺷﻤﺲ ﻭﻻ ﻗﻤﺮ ﻭﻻ ﺟﻨﻲ ﻭﻻ ﺍﻧﺴﻲ …. ﺍﻟﻲ ﺍﺧﺮ
অর্থ: হযরত জাবের রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্নিত, তিনি বলেন, আমি হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার পিতা মাতা আপনার জন্য কুরবানি হোক,
আপনি আমাকে জানিয়ে দিন যে, আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম কোন জিনিস সৃষ্টি করেছেন? তিনি বলেন, হে জাবির রদ্বিয়াল্লাহু আনহু! নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক সর্ব প্রথম সব কিছুর পূর্বে আপনার নবীর নূর মুবারক সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর সেই নূর মুবারক আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা অনুযায়ী কুদরতের মাঝে ঘুরছিলো।আর সে সময় লওহো, ক্বলম, জান্নাত, জাহান্নাম,
ফেরেশতা, আসমান, জমিন, চন্দ্র, সূর্য,
মানুষ ও জ্বিন কিছুই ছিলো না। (“সংক্ষেপিত)
এই হাদীসটি অনেক বড় তাই সংক্ষেপ করা হয়েছে.
এই হাদীসটি সহ নবীজির নূর হওয়ার অন্যান্য রেওয়ায়েত এসেছে.
# 1.দালায়েলুন নবুওয়ত/মুহাদ্দিস কবির, ইমাম হাফেজ আবু বকর বায়হাকী শাফেয়ী (রহঃ)
# 2.মুসান্নাফ আবদুর রাজ্জাক (রহঃ)
# 3.মিরকাত শরহে মিশকাত কৃত মোল্লা আলী কারী হানাফী (রহঃ)
# 4.দাকাইকুল আখবার কৃত মুজাদ্দিদে দ্বীন,হুজ্জাতুল ইসলাম , ইমাম আবু হামিদ গাজ্জালী শাফেয়ী (রহঃ)
# 5.শরহে শামায়েলে তিরমিযী কৃত শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী শাফেয়ী (রহঃ)
# 6.ফতহুল বারী শরহে সহীহ বুখারী কৃত শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী শাফেয়ী (রহঃ)
# 7.দালায়েলুন নবুওয়াত ১৩/৬৩
# 8 মাওয়াহেবুল্লাদুন্নিয়া,,ইমাম কুস্তুলানী (রহঃ) ১/৯
# 9 মাদারেজুন নবুওয়াত ২/২
# 10. যুরকানী শরীফ ১/৪৬
# 11.তাফসীরে রুহুল মায়ানী ১৭/১০৫
# 12.সীরাতে হালবীয়া ১/৩০
# 13. নি’ মাতুল কুবরা,,ইমাম ইবনে হাজার হায়তামী মক্কী (রহঃ)
# 14.হাদ্বীকায়ে নাদীয়া আল্লামা আব্দুল গনি নাবলুসি (রহঃ) ২/৩৭৫
# 15. দাইলামী শরীফ ২/১৯১
# 16.মকতুবাত শরীফ ৩ খন্ড ১০০ নং মকতুব
# 17.মওজুয়াতুল কবীর ৮৩ পৃ
# 18 রুহুল বয়ান শরীফ সহ প্রভৃতি নির্ভরযোগ্য দ্বীনি কিতাবাদীতে

Wednesday, October 3, 2018

মে'রাজ শরীফ ও আত্তাহিয়াতুর রহস্য

মে'রাজ শরীফ আমাদের প্রিয়নবী  হুজুর পোরনুর রহমতে আলম নুরে মুজাচ্ছম সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লামের অগণিত মুজেজা সমূহের মধ্য শ্রেষ্ঠতম আজিমুহসান ও আশর্যজনক  মুজেজা। এহেন মর্যদা ও সম্মান একমাত্র আমাদের প্রিয়নবী সাইয়োদুল মুরসালীন খাতামুন্নাবীঈন আলাইহিস সালাতু অয়াস সালামের জন্মোই নির্ধারিত ছিল। অন্ন্য কোন নবী রাসুলের ভাগ্য তা ঘটে নাই। বোখারি শরীফ, মুসলিম শরীফ এবং খাসায়েসে কুবরা, মাওয়াহেবে লাদুন্নীয়া, মাদারেজুন্নবুয়ত, অন্যান্য হাদিসের কিতাব সমূহে মে'রাজ শরীফের বর্ননা বিস্তারিত ও বিশদভাবে বর্ণিত আছে।

নবুয়তের দ্বাদশ বর্ষে রজব মাসের ২৭ রজনীতে হুযুরে আক্রাম-নুরে মুজাচ্ছাম সাল্লাল্লাহু আলাহি ওয়া সাল্লামের এহেন আজিমুশান অনুপম মর্যদা ও সম্মান মে'রাজ শরীফের  মাধ্যমে হাসিল হয়। অপরিসীম রহমত ও বরকতপূর্ন ঐ রজনীতে হুযুর সৈয়দে  আলম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম  হযরত উম্মে হানী বিনতে আবু তালেবের গৃহে আরাম করছিলেন। এমনি সময়  হঠাত জিবরাঈল  আলাইহিসালাম ৭০ হাজার ফেরেশতাসহ বেহেস্তি বাহন বোরাক নিয়ে হাজির হলেন। মাহবুবে খোদা মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিদ্রায় আরাম করছেন। হযরত জিবরাঈলের সঙ্গে হযরত মিকাঈল ও হযরত ইসরাফিল আলাইহিমুস সালাম ও আগমন করছেন। এবং প্রত্যেকের সঙ্গে ৭০ হাজার ফেরেশতা ছিল। হযরত জিবরাঈল আমীন অতিশয় আদবের সাতে মাহবুবে খোদা আলাইহিস সালামের কদম মোবারকে চুম্বন করলেন। এবং উনাকে জাগ্রত করলেন, আল্লাহর দাওয়াত পৌচালেন। অতপর জিবরাঈল আমিন অত্তান্ত দ্রুতগামী এক বেহেস্তি বাহন বোরাক হাজির করলেন।  এই বোরাক বেহেশতে হুজুর  পোরনুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লাম এর মহব্বতে কাঁদতে ছিল। জিবরাঈল আমিন ৭০ হাজার বোরাক দেখেছেন, প্রত্যেকটি হুজুর পাকের ইশক ও মহব্বতে ভিবর ছিল। হযরত জিবরাঈল আমিনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলো যে বোরাকটি উহা মাথা নিচু করে ক্রন্দন করছিল। জিবরাঈল আমিন জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি ক্রন্দন করছ কেন? বোরাক উত্তরে বলল অন্তরে এত টুকু আশা ও ভরসা নাই যে আল্লাহ পাকের প্রিয় হাবিব আমার পৃষ্ঠে আরোহন  করবেন। বোরাকের ক্রন্দন ও বিনম্র আবেদন আল্লাহ পাকের পছন্দ হল, এবং একে পছন্দ করে নেওয়ার জন্য জিবরাঈল আমিন এর প্রতি হুকুম হল।

যা হোক, বোরাকের পৃষ্ঠে হুজুর পোরনুর সাহেবে লাওলাক আলাইহিস সালাম যখন আরোহন করলেন, বোরাক তখন চঞ্চলতার সাথে লাফাতে ছিলেন। জিবরাঈল আমিন বোরাক কে সান্ত হতে আদেশ দিলেন, এবং বললেন তুমি কি অবগত আছ , তোমার পৃষ্ঠে কে আরোহন করছেন???? তিনি আল্লাহর হাবিব সাইয়োদুল মুরসালিন, এ কথা শ্রবন করে বোরাক শান্ত হয়। তার সর্বাং হতে ঘাম নির্গত হয়।  বোরাক উত্তরে বলে - আজ আমার সৌভাগ্যর জন্য আমি আনন্দে বিমোহিত।

অতঃপর হুজুর সারোয়ারে কায়েনাত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বোরাকে আরোহন করলেন, জিবরাঈল আমিন লাগাম ধরলেন, মিকাঈল ও লাগাম ধরলেন, ইসরাফিল জমিন কে শান্তনা দিলেন। হাজার হাজার ফেরেশতার সালাত ও সালামের ধ্বনিতে জমিন ও আসমান মুখরিত। মেরাজের রজনীতে যিনি আহবান করেছেন তিনি স্বয়ং নূর, যিনি আজিমুশান মেহমান, যিনি বোরাকে আরোহণকারী তিনিও নূর, বাহন-বোরাক নূর, ডাইনে ও বামে রেকাব ধারণকারী জিবরাঈল আমিন ও মিকাঈল নূর, এবং পিচু পিচু ইসরাফিল আলাইহিস সালাম সহ হাজার হাজার ফেরেশতা নূর। মোটকথা দুলহাও নূর, বরযাত্রীও নূর, শবে আসরা নুরে নুরানী হয়েছে।

অতঃপর, হুজুর সারোয়ারে কায়েনাত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অতিশয় সান-শওকতের সাথে মক্কা মোয়াজ্জামা বাইতুল্লাহ শরীফ হইতে বাইতুল মোকাদ্দাসের দিকে রওনা হলেন। হুযুরে আনোয়ার যে রাস্তা দিয়ে গমন করেন তা এবং চতুর্দিকে অপূর্ব নুরানী জ্যোতিতে জ্যোতির্ময় হয়ে রইল। হুযুরে আনোয়ার অল্প সময়ে তুর পর্বতে যেথায় হযরত মুসা আলাইহিস সালাম আল্লাহপাক জাল্লা শানুহুর সঙ্গে কালাম বিনিময় করেছিলেন, তথায় এবং বাইতুলহাম যেথায় হযরত ঈষা আলাইহিস সালাম জন্ম গ্রহন করেছিলেন তথায় আগমন করলেন। এ সমস্থ পবিত্রস্থানে হযরত জিবরাইল আমিনের আবেদনক্রমে  হুযুরে পাক সাহেবে লাওলাক আলাইহিস সালাম দুই দুই রাকাত করে নামাজ আদায় করলেন এবং এরূপে বাইতুল মোকাদ্দাস পৌঁছলেন।

বায়তুল মোকাদ্দাস মসজিদে আঁকসায় পর্ব হতে হুজুর সাইয়োদুল মুরসালিন ইমামুল আম্বিয়া সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লামের আগমন প্রতীক্ষায় তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য হযরত আদম আলাইহিস সালাম হতে হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম পর্যন্ত সমস্ত আম্বিয়া ও মুরসালিনগন সারিবদ্দ অবস্থায় অবস্থান করছেন। সামনে ইমামের জায়নামাজ খালি রয়েছে। প্রিয়নবী হযরত মাহবুবে খোদা  মোহাম্মদ মোস্থফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বোরাক হতে অবতরণ করে সবার সাথে মোলাকাত করলেন। জিবরাঈল আমিন পুর্ববর্তি সমস্ত আম্বিয়া ও মোরসালিনগনের সাথে সাইয়োদুল মুরসালিন এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন।

এ আজান শ্রবন পুর্বক সমস্ত ফেরেশতাগন মসজিদ পুর্ণ করে জমিন ও আকাশ পর্যন্ত সারিবদ্দ হয়ে দাড়িয়ে গেল। জিবরাঈল আমিন আলাইহিস সালাম তাকবীর পাঠ করলেন, সকলে কাতার সোজা করে দাঁড়িয়ে গেলেন। প্রথমে নবীগনের কাতার, তারপর ফেরেশতাদের কাতার এবং সকলের ইমাম হলেন আম্বিয়া ও মুরসালিনগনের বাদশা সাইয়োদুল মুরসালিন ইমামুল মুরসালিন হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। দু রাকাত নামাজ আদায় করলেন (সুবাহানাল্লাহ)। যে নামাজের মোয়াজ্জিন ফেরেশতাগনের সর্দার, ইমাম হলেন আম্বিয়া ও মুরসালীন গনের সর্দার, আর মুক্তাদী হলেন তামাম আম্বিয়া ও মুরসালীনগন ও সমস্ত আসমান ও জমিনের ফেরেশতাগন। অতএব  ঐ নামাজের ইসরার মর্যদা ও মরতবা সম্পর্কে ধারণা করার সাধ্য কার আছে????


বায়তুল মোকাদ্দাস মসজিদে আঁকসা হতে অবসর হওয়ার পর জিবরাইল আমীন আরজ করলেন ইয়া রাসুলল্লাহ, আসমানবাসি ফেরেস্তাগন আপনার অপেক্ষায় রয়েছেন। এখন আপনি উর্ধ জগতের দিকে তসরিপ নিয়ে চলুন। হুজুরে আনোয়ার আলাইহিস সালাম পুনরায় বোরাকে আরোহন করে উর্ধ জগতের সফর শুরু করলেন। এ সফরও আশর্যজনক ও রহস্যপুর্ন ছিল।ফেরেস্তাগনের সাথে আম্বিয়া আলাইহিস সালামগনও সালাত ও সালামে মুখরিত ছিলেন। হুজুর পোরনুর সারোয়ারে কায়েনাত সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিদ্যুৎ গতি সম্পন্ন বোরাক উর্ধগামি হতেছিল। তারপর প্রথম আকাশে পৌছিলে জিবরাইল আমীন আকাশের দরজায় আঘাত করলেন। দারোয়ান প্রশ্ন করল কে?? উত্তর হল আমি জিবরাইল। দারোয়ান জানতে চাইল তোমার সঙ্গে কে ??  উত্তরে জিবরাইল আমীন বললেন আমার সঙ্গে আল্লাহর মাহবুব মোহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম। দারোয়ান মারহাবা মারহাবা বলে দরজা খুলে দিল। তখন হুযুরে আনোয়ার প্রথম আকাশে মানব জাতির আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম এর সাথে মোলাকাত করলেন। আদি পিতা হযরত আদম আলাইহিস সালাম হুজুর পোরনুর আলাইহিস সালামকে সালাত ও সালাম সহ মারহাবা মারহাবা বলে স্বাগত জানালেন। তারপর হুযুরে পাক সাহেবে লাওলাক দ্বিতীয় আসমানে পৌছলেন। তথায় হুযুরে আনোয়ার আলাইহিস সালামকে হযরত ইয়াহহিয়া আলাইহিস সালাম ও হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উভয়ে সালাত ও সালাম সহকারে মোবারকবাদ জানালেন।



আত্তাহিয়াতু আসলে,আল্লাহর সাথে আমাদের মহানবী (সঃ) কথোপকথন একটা অংশ। যা আমাদের মহানবী (সঃ) ইসরাইল মিরাজ যাত্রার সময় হয়েছে মহান আল্লাহর সাথে! মহানবী (সঃ) যখন আল্লাহর সাথে কথোপকথন শুরু করে তখন আল্লাহকে আসসালামু আলাইকুম বলেননি!

তাহলে কি বলেছিল...?

কারন,আমরা মহান আল্লাহকে বলতে পারব না,আল্লাহ আপনার উপর শান্তি নাজিল হউক! কারন,আল্লাহ নিজেই একমাত্র পৃথিবীর সকল শান্তির এবং রহমতের উৎপত্তিস্থল!

মহানবী (সঃ) আল্লাহকে উদেশ্য করে বলেছিলেন:-

▪আত্তাহিইয়া-তু লিল্লা-হি ওয়াছ ছালাওয়া - তু ওয়াত্ ত্বাইয়িবা -তু

অর্থঃ- যাবতীয় সম্মান,যাবতীয় উপাসনা ও যাবতীয় পবিত্র বিষয় আল্লাহর জন্য।

উওরে মহান আল্লাহ বলেন:-

▪আসসালা-মু'আলায়কা আইয়ুহান্নাবিয়ু ওয়া রহমাতুল্লা-হি ওয়া-বারাকাতুহু।

অর্থঃ- হে নবী,আপনার উপরে শান্তি বর্ষিত হউক এবং আল্লাহর অনুগ্রহ ও সমৃদ্ধি সমূহ নাযিল হউক।

এতে মহানবী (সঃ) বলেন:-

▪আসসালা-মু-আলায়না ওয়া আলা ইবাদিল্লা-হিছছালেহীন।

অর্থ:- আল্লাহর সমৃদ্ধি শান্তি বর্ষিত হউক আমাদের উপরে ও আল্লাহর সৎকর্মশীল বান্দাগণের উপরে।

মহান আল্লাহ এবং মহানবী (সঃ) এই কথোপকথন শুনে ফেরেস্তারা বলেন:-

▪আশহাদু আল লা-ইলাহা ইলল্লালাহু ওয়া আশহাদুআন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসূলুহু।

অর্থ:- আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই এবং আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে,মুহাম্মাদ (সঃ) তার বান্দা ও রাসূল।
"সুবহানাল্লাহ 


Tuesday, September 18, 2018

হযরত আব্বাস আলমদার (রহঃ) এর মাজারে অলৌকিক পানি

কারবালা প্রান্তরে আহলে বায়েতের সদস্যগণ, নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, এমনকি দুধের শিশু পর্যন্ত পানির পিপাসায় ছটফট করছিলেন। ইয়াজিদের বাহিনী ইবনে জিয়াদের নেতৃত্বে ইমাম হুসাইন রাদ্বিয়াল্লাহু তা'লা আনহুর দলের লোকজনদের জন্য ফোরাতের পানি বন্ধ করে দিয়েছে। এক ফোটা পানিও যাতে আহলে বায়েত এবং নবী পরিবারের কেউ না পায় তার সব রকমের ব্যবস্থা করে রেখেছে হানাদার মুসলিম নামধারী নরাধমরা। রাসুল ﷺ এর আওলাদ, ইমাম হুসাইন (আলাইহিস সালাম ওয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এর নয়নের মনি শিশু আলী আজগরের জন্য পানি আনতে গিয়ে কারবালার প্রান্তরে কুখ্যাত এয়াজিদ বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শহীদ হলেন হযরত আব্বাস আলামদার রহঃ।
রাসূলে পাক (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াআলিহী ওয়াসাল্লাম) এর আওলাদের তাঁবুতে একফোঁটা পানিও নেই। কচি কচি শিশুরা পানির জন্য ছটফট করছে। পানি নেই, এমনকি পিপাসার্ত মায়েদের বুকের দুধও শুকিয়ে গেছে। শিশু আলী আজগর পানির পিপাসায় কাতরাচ্ছেন। কেউবা পিপাসার যন্ত্রণায় বেহুঁশ হয়ে পড়ছেন। এ করুণ দৃশ্য দেখে হযরত আব্বাস রহঃ আর বরদাশত করতে পারলেননা। পানির মশক হাতে নিয়ে দুর্বার গতিতে ছুটে চললেন তিনি। ইয়াজিদ বাহিনীকে ফাঁকি দিয়ে ফোরাত নদী থেকে পানি ভরে কাঁধে নিলেন। নিজে কিছুটা পানি পান করতে চেয়েও শিশু আজগরের তৃষ্ণার্ত চেহারা এবং ইমাম হুসাইন (আলাইহিস সালাম ওয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)'র তৃষ্ণার্ত চেহারা মনে পড়ায় হাতের পানি পান না করে ফেলে দিলেন। এমন সময় তাঁকে হঠাৎ করেই ঘিরে ফেলল জালিম ইয়াজিদের দল। তিনি ইয়াজিদের বূহ্য ভেদ করে কিছুদূর অগ্রসর হলে পেছন থেকে তাঁর উপর অনবরত তীর নিক্ষেপ করতে থাকে ইয়াজিদ বাহিনী। আরো কিছুদূর অগ্রসর হওয়ার পর এয়াজিদ বাহিনীর একজন হযরত আব্বাসের ডান হাত কেটে ফেলে। তিনি ঐ অবস্থায় মশক বাঁচিয়ে বাম হাতে নিলেন। কিন্তু ঐ জালিম তাঁর বাম হাতও কেটে ফেলল। তারপরও তিনি মশকের ফিতা চরম কষ্টে দাঁতে কামড়ে ধরে ছুটে চললেন ইমামের শিবিরের দিকে। মহাবীর আব্বাসের এই বীরত্ব দেখে জালিম ইয়াজিদীদের আর সহ্য হলোনা। তারা এক সাথে ঝাঁপিয়ে পরে হযরত আব্বাসকে শহীদ করে দিলো। এদিকে পানির জন্য ছটফট করতে থাকা দুধের শিশু হযরত আজগর এবং সাকীনার জন্য আর পানি নিয়ে যাওয়া হলোনা।
কে ছিলেন এই হযরত আব্বাস?
-------
হযরত আব্বাস আলামদার রহঃ ছিলেন মওলা আলী বিন আবি ত্বালিব রাদ্বিয়াল্লাহু তা'লা আনহুমার পুত্র এবং ইমাম হুসাইন (আলাইহিস সালাম ওয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু)'র বৈমাত্রেয় ভ্রাতা। তাঁর জন্ম ২৬ হিজরীতে। হযরত আলী (আলাইহিস সালাম ওয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) তাঁকে সবার সাথে পরিচয় করে দিয়ে বলেছিলেন, "এই হচ্ছে আব্বাস, হাশেমী বংশের চাঁদ!" তিনি দেখতে ছিলেন অতীব সুদর্শন। জ্ঞানে এবং যুদ্ধ বিদ্যায় ছিলেন পারদর্শী। মওলা আলী রাঃ নিজে তাঁকে যুদ্ধ কলাকৌশল এবং ধর্মীয় শিক্ষায় পূর্ণতা দিয়েছিলেন। হযরত আলী রাঃ ছোটবেলায়ই এই মহাবীরের অনেক নিদর্শন লক্ষ্য করে নাম রেখেছিলেন আব্বাস, যার অর্থ সাহসী এবং বীর। পুরো নাম আবুল ফজল আব্বাস আলমদার ইবনে আলী রহঃ।
কারবালার যুদ্ধে মহরমের ১০ তারিখ শুক্রবার পবিত্র আশুরার দিনে তিনি ইয়াজিদী বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শাহাদাৎ বরণ করেন। ইমাম হুসাইন (আলাইহিস সালাম ওয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) এবং তাঁর পরিবারের প্রতি তাঁর আনুগত্য এবং ভালোবাসা এতই প্রবল ছিল যে ফোরাত নদীতে নিজ হাতের তালুতে পানি ধরেও পিপাসার্ত নারী ও শিশুদের কথা মনে করে এবং বড় ভাই ইমাম হুসাইন (রাঃ) এর কথা ভেবে হাতের পানি ফেলে দেন। যে পানির অভাবে নবী ﷺ পরিবারের ছোটো মাসুম বাচ্চারা, নারী এবং যোদ্ধাগণ পিপাসায় ছটফট করে একে একে প্রাণ বিসর্জন দিচ্ছিলেন, তিনি কীভাবে নিজে সেই পানি পান করবেন?
মাজারে অনবরত পানির ফোয়ারা - মহান আল্লাহ পাকের এক মহা কুদরত
----
কারবালা প্রান্তরে যে স্থানে এই মহান বীর শাহাদাৎ বরণ করেছিলেন, সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়। ফোরাত নদীর তীরে তাঁর মাজারকে ঘিরে তৈরি হয়েছে মাসজিদে আব্বাস। যা আজো কোটি কোটি নবী-প্রেমিকের জিয়ারতের স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। যে পানির জন্যে তিনি প্রাণ দিয়েছিলেন, যে পানি ইয়াজিদী নরাধমরা পশুপাখির জন্য বৈধ করলেও নবী ﷺ পরিবারের জন্য নিষিদ্ধ করেছিলো, আল্লাহ পাক চাইলেই ইমাম শিবিরে সে পানি পৌঁছে দিতে পারতেন। যেমনটি তিনি করেছিলেন শিশু ইসমাইল আঃ এর পদতলে পবিত্র জমজমের ফোয়ারা প্রবাহিত করে। যেমনটি করেছিলেন তাবুক অভিযান সহ অসংখ্য ঘটনায়। পানির কষ্ট এবং নিষ্ঠুরতার মধ্য দিয়ে ইমাম পরিবার একমাত্র ইসলামের সত্যকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য নিজেদের জীবন অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে আমাদের সামনে প্রমাণ রেখে গেলেন, "শির দেগা, নেহি দেগা আমামা!" আল্লাহ পাক যদি সেদিন এভাবে নবী-পরিবারের জীবন এবং ইজ্জতের বিনিময়ে ইসলামকে পুনরুজ্জীবিত না করতেন, তাহলে আজ অনেকেই নবী-পরিবারকে নিয়ে কটাক্ষ করতে দ্বিধা করতোনা। কিন্তু আল্লাহ পাক আমাদের জন্য তাঁর প্রিয় হাবীব ﷺ এর পরিবারের আত্মত্যাগের মাধ্যমে শিক্ষা দান করলেন, নবী ﷺ এবং আহলে বায়তের ভালোবাসাই হল ঈমানের মূল। এরপরও কিছু নরাধম কারবালার নির্মম ঘটনার নায়কদের শহীদ এবং জান্নাতী হিসেবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের কাছে ইমাম হুসাইন (আলাইহিস সালাম ওয়া রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু) হলেন রাজনীতির শিকার আর কুখ্যাত ইয়াজিদ হল সত্যের মাপকাঠি। নাউজুবিল্লাহ!
কারবালার প্রান্তরে আল্লাহ পাক পানিবঞ্চিত তৃষ্ণার্ত অবস্থায় নবী-পরিবারকে যন্ত্রণা ভোগ করতে দিলেও পানি আহরণে শহীদ আবুল ফজল আব্বাস ইবনে আলী (রহঃ) এর পবিত্র মাজারে নিরন্তর পানির ফোয়ারা প্রবাহিত রেখেছেন। তৃষ্ণার্ত আবুল ফজল আব্বাস ইবনে আলী (রহঃ) এর পিপাসা মিটানোর জন্য আল্লাহ সুবহানাহু তা'লার পক্ষে থেকে এ এক নিয়ামত। আল্লাহ এভাবেই তাঁর প্রিয় বন্ধুদেরকে সম্মানিত করে থাকেন। আহলে বায়েতের ভালোবাসার প্রতিদান আলাহ পাক এভাবেই দিয়ে থাকেন। সমগ্র জগতবাসীর জন্য এ এক অসীম কারামত এবং নবীদুশমনদের জন্য এ এক বড় শিক্ষণীয় ব্যাপার যদিও তারা কোন কিছু থেকেই শিক্ষা গ্রহণ করে না। কারণ আল্লাহ পাক তাদের অন্তরকে হেদায়েত থেকে দূরে রেখেছেন। তাদেরকে করে দিয়েছেন অন্ধ এবং বধির। ফলে তারা দেখেও দেখে না, শুনেও শুনে না।

Friday, June 29, 2018

গোলামের বাচ্চা গোলাম

যারা_নবীজির_গোলাম_বললে_লজ্জা_পান_তাদের_জন্য_এই_পোস্ট।
হযরত আব্দুল্লা বিন উমর (রাঃ)এর
ছেলে,আর হযরত আলী (রাঃ)ছেলে মাঠে
খেলাধুলা করছে, এক পর্যায় খেলার মধ্যে ঝগড়
লেগে গেলো, আলির ছেলে এক পর্যায়
উমরের ছেলেকে বললো গোলামের
ছেলে গোলাম।এই কথা শুনা মাত্রই উমরের
ছেলে বেত বেতাইয়া কাঁন্না শুরু করলো।
বাড়িতে গিয়ে কেঁদে কেঁদে বাবার কাছে বিচার
দিল,বাবা আলির ছেলে আমাকে গোলাম বাচ্চা
গোলাম বলেছে।এই কথা শুনা মাত্রই, জিনি ধুনিয়ায়
থাকা অবস্তায় জান্নাতের টিকেট পাওয়া সাহাবি,হযরত
উমর( রাঃ)কাঁদতে শুরু করলেন,ছেলে বলে বাবা
আমি দুঃখ পাইয়া কাঁদতেছি আপনি কেন কাদতেছেন।
উমর বলেন আমি কান্দি আনন্দ পাইয়া, আর তুই কান্দস
দুঃখ পাইয়া।বাবা আনন্দের কান্নাতো কোনদিন
শুনিনাই,আপনি এখন যান আলির কাছে বিচার দিন।বাবা
বলেন বিচার দিবো ঠিকই আগে একটু কান্দিঁয়া লই।
এই কথাটা অন্য সাহাবিদের কাছে পৌছে গেলো।
যে উমর আলীর কাছে বিচার দিবে,বাকি সব সাহাবিরা
উমরকে বলেন আপনি বিচার দিবেন্না এতে করে
মা ফাতেমা(রাঃ)আনহার বদনাম হবে।নবীজি
বলেছেন যে হাসান ও হোসাইনকে কস্ট দিবে
সে জেন আমাকে কষ্ট দিলো,কোন অবস্তায়
সাড়া দিলেন্না উমর, আর বললেন আপনারা আলির
কাছথেকে বিচারের তারিখ আনেন। তারিখ হল
ঈদের দিন, খুতবার সময় সবার সামনে বিচার হবে
উমরের ছেলেকে গালি দিলো গোলামের
ছেলে গোলাম,এই কথা কাগজে লিখে দিতে
পরলে মেনে নিবো, আলি হোসাইনকে ডাক
দিলেন তুমি কি গালি দিয়েছিলে গোলামের বাচ্চা
গোলাম, হা দিয়েছিতো। তা কি তুমি কাগজে লিখে
দিতে পারবা? হা পারবো,হোসাইন কাগজ হাতে
নিয়ে লেখলেন উমর আমার নানা জানের
গোলাম, এই কাগজ খানা হাজার হাজার সাহাবিদের মাজে
দিলেন উমরের কাছে, উমর কাগজটা পেয়ে
একবার বুকে লাগায় আবার চুমা খায়, একবার বুকে লাগান
একবার চুমা খান,আর বলেন জীবন ধন্য আমার যিনি
বেহেস্তের সরদার হোসাইন আমাকে লিখে
দিলেন আমি নবীজির গোলাম আমার আর কোন
চিন্তা নাই।আমার মরনের পরে কাগজটা কবরে
দিবেন । নবীজির গোলাম, গোলাম হওয়াটা
নসিবের ব্যাপার। আল্লাহ আমাদের সবাই কে, নবীজির গোলাম হওয়ার তৌফিক দান করক, আমিন, আমিন, আমিন

Thursday, June 28, 2018

সাপ এবং মুয়ুর কে বেহেস্ত থেকে কেন বের করে দেওয়া হল।

অতঃপর বলা হল- হে আদম! তুমি ইবলিসের প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকবে, কেননা সে তো তোমার পরম শুত্রু। এ সম্পর্কে কালামে পাকে ইরশাদ হচ্ছে -

ফাকুলনা-ইয়া-আ-দামু ইন্না হা-জা - আদুও উল্লাকা অলিজাও জিকা ফালা- ইউখরি জান্নাকুমা- মিনাল জান্নাতি।

অর্থ ঃ অতঃপর আমি বললাম -- হে আদম এ (শয়তান) তোমার ও তোমার স্ত্রীর দুশমন। সুতরাং সে যেন তোমাদেরকে বেহেশ থেকে বের করে না দেয়।
আদম ( আ )  বেহেস্তের সব দরজাই উত্তমরূপে বন্দ দেখতে পেয়ে তার দৃঢ় আস্তা হল, ইবলিশ পৃথিবীতে আর আমি বেহেস্তে অবস্থান করছি, কাজেই তার সঙ্গে আমার কি সম্পর্ক যে, সে আমাকে নিশিদ্দ ফল ভক্ষণ করিয়ে পাপি করবে। আমি তার প্রতারণা থেকে আশঙ্কা মুক্ত। অতঃপর একদিন অভিশপ্ত ইবলিশ বেহেস্তে হযরত আদম ( আ ) এর কাছে যাওয়ার সংকল্প করল। আল্লাহ তালার তিনটি ইসমে আজম তার জানা ছিল। তা পড়ে সে সাত তবক আসমান অতিক্রম করে বেহেস্তের দরজায় পৌঁছুল। দরজা বন্ধ দেখে বেহেস্তে প্রবেশ করার উপায় চিন্তা ভাবনা করতে লাগল। ঘটনাচক্রে একটি মুয়ুর বেহেস্তের দেয়ালে বসা ছিল। শয়তান দেয়ালের বাহিরে বসে ইসমে আযম পড়তে থাকে। ইসমে আযম পড়তে দেখে ময়ূর ইবলিশের পরিচয় জানতে চাইল। ইবলিশ বলল, আমি আল্লাহর এক ফেরেশতা। মুয়ুর বলল, তুমি এখানে বসে কি করছ??  শয়তান উত্তর দিল, আমি বেহেস্তে প্রবেশ করতে চাচ্ছি। ইবলিশ মুয়ুরকে অনুরোধ করল, তাকে বেহেস্তে নিয়ে যেতে। মুয়ুর বলল আদম ( আ ) বেহেস্তে যতক্ষণ আছে ততক্ষণ কাউকে নেওয়ার কোন আদেশ আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার নাই। শয়তান বলল, তুমি আমাকে বেহেস্তে নিয়ে যাও, আমি তোমাকে এমন তিনটি দোয়া শিখাব- যে তিনটি দোয়া শিখে আমল করলে তুমি তিনটি বিষয় লাভ করতে পারবে।  (১) কখনো তুমি বৃদ্ধ হবে না, (২) মৃত্যু বরন করবে না, (৩) সর্বদা বেহেস্তে অবস্তান করতে পারবে।  ইবলিশ কথিত দোয়া পড়ল এবং মুয়ুর বেহেস্তের দেয়াল থেকে নেমে এসে ইবলিশ কে নিয়ে উভয়ে বেহেস্তের দরজায় গিয়ে দাঁড়াল। মুয়ুর সাপের নিকট এ ঘটনা ফাঁস করে দিল। সাপ এই কথা সুনতেই বেহেস্তের দরজা বন্ধ করে নিজের মাথা বের করে ইবলিশের পরিচয় এবং আগমনের উদ্দেশ্য জানতে চাইল। ইবলিশ বলল আমি আল্লাহর এক ফেরেশতা, সাপ বলল তুমি আমাকে তোমার পাঠকৃত দোয়া শিখাও। ইবলিশ বলল এক সর্তে তোমাকে আমি এ দোয়া শিখাতে পারি, তা হল তুমি আমাকে বেহেস্তে নিয়ে যাবে। সাপ বলল- হযরত  আদম (আ)  বেহেস্তে যতক্ষণ আছে ততক্ষণ কাউকে নেওয়ার কোন আদেশ আল্লাহর পক্ষ থেকে আমার নেই। ইবলিশ বলল আমি বেহেস্তে পা রাখব না, বরং তোমার মুখের ভিতরেই অবস্তান করব। বাইরে বের হব না। শয়তানের কথা বিশ্বাস করে সাপ মুখ প্রসারিত করে দিল। ইবলিশ তার মুখে ঢুকে পড়লে সাপ তাকে বেহেস্তে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়।

সাপের মুখাভ্যন্তরে লুকিয়ে বেহেস্তে প্রবেশের পর সাপকে বলল তুমি আমাকে আল্লাহ তাআলা হযরত আদম (আ) কে যে বৃক্ষের ফল খেতে নিষেধ করেছেন, সে বৃক্ষের নিকট নিয়ে চল। সাপ ইবলিশ কে নিশিদ্দ বৃক্ষের নিকট নিয়ে গেলে, সে সাপের মুখাভ্যন্তর থেকেই প্রতারণামূলক ভাবে কান্নাকাটি শুরু করে দিল। এ জগতে যে সর্ব প্রথম মুনাফেকির কান্না কেঁদেছিল, সে হচ্ছে অভিশপ্ত ইবলিশ।
তার কান্না শুনে বেহেস্তের গেলমান অকলে সমবেত হয়ে বলাবলি করতে লাগল আমরা তো কখনো সাপের মুখ থেকে এমন শব্দ শুনতে পাইনি।
হযরত হাওয়া (আ) সাপকে কাঁদার কারন জিজ্ঞেস করলে ইবলিশ সাপের মুখ থেকে বলল, আমি এই জন্য কাঁদছি যে, তোমাদেরকে বেহেস্ত থেকে বের করে দেওয়া হবে। কেননা আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে যে বৃক্ষের ফল খেতে নিষেধ করেছেন, সে বৃক্ষের ফল ভক্ষণকারীকে কখনো  জান্নাত থেকে বের করা হবে না। আল্লাহ তাআলা এ ঘটনা সম্পর্কে বলেন-

কালা-ইয়া-আ-দামু হাল আদুল্লুকা আলা-শাজারাতিল খুলদি ওয়া মুল্কিল  লা-ইয়াবলা...।

অর্থ  ঃ ইবলিশ বলল, হে আদম, আমি তোমাকে আমি এমন বৃক্ষের সন্ধান দিব, যা থেকে তোমার চিরন্তন জীবন লাভ হবে। এবং তোমার রাজত্ব পুরানো হবে না।

ইবলিশ আল্লাহর নামে কসম করে বলল- হে আদম, আমি তোমাকে মিথ্যা কিছু বলছিনা, তোমার অমঙ্গল ও আমার কাম্য নয়, বরং তোমাকে সদুপদেশ প্রদান করছি, আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

        ওয়া কা-সামাহুমা-ইন্নী লাকুমা-লামিনান না-ছিহীনা ফাদাল্লা-হুমা বিগুরুরিন।

অর্থ ঃ ইবলিশ তাদের নিকট কসম খেয়ে বলেছিল, আমি তোমাদের মঙ্গলকামী, অতঃপর তাদেরকে প্রতারণা দিয়ে আকৃষ্ট করে।

   এ দুনিয়ায় সর্বপ্রথম মিথ্যা কসমকারীও অভিশপ্ত ইবলিশ। হযরত হাওয়া (আ)  ইবলিশের মিথ্যা কসমে ধোকায় পড়ে নিশিদ্দ বৃক্ষের অর্থাৎ গন্দমের তিনটি ফল নিয়ে একটি নিজে খেয়ে দুটি হযরত আদম (আ) এর জন্য নিয়ে যায়।




Monday, May 28, 2018

প্রশ্নঃ "নবী কি হানাফি ছিলেন, শাফেঈ ছিলেন, হাম্মলী ছিলেন, মালেকী ছিলেন, নাকি মুসলিম ছিলেন?


জবাবঃ এই মূর্খদের মত প্রশ্ন যারা করে
তাদেরকে
জিজ্ঞাসা করুন, নবী কি সাহাবী ছিলেন, তাবেঈ
ছিলেন? তাবে তাবেঈ ছিলেন? নাকি মুসলিম ছিলেন?
.
নবী যেইভাবে সাহাবী না হয়ে, তাবেঈ না হয়ে,
তাবে
তাবেঈ না হয় এসকল পরিচয়ের অণুমোদন দিয়ে
গেছেন,
ঠিক তেমনিভাবে রসূল সল্লাল্লহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
হানাফি, শাফেঈ, মালেকি, হাম্বলী সকল মাযহাবের
অণুমোদনদাতা ছিলেন। নিম্নোক্ত সহীহ হাদীসটি
লক্ষ
করুণ -
ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﺃَﻥَّ ﺭَﺳُﻮﻝَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻗَﺎﻝَ
ﻣَﻦْ ﺩَﻋَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﻫُﺪًﻯ ﻛَﺎﻥَ ﻟَﻪُ
ﻣِﻦْ ﺍﻷَﺟْﺮِ ﻣِﺜْﻞُ ﺃُﺟُﻮﺭِ ﻣَﻦْ ﺍﺗَّﺒَﻌَﻪُ ﻻ ﻳَﻨْﻘُﺺُ ﺫَﻟِﻚَ ﻣِﻦْ
ﺃُﺟُﻮﺭِﻫِﻢْ ﺷَﻴْﺌًﺎ ﻭَﻣَﻦْ ﺩَﻋَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﺿَﻼﻟَﺔٍ
ﻓَﻌَﻠَﻴْﻪِ ﻣِﻦ ﺍﻹِﺛْﻢِ ﻣِﺜْﻞُ ﺁﺛَﺎﻡِ ﻣَﻦْ ﺍﺗَّﺒَﻊَ ﻻ ﻳَﻨْﻘُﺺُ ﺫَﻟِﻚَ ﻣِﻦْ
ﺁﺛَﺎﻣِﻬِﻢْ ﺷَﻴْﺌًﺎ
হযরত আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল (সাঃ)
ইরশাদ করেছেন, "যে ব্যক্তি হিদায়াতের দিকে পথ
প্রদর্শন করে, যে ব্যক্তি তার পথ অনুসরণ করবে,
তার
সওয়াবে কমতি করা ছাড়াই তার সমপরিমাণ সওয়াব পথ
প্রদর্শনকারী পাবে। এমনিভাবে যে ব্যক্তি
পথভ্রষ্টতার
দিকে ডাকবে, এর দ্বারা যে ব্যক্তি গোনাহে লিপ্ত
হবে,
তার গোনাহের মাঝে কম করা ছাড়াই এর সমপরিমাণ
গোনাহ আহবানকারী পাবে।"
.
{মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৯১৬০, সহীহ মুসলিম,
হাদীস
নং-২৬৭৪}
.
উপরোক্ত হাদীস দ্বারা রসূল সল্লাল্লহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম সকল মাযহাব, মাদ্রাসা, দ্বীন মানার
সহায়ক সকল কাজের অণুমোদন দিয়ে গেছেন।
তাহলে
সহীহ হাদীস মানলে উপরোক্ত হাদীস মানতে
আপনাদের
সমস্যা কোথায়?
.
যেই কারণে সাহাবীগণ, তাবেঈগণ, তাবে
তাবেঈনগণ
যেভাবে এই পরিচয় নিয়েও মুসলিম ছিলেন। সেই
একই
কারণে আমরাও হানাফি, শাফেঈ, মালেকি, হাম্বলী
হয়েও মুসলিম।
.
আরেকটি উদাহরণ থেকে বলি। একটি মসজিদে যারা
নামাজ আদায় করে সকলেরই পরিচয় নামাজি।
.
★তবে এর মাঝে যিনি নামাজ পড়ান তাকে কি বলা হয়?
- "ইমাম সাহেব।"
★যিনি আযান দেন তার কি পরিচয়?
- "মুয়াজ্জিন সাহেব।"
★যারা নামাজ পড়েন তাদের কি বলা হয়?
- "মুসুল্লি।"
এক মসজিদে একই কাতারে নামাজরত নামজিদের
পরিচয়
তিন রকমের। কেন সকলের পরিচয় শুধু নামাজি হলে
দোষ
কি?
.
আরেকটু সহজ ভাষায় বলি। আমাদের দেশের
বিভিন্ন
মানুষের বাড়ী বিভিন্ন জেলায় রয়েছে। তাই বলে
কি
কেউ প্রশ্ন করেন, ভাই আপনি ঢাকাবাসী না
বাংলাদেশী? আপনি সিলেটবাসী না বাংলাদেশি?
.
সামান্য একটা দেশের ৬৪ টি টা জেলা হতে পারে।
আর
ইসলাম এতবড় একটি মহাসমুদ্র এর শাখা প্রশাখা, নদ-
নদী
থাকতে পারেনা? সকল নদী যেভাবে গিয়ে
সাগরে
মিলিত হয়। তেমনি ইসলামের সকল সহীহ পথ, মাযহাব
গিয়েও জান্নাতে মিলিত হবে ইনশাআল্লাহ।
.
আল্লাহ সবাইকে বুঝার ও আমল করার তাওফিক্ব দান
করুন আমীন৷

Saturday, April 21, 2018

সৌদি মুফতিরা কই গেলি

যারা পবিত্র কুরআন হাদিসের নির্জাস থেকে উপলব্ধি না করে ইজমা কিয়াসেরও তোয়াক্কা নাকরে কথায় কথায় সৌদিয়া'কে ফলো করতে গিয়ে ইসলামে এটা-ওটা নেই বলে ফতোয়াবাজী করে তারা আজ কোথায়? সৌদিরা যে আজ সিনেমাহল তৈরী করে নারী পুরুষ একসাথে বসে সিনেমা দেখছেন। তবে কি আমাদের দেশীয় সৌদি মুফতিরাও এখন তাদের অনুসরণ করতে গিয়ে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখার পক্ষে নিবে ⁉️
🇧🇩 ️বাংলাদেশে যখন মানুষ সিনেমা বিমুখ হওয়াতে সিনেমাহলগুলি বন্ধহয়ে মার্কেটে পরিণত হলো, তখন সৌদিরা কোটিটাকা ব্যয় করছেন আজ সিনেমার পিছনে।️ তারা আজ প্রতিটা শহরে বিশালাকার সিনেমাহল তৈরীর চুক্তি করছে পশ্চিমাদের সাথে। আমি তাদের বিরোধিতা করছিনা তবে ইসলামী শাসনীয় দাবীদার একটি দেশ এভাবে মডার্ন হতে গিয়ে সিনেমা প্রেমিক হয়ে সাধারণ মুসলমানদের শ্রদ্ধার 'রশিকাটা' কোনমতে মেনে নেয়া যায়না।

Saturday, March 17, 2018

বৃদ্ধাঙ্গুল চুম্বন এর প্রমান

আযান ও ইক্বামতে রাসূলে পাকের নাম মুবারক ‘মুহাম্মদ’ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম শুনে বৃদ্ধাঙ্গুলকে চুম্বন করে তা চোখে মোছা সম্পর্কে শরীয়তের দলীল
হাজার বছর ধরে মুসলিম মিল্লাতের মাঝে এ প্রথা চলে আসছে যে, হুযুর আকদাস, রহমতে আলম জানে দু’আলম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র নাম মুবারক শুনে পরমভক্তি ভরে বৃদ্ধাঙ্গুলি চুমু দিয়ে চোখে মালিশ করা। বিশেষ করে আযানে যখন
اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللّٰهِ
এই পবিত্র বাক্য শুনে তখন ছোট বড় সকলে পরম ভালবাসা ও শ্রদ্ধা নিয়ে আপন বৃদ্ধাঙ্গুল চুম্বন করে তা চোখে মোছে নেয়। রাসূল প্রেমের এই অমৃত সুধা পানকারী প্রেমিকগণের পরিপূর্ণ ভক্তি সম্মানের এই মুস্তাহাব আমলকে বর্তমান যুগের অনেক মুনাফিক নিষেধ করে থাকে। এমনকি এই পবিত্র আমলকে বিদআত বলে অপপ্রচার চালিয়ে সরলমনা মুসলমানদের মাঝে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা চালায়।
বৃদ্ধাঙ্গুল চুম্বনের এই মাসয়ালা নিয়ে বর্তমানে জনসাধারণের মাঝে অনেক কথা কাটাকাটি ও ঝগড়া ফ্যাসাদও হয়ে যায়। পবিত্র নাম মুবারক উচ্চারণ করলে এবং করতে শুনলে বৃদ্ধাঙ্গুল চুম্বন দিয়ে আপন দু’চোখে মালিশ করে বরকত হাসিল করার এই আমলকে বাধাদানকারী কাঠমোল্লা, মূর্খ মৌলভীরা শুধু বিদআত, বিদআত বলে চিৎকার করে কিন্তু তাদের এ দাবীর পক্ষে কোন দলীল প্রমাণ পেশ করতে পারেনা বরং উল্টো সাধারণ মুসলমানদেরকে যারা এ আমল করেন তাদেরকে বলে, এটা জায়েয এ মর্মে এমন কোন দলীল দাও তো দেখি। সরলমনা সাধারণ মুসলমানরা দলীল পেশ করতে না পেরে এটাই জবাব দেয় যে, এই বরকতময় আমল তো আমরা আমাদের বাপ- দাদা ও বুযূর্গ সূফী মুত্তাকীদেরকে করতে দেখে আসছি। এই আমল তো শুধু দেখা- দেখিভাবে প্রচলিত এরকম একটি আমল নয়, বরং যুগ যুগ ধরে ইসলামী শরীয়ত ও মুসলিম মিল্লাতের কাছে গ্রহণযোগ্য অনন্য বরকতময় একটি আমল। এর পরেও ওই মুনাফিক দলগুলো তাদের যতটুকু সাধ্য ততটুকু শক্তি ব্যয় করে সরলমনা মুসলমানকে এই মহত্বপূর্ণ আমল থেকে বিরত রাখার চেষ্টা চালায়। অথচ, এই বরকতমন্ডিত আমলের বৈধতা সম্পর্কে কুরআন ও হাদীসে যথেষ্ট দলীল প্রমাণ রয়েছে। ঐ দলীলগুলো থেকে কয়েকটি দলীল এখানে পেশ করা হচ্ছে, যাতে সরলপ্রাণ মুসলমানরা ঐ সকল মুখোশধারী মুনাফিক মুসলমানের খপ্পরে পড়ে বিভ্রান্ত হতে না হয়।
দলীল নং-১:- ইমাম দায়লামী মাসনাদুল ফিরদাউস গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন সত্যবাদীদের সরদার, মুত্তাকীদের ইমাম, খলীফাতুর রাসুল, আমীরুল মুমিনীন খলীফাতুল মুসলিমীন সায়্যিদুনা হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু, মুয়াযযিন আযানে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাছুলুল্লাহ اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللّٰهِ বলতে যখন শুনতেন তখন
اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهُ وَرَسُوْلُهُ رَضِيْتُ بِاللّٰهِ رَبًّا وَبِالْاِسْلَامِ دِيْنًا وَبِمُحَمَّدِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَبِيِّنَا
উচ্চারণঃ- আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আবুদুহু ওয়া রাসুলুহু, রাদ্বিতু বিল্লাহি
রাব্বা ওয়াবিল ইসলামি দ্বীনা ওয়া বি মুহাম্মাদিন সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম নাবীয়্যানা (এই দোয়া) পড়তেন। অতঃপর ঐ দুই কালেমা আঙ্গুলের ভেতর দিকের সন্ধিস্থল চুমু খেয়ে চোখে লাগাতেন। সিদ্দিকে আকবর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুর এই আমল দেখে রাসুল পাক সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,
مَنْ فَعَلَ مِثْلَ مَا فَعَلَ خَلِيْلِىْ فَقَدْ حَلَّتْ عَلَيْهِ شَفَاعَتِىْ-
যে এমন করবে যেমনি আমার বন্ধু করেছে, তার ব্যাপারে আমার শাফায়াত বৈধ হয়ে গেল।
দলীল নং-২: ইমাম আল্লামা আলী বিন সুলতান হারভী, ক্বারী, মক্কী, প্রকাশ মোল্লা আলী কারী আলায়হির রাহমাহ তার সর্বজন গ্রহণযোগ্য কিতাব মউদ্বুআতে কবীর গ্রন্থে পবিত্র নাম মুবারক শুনে আঙ্গুল চুম্বনের ব্যাপারে বলেন
وَاِذَا ثَبَتَ رَفْعُهُ اِلٰى الصِّدِّيْقِ رَضِىَ اللّٰهُ تَعَلٰىْ عَنْهُ فَيَكْفِىَ لِلْعَمَلِ بِهِ لِقَوْلِهِ عَلَيْهِ الصَّلٰوةِ وَالسَّلَامِ عَلَيْكُمْ بِسُنَّتِىْ وَسُنَّةُ الْخُلَفَاءَ الرَّاشِدِيْنَ-
অর্থাৎ- হযরত সিদ্দীকে আকবর রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে এ কাজের প্রমাণ পাওয়া আমলের জন্য যথেষ্ট। কেননা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তাআলা আলায়হি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের উপর আবশ্যক, আমি ও আমার খোলাফায়ে রাশেদীনদের সুন্নাতের উপর আমল করা।
তাই হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে কোন আমল প্রমাণ পাওয়া বস্তুত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া
সাল্লাম থেকে কোন আমলের প্রমাণ বহন করে।
দলীল নং- ৩: ইমাম শামছুদ্দীন সাখাভী তার রচিত মাক্বাসিদ এ হাসানাহ গ্রন্থে এই হাদীস বর্ণনা করেছেন এবং আঙ্গুল চুম্বনের এই আমলকে মুস্তাহাব বলে মন্তব্য করেছেন।
দলীল নং- ৪: বরেণ্য ইমাম হযরত আবুল আব্বাস আহমদ বিন আবূ বকর রাওআদ ইয়েমেনি সূফি তার রচিত ‘মাওজিবাতুর রাহমাহ ওয়া আযাঈমুল মাগফিরাহ’ নামক গ্রন্থে হযরত সায়্যিদুনা খিযির আলাইহিস সালাম থেকে বর্ণনা করেন , হযরত খিযির আলাইহিস সালাতু ওয়াসসালাম বলেন-
مَنْ قَالَ حِيْنَ سَمِعَ الْمُؤَذِّنُ يَقُوْلُ اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللّٰهِ مَرحَبًا بِحَبِيْبِىْ وَقُرَّةُ عَيْنِى مُحَمَّدَ بْنِ عَبْدِ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ يُقْبَلُ اَبْهَامَيْهِ وَيَجْعَلُهَا عَلٰى عَيْنَيْهِ لَمْ يَرْمَدْ اَبْدًا-
যে ব্যক্তি মুয়াযযিনের আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ শুনে
اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللّٰهِ مَرْحَبًا بِحَبِيْبِيْ وَقُرَّةُ عَيْنِىْ مُحَمَّدَ بْنِ عَبْدِ اللّٰهِ صَلَّى اللّٰهُ عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ
পড়ে দুই বৃদ্ধাঙ্গুল চুম্বন করে তা তার আপন দু’চোখে লাগাবে, তার চোখ কোন দিন অসুস্থ হবে না।
দলীল নং- ৫: ‘মাওজিবাতুর রাহমাহ’ গ্রন্থে হযরত ফকীহ মুহাম্মদ বিন আলবাবা তার ভাই থেকে বর্ণনা করেন, তিনি আপন অবস্থার কথা বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন-
اَنَّهُ هَبَتْ رِيْحُ فَوَقَعْتْ مِنْهُ حَصَّاةٌ فِىْ عَيْنِهِ وَاَعْيَاهُ خُرُوْجِهَا وَالْمُتْهُ اَشَدُّ الْاَلَمِ وَاَنَّهُ لَمَّا سَمِعَ الْمُؤَذِّنُ يَقُوْلُ اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللّٰهِ قَالَ ذَالِكَ فَخَرَجْتُ الحَصَّاةُ مِنْ فَوْرِهِ ، قَالَ الرَّوَادُ رَحِمَهُ اللّٰهُ تَعَالٰى وَهَذَا يَسِيْرُ فِىْ جَنْبِ فَضَائِلِ الرَّسُوْلِ صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمُ-
অর্থাৎ- একদিন খুব জোরে বাতাস প্রবাহিত হলে বাতাসের বেগে একটি কঙ্কর তার চোখে ঢুকে যায়, তা বের করার জন্য অনেক চেষ্টা করা হল কিন্তু বের হলনা এবং তা অসম্ভব ব্যথা- বেদনা শুরু করে দিল। এমন সময়ে সে মুয়াযযিনের আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ বাক্যটি বলতে শুনল, তখন উল্লিখিত দোয়া পড়ে এই বরকতময় আমল করল। সাথে সাথে তার চোখ থেকে ওই কঙ্কর বের হয়ে গেল। হযরত রাওআদ বলেন, হুযুর সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মহত্ত্বের সামনে সেটা তেমন কিছু নয়।
দলীল নং-৬: পবিত্র মদীনায়ে তায়্যিবাহ’র খতীব, হযরত ইমাম শামসুদ্দীন মুহাম্মদ বিন সালেহ মাদানী তার রচিত তারীখ গ্রন্থে বর্ণনা করেন,
رَوِيَ عَنِ الْفَقِيْهِ مُحَمَّدٍ بْنِ سَعِيْدٍ الْخَوَلَانِيْ قَالَ اَخْبَرَنِيْ فَقِيْهُ الْعَالِمِ اَبُوْ الْحَسَنِ عَلِي بْنِ حَدِيْدِ الْحُسَيْنِيْ اَخْبَرَنِيْ الْفَقِيْهُ الزَّاهِدِ الْبِلَالِىْ عَنِ الْحَسَنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ اَنَّهُ قَالَ مَنْ قَالَ حِيْنَ يَسْمَعُ الْمُؤَذِّنُ يَقُوْلُ اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللّٰهِ مَرْحَبًا بِحَبِيْبِىْ وَقُرَّةُ عَيْنِيْ مُحَمَّدُبْنِ عَبْدِ اللّٰهِ وَيُقْبَلُ اِبْهَامَيْهِ وَيَجْعَلُهَا عَلٰى عَيْنَيْهِ لَمْ يَعَمْ وَلَمْ يَرْمَد-
অর্থাৎ- ফকীহ মুহাম্মদ বিন সাঈদ খাওলানী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাকে ফকীহ আবুল হাসান আলী বিন মুহাম্মদ বিন হাদীদ হোসাইনী খবর দিয়েছেন, ফকীহ যাহেদ বিলালী ইমাম হাসান মুজতাবা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন যে ব্যক্তি, মুয়াযযিনের اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا رَّسُوْلُ اللّٰهِ শুনে-
مَرْحَبًا بِحَبِيْبِيْ وَقُرَّةُ عَيْنِيْ مُحَمَّدُ بْنِ عَبْدِ اللّٰه
এই দোয়া পড়ে আপন বৃদ্ধাঙ্গুল চুমু দিয়ে আপন চোখে লাগাবে, ঐ ব্যক্তির চোখ না কখনো অন্ধ হবে, না কখনো ব্যাথা অনুভব করবে।
দলীল নং-৭: খতীবে মদীনায়ে তায়্যিবাহ হযরত শামসুদ্দীন বনি সালেহ মাদানী তার ‘তারীখ’ গ্রন্থে হযরত মাজদ মিসরী, [যিনি সালফে-সালেহীনদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন] থেকে বর্ণনা করেন, মাজদ মিসরী বলেন
اِذَا سَمِعَ ذِكْرَهُ صَلَّي اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِىْ الْاَذَانِ وَجَمَعَ اَصَبِعَيْهِ الْمُسَبَّحَةِ وَالْاِبْهَامُ وَقَبَّلَهُمَا وَمَسْحَ بِهِمَا عَيْنَيْهِ لَمْ يَرْمَدْ اَبَدًا-
অর্থাৎ- যে ব্যক্তি আযানের মধ্যে নবী করীম সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র নাম শুনে শাহাদাত আঙ্গুল ও বৃদ্ধাঙ্গুল মিলাবে এবং তাতে চুমু খেয়ে চোখে মালিশ করবে তার চোখ কোন দিন অসুস্থ হবে না।
দলীল নং-৮: সর্বজন শ্রদ্ধেয় ইমাম, ইমাম আবুল আব্বাস আহমদ বিন আবু বকর রাওয়াদ ইয়েমেনি সূফী তার ‘মাওজিবাতুর রাহমাহ ওয়া আযঈমুল মাগফিরাহ’ গ্রন্থে উল্লেখ করেন-
قَالَ اِبْنُ صَالِحٍ وَسَمِعْتُ ذَالِكَ اَيْضًا مِنَ الْفَقِيْهِ مُحَمَّدَ بْنَ الزَّرَنِدِيِّ عَنْ بَعْضِ شُيُوْخِ الْعِرَاقِ وَالْعَجَمِ وَاَنَّهُ يَقُوْلُ عِنْدَ يَمْسَحُ عَيْنَيْهِ صَلَّي اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا سَيَّدِيْ يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ يَا حَبِيْبَ قَلْبِيْ وَيَا نُوْرَ بَصْرِيْ وَيَا قُرَّةَ عَيْنِيْ وَقَالَا لِيْ كُلُّ مُنْذُ فَعَلْتُهُ لَمْ تَرْمَدْ عَيْنِيْ-
অর্থাৎ- ইবনে সালেহ বর্ণনা করেন, আমি এই আমল ফকীহ মুহাম্মদ বিন যরন্দী থেকেও শুনেছি এবং ইরাক ও অনারব বিশ্বে অনেক মাশায়েখও বর্ণনা করেছেন, তাদের বর্ণনায় এটাও আছে যে, চোখ মোছার সময় এই দুরূদ পড়বে
صَلَّي اللّٰهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَا سَيَّدِيْ يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ يَا حَبِيْبَ قَلْبِيْ وَيَا نُوْرَ بَصْرِيْ وَيَا قُرَّةَ عَيْنِيْ-
এবং ঐ দুই মহান ব্যক্তি, শায়খ মুহাম্মদ মিসরী ও শায়খ ফকীহ মুহাম্মদ আমাকে বলেছেন, আমি এই আমল যখন থেকে করছি তখন থেকে আজ পর্যন্ত কখনো আমার চোখ অসুস্থ হয়নি।
অতঃপর ইবনে সালেহ বলেন-
وَاللّٰهِ الْحَمْدُ وَالشُّكْرُ مُنْذُ سَمِعْتُهُ مِنْهُمَا اِسْتَعْمَلْتُهُ فَلَمْ تَرْمَدْ عَيْنِيْ وَارْجُوْ اَنْ مَا فِيْهِمَا تَدُوْمُ وَاَنِّيْ اَسْلَمُ مِنْ الْعَمِّيْ اِنْشَاءَ اللّٰهُ تَعَالٰيْ-
মহান রবের শুকরিয়া ও প্রশংসা, আমি যখন এই মহান দু’জন বুযুর্গ মাশায়েখ থেকে এই আমলের কথা শুনেছি, তখন থেকে এই বরকতময় আমল আমি করতে শুরু করলাম এবং তখন থেকে এখনও পর্যন্ত আমার চোখে কোন ব্যাথা অনুভব হয়নি। আমি আশা করছি আমার চোখ সর্বদা ভাল ও সুস্থ থাকবে এবং কখনো অন্ধ হবে না, ইনশাআল্লাহ।
দলীল নং-৯: ইলমে ফিকহর প্রসিদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য কিতাব ‘আল মুখতাসারুল কুদুরীর’ ব্যাখ্যাগ্রন্থ ‘জামেউল মুজমিরাত’ গ্রন্থের লেখক উস্তাজুল উলামা আল্লামা ইউসুফ বিন ওমরের ছাত্র, ফকীহদের ইমাম আরেফ বিল্লাহ সায়্যিদি ফজলুল্লাহ বিন মুহাম্মদ বিন আইয়্যুব সোহরাওয়ার্দি তার ফাতওয়া এ সুফিয়া এবং উলামাদের আশ্রয়স্থল ইমাম আব্দুল আলী বরজন্দী তার প্রসিদ্ধ কিতাব শরহে নেক্বায়া গ্রন্থে বর্ণনা করেন-
وَاَعْلَمْ اَنَّهُ يَسْتَحِبُّ اَنْ يُّقَالَ عِنْدَ سِمَاعِ الْاُوْلِي مِنَ الشَّهَادَةِ صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلَيْكَ يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ وَ عِنْدَ الثَّانِيَةِ مِنْهُمَا قُرَّةُ عَيْنِيْ بِكَ يَا رُسُوْلَ اللَّهِ ثُمَّ قَالَ يُقَالُ اَللَّهُمَّ مَتِّعْنِيْ بِالسَّمْعِ وَالْبَصْرِ بَعْدَ وَضَعَ ظُفْرِيْ الْاِبْهَا مَيْنِ عَلٰيْ الْعَيْنَيْنِ فَاِنَّهُ صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰي عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُوْنُ لَهُ قَائِدًا اِلٰيْ الْجَنَّةِ وَكَذَا فِى كَنْزِ الْعِبَاد
অর্থাৎ- জেনে রাখুন, অবশ্যই মুস্তাহাব যে, যখন আযানে প্রথমে আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ বলতে শুনবে তখন সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলবে এবং দ্বিতীয়বার যখন বলতে শুনবে তখন বলবে, কুররাতু আইনি বিকা ইয়া রাসূলাল্লাহ, অতঃপর বৃদ্ধাঙ্গুলির নখের উপর চুমু খেয়ে তা চোখের উপর রেখে বলবে اَللَّهُمَّ مَتِّعْنِيْ بِالْسَّمْعِ وَالْبَصْرِ এর আমলকারীকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম জান্নাতে নিয়ে যাবেন। এই বর্ণনা ‘কানযুল ইবাদ’ নামক গ্রন্থেও উল্লেখ আছে।
দলীল নং-১০: শায়খুল মাশায়েখ, খাতেমুল মহাক্কেকীন, মক্কা শরীফে হানাফী ইমামদের সম্মানিত ইমাম আল্লামা শাহ জামাল বিন আব্দুল্লাহ ওমর মক্কী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তার ফাতওয়ায় বর্ণনা করেন-
سُئِلَتْ عَنْ تَقْبِيْلِ الْاِبْهَامَيْنِ وَوَضَعْهُمَا عَلٰى الْعَيْنَيْنِ عِنْدَ ذِكْرِ اِسْمِهِ صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِىْ الْاَذَانِ هَلْ هُوَ جَائِزٌ اَمْ لَا؟ اَجِبْتُ بِمَا نَصَّهُ نَعَمْ تَقْبِيْلُ الْاِبْهَامَيْنِ وَوَضَعْهُمَا عَلٰى الْعَيْنَيْنِ عِنْدَ ذِكْرِ اِسْمِهِ صَلَّى اللّٰهُ تَعَالٰى عَلَيْهِ وَ سَلَّمَ جَائِزٌ بَلْ هُوَ مُسْتَحَبٌّ صَرَّحَ بِهِ مَشَائِخُنَا فِىْ كُتُبِ مُتَعَدَّدَةٌ
অর্থাৎ- আমাকে প্রশ্ন করা হয়েছে, আযানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক শুনে আঙ্গুল চুম্বন করে তা চোখে লাগানো জায়েয কি- না? আমি এসব বাক্য দ্বারা উত্তর দিলাম, হ্যাঁ আযানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক শুনে আঙ্গুল চুম্বন করে চোখে লাগানো জায়েয, বরং মুস্তাহাব। আমাদের মাযহাবের বিজ্ঞ মাশায়েখগণ তাদের নির্ভরযোগ্য কিতাবসমূহে এই আমলকে মুস্তাহাব বলে উল্লেখ করেছেন।