Monday, November 1, 2021

হযরত আলাউদ্দিন আহমদ সাবের কালিয়ার (র) বড় পীরের পর সবচেয়ে জালালি ফায়েজের আউলিয়া।।

 হযরত আলাউদ্দিন আহমদ সাবের কালিয়ার (র) বড় পীরের পর সবচেয়ে জালালি ফায়েজের আউলিয়া। বড়পীর আব্দুল কাদির জিলানি (র) এর আপন নাতি। বড় পীরের পর তিনি হলেন সর্বাধিক জালালি তবীয়তের আউলিয়া। হযরত ইমাম জাফর সাদেক (র) বলেন "আল্লাহ্‌র অলি-আউলিয়াদের মধ্যে দুইটা অতি ধারালো খোলা তরবারি আছে, একটা হল বড়পীর আব্দুল কাদির জিলানি (র) আর আরেকজন হল তাহার নাতি আলাউদ্দিন সাবের কালিয়ার (র)। যদি কোন ব্যাক্তি এই দুইজনের সাথে সামান্যতম বেয়াদবিও করে তাহলে আল্লাহর জালালি তেজে সে সাথে সাথে দুই খণ্ড হয়ে যাবে"। সাবের পাকের জালালি এতই বেশি ছিল যে তিনি যদি কাউকে লক্ষ করে একবার উচ্চারণ করতেন যে "লোকটির আচরণ ভালো না" তাহলে সাথে সাথে সেই লোক দুই খণ্ড হয়ে যেত। আর যদি সাবের পাক কখনও রেগে যেতেন তাহলে উক্ত এলাকা জ্বলে পুড়ে ছাড়-খার হয়ে যেত কেউ আর প্রানে বাঁচত না।সাবেরপাকের অসম্ভব জালালির কারনে তাহার মুর্শিদ শেখ ফরিদও তাহার সাথে রীতিমত কথা বলতে ভয় পেতেন এই ভেবে যদি সাবেরপাক কখনও খেপে যান।


 সাবের পাক একবার ক্ষেপে গেলে ৬ মাসের আগে তার সামনে কেউ আসতে পারত না।যদি কেউ এই সময় ভুলেও দেখা করতে যেত তাহলে আর প্রান নিয়ে ফিরতে পারত না সে যত বড় আল্লাহর অলি হোক না কেন। সাবেরপাকের শরীরের যদিও কেউ অজু ছাড়া স্পর্শও করত তাহলে তার গায়ে সঙ্গে সঙ্গে আগুনের জ্বালা-পোরা শুরু হয়ে যেত। সাবের পাকের এই অসম্ভব জালালির কারনে কেউই তার কাছে মুরিদ হইতে সাহস পেত না। সাবের পাক জীবিত থাকাকালিন শামসুদ্দিন তুর্কি পানিপথি নামের এক ব্যাক্তিকে শুধু মুরিদ করেছিলেন। এই ব্যাক্তি থেকে পরবর্তী সময়ে তাহার সিলসিলা চালু হয়ে আজ পর্যন্ত চালু হয়ে আছে। সাবেরপাকের ইন্তেকালের পর তার রওজাশরিফ ৪০ দিন এক পর্যন্ত একসিংহ পাহারা দিয়ে হটাৎ গায়েব হয়ে যায়। 

হযরত খাজা আলাউদ্দিন আহমেদ সাবের কালিয়ার (র)
জন্মঃ- ১৯ শে রবিউল আউয়াল ৫৯২ হিজরি
পর্দা-গ্রহনঃ-১৩ই রবিউল
পিতাঃ- হযরত আব্দুল রহিম (র)
মাতাঃ- হযরত জামিলা খাতুন (র)
পদবীঃ- কুতুবে আউলিয়া ,হযরত গাউসুল আজম বড় পীর আব্দুল কাদির জিলানি (র) এর আপন নাতী
মাজার শরিফঃ- ভারতের উত্তর-খণ্ড প্রদেশের কালিয়ায়র নামক শহরে।
তরিকাঃ- চিশতিয়া
পীর কেবলাঃ-হযরত শেখ ফরিদ (র)
ধর্মঃ- ইসলাম (সুন্নি)
সংক্ষিপ্ত জীবনীঃ- জন্মের কয়েক বছর পর পিতা মারা গেলে শিশু সাবের আহমেদ ও তার মা অর্থ-নৈতিক দিক থেকে অসহায় হয়ে পড়েন।তারা উভয়েই দিনের বেলায় রোজা রাখতেন এবং রাতের বেলায় শুকনা রুটি দিয়ে ইফতার করতেন।ছোটবেলা থেকেই সাবের আহমদের মাঝে আল্লাহ্‌র অলৌকিক ক্ষমতা প্রকাশ পেতে থাকলে তাহার মাতা তাকে স্বীয় আপন ভাই হযরত শেখ ফরিদ (র) এর কাছে উচ্চতর সাধনার জন্য প্রেরন করেন।পরবর্তী-কালে তাহার ভাই সাবের আহমেদ (র) কে আপন মুরিদ করে নেন।কথিত আছে হযরত সাবের কালিয়ার এর অসম্ভব জালালির কারনে তার পীর কেবলা হযরত শেখ ফরিদ ও তাহাকে খুব ভয় পেতেন।ধীরে ধীরে বাবা শেখ ফরিদের তত্ত্বাবধানে সাবের আহমেদ ইল মে তাসাউফের উচ্চ শিখর লাভ করেন।পরবর্তীতে ভারতের কালিয়ার নামক স্থানে পর্দা গ্রহন করেন।
অলৌকিক কারামতঃ-
১। জন্মের সময় কারামতঃ- কথিত আছে যে বাবা সাবের আহমেদ যখন জন্ম নেন,তখন তার দায়ী মা তাকে অজু ছাড়া কোলে নিলে দায়ী মার সারা শরীরে সঙ্গে সঙ্গে জালা-পোড়া শুরু হয়ে যায়।

২। ১২ বছর অনাহারঃ-সাবের আহমেদকে তাহার মামা লঙ্গর-খানা পরিচালনার দায়িত্ব দিলে তিনি একটানা ১২ বছর সেই লঙ্গর খানা থেকে কোন খাবার গ্রহন করেন নি। এতে তার দেহ কঙ্কাল-সার হয়ে গেলে তার মামা শেখ ফরিদ জিজ্ঞাস করলেন"তোমাকে আমি পুরো লঙ্গর খানার দায়িত্ব দিলাম,তবুও তোমার শরীরের এই বেহাল অবস্থা কেন??" উত্তরে সাবের আহমেদ বললেন" আপনি আমাকে লংগর খানা দেখা শুনার কেবল দায়িত্ব দিয়ে ছিলেন,কিন্তু সেখান থেকে খাবার খাওয়ার কোন অনুমতি দেন নি,তাই আমি এত দিন না খেয়ে কাটিয়েছি"। এই উচ্চ পর্যায়ের সততার কথা শুনে শেখ ফরিদ (র) খুব অবাক হয়ে পড়েন।
৩। কেউ সামান্য বেদবি করলে তার নির্ঘাত মৃত্যুঃ- আল্লাহপাক তাকে এতই জালালি স্বভাব দান করেছিলেন যে তিনি যদি মুখে একবার উচ্চারণ করতেন যে লোকটির আচরণ ভাল না,তাহলে সাথে সাথেই সেই লোকটি দুই খণ্ড হয়ে যেত,তার আর প্রানে বাঁচার উপায় থাকত না
৪।সম্পূর্ণ কালিয়ার শহর ধ্বংসঃ- তাহার পীর কেবলা অর্থাৎ আপন মামা হযরত শেখ ফরিদ (র) তাকে খিলাফত দিয়ে কালিয়ার শহরের কুতুব (প্রধান ধর্মীয় নেতা)নিযুক্ত করেন।কিন্তু কালিয়ার শহরের কাজী তবারক তাকে সাধারন এক রাস্তার ফকির ভেবে খুব তাচ্ছিল্য করে এমন কি মসজিদে নামাজ পড়ার সময় তাকে ঘাড় ধরে বের করে দেন।এতে বাবা সাবের এর ধৈর্যের বান ভেঙ্গে গেলে তিনি কেবল এইটুকুই উচ্চারণ করেন যে "সব ধ্বংস হোক"।ফলে এক প্রচণ্ড ভুমিকম্পে সমগ্র কালিয়ার প্রদেশ ৫ মিনিটে ধূলিসাৎ হয়ে যায়।সেদিন ঐ কালিয়ার শহরে একটি গাছ ছাড়া আর কিছুই অক্ষত ছিল না। ভূমি-কম্পে সেই গাছ অক্ষত থাকার কারন হল সেই গাছের নীচে কালিয়ার আসার পর বাবা সাবের কিছু সময় বিশ্রাম নিয়ে ছিলেন। আজো সেই গাছকে মানুষ পরম শ্রদ্ধার চোখে দেখে থাকে।
৫।মৃত ছাগলের কথা বলাঃ-কাজী তবারক হিন্সার বশবর্তী হয়ে বাবা সাবেরকে পরীক্ষা করার জন্য জন সম্মুখে বাবা সাবেরকে বললেন যে " আমার তিন মাস আগে একটি ছাগল হারানো গেছে,তুমি যদি তার খবর বলতে পার তাহলে আমি মেনে নিব তুমি সত্যি আল্লাহর অলি"।বাবা সাবের এই কথা শুনে কেবল এই বলে ডাক দিলেন যে "যারা কাজী সাহেবের ছাগল খেয়েছ তারা আমার সামনে হাজির হও"সাথে ২৭ জন লোক আপনা আপনি বাবার সামনে হাজীর হন।এরপর বাবা সাবের কাজী সাহেবকে তার ছাগলের নাম ধরে ডাক দিতে বললে,কাজী সাহবের ডাকে ২৭ জনের পেট থেকে ছাগল কথা বলা শুরু করে দিল। এই আশ্চর্য কারামত দেখে কাজী তবারক হিংসায় তাকে যাদু কর বলে আখ্যা দিলেন। এতে বাবা সাবের কিছুই মনে করলেন না।
৬ ।স্ত্রীর গায়ে আগুন লাগাঃ- বাবা সাবের সব সময় আল্লাহর ধ্যানে মগ্ন থাকতেন।এজন্য চার পাশে কি ঘটছে তা তার কোন খেয়াল থাকতো না।একবার বাবা সাবের এর মায়ের অনু-রোধে তার মামা শেখ ফরিদ তাহার নিজের কন্যার সাথে বাবা সাবেরের বিয়ে দেন।কিন্তু বাসর রাতে যখন তাহার স্ত্রী তাহার নিকট গমন করলে বাবা সাবের জিজ্ঞেস করলেন"তুমি কে?" তাহার স্ত্রী বললেন "আমি আপনার বিবি"এই কথা শুনার পর বাবা সাবের জালালি হালে শুধু এইটুকু উচ্চারণ করলেন যে " যে আল্লাহ লা শারিক তার আবার স্ত্রী কিভাবে থাকতে পারে"আর এতে সাথে সাথেই তাহার বিবির গায়ে আগুন লেগে যায়।ফলে তাহার বিবি আগুনে জলসে মারা যান। এতে তাহার মামা খুব কষ্ট পেলেও তাহার করার কিছুই ছিল না।
৭। নিজের জানাজা নিজে পড়লেনঃ- বাবা সাবের দুনিয়া থেকে পর্দা গ্রহন করার কিছু দিন পূর্বে তাহার ভক্তদের বলে যান যে "আমার মৃত্যুর দুই ঘণ্টা পরে একজন লোক সাদা ঘোড়ায় চরে আসবে আমার জানাজা ও দাফন করতে,তাই তার আসার পূর্বে ভুলেও যেন কেউ লাশ স্পর্শ না করে "। যথা-রীতি বাবার কথা মত এক লোক মুখ চাদরে দেখে ঘোড়ায় চরে এসে লাশ দাফন করে চলে যেতে লাগলে এক ভক্তের আকুল আবেদনে সেই লোকটি মুখের কাপড় খুললে সবাই দেখতে পান যে এটা আর কেউ নয় সয়ং বাবা সাবের,এর পর বাবা ঘোড়ায় চরে হঠাত অদৃশ্য হয়ে যান।
৮। পূর্বে মাজার শরিফে কেউ প্রবেশ করতে পারত নাঃ- বাবা সাবের ইন্তেকালের পর তাহার মাজার শরিফের চারপাশে তিন গুন জালালি ভাব প্রকাশিত হতে শুরু করে।কেউ যদি মাজারে যাওয়ার চেষ্টা ১ মাইল দূর থেকেও করত তাহলে সাথে আকাশ থেকে বজ্র পাত হয়ে সে খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে যেত।কথিত আছে তাহার ইন্তেকালের ৪০ দিন পর্যন্ত তাহার মাজার সিংহ পাহাড়া দিতে দেখা যেত। পরবর্তীতে তার এক বংশধরের অনুরোধে তিনি তাহার জালালি ভাব ক্ষান্ত করে তাহার মাজার শরীফ সবার জন্য জিয়ারতের উপযুক্ত করে দেন।
৯।জীন- পরীর গায়ে আগুন লাগাঃ- তাহার মাজার শরীফের ওপর দিয়ে জীন পরীও যদি ভুলে অতিক্রম করে তাহলে তাদের গায়ে সঙ্গে সঙ্গে আগুন লেগে যায়।
বাবা খাজা আলাউদ্দিন আহমেদ সাবের কালিয়ার এর কারামত বলে শেষ করা যাবে না,এক কথায় বলতে গেলে বড় পীর আব্দুল কাদির জিলানীর পর তার স্থান, এতে কোন সন্দেহ নেই।


আল্লাহ আমদের সবার নসীবে এই আউলিয়ার রূহানী ফয়েজ নসিব করুন আমিন... !! 

Tuesday, August 31, 2021

কারবালা

 মুসলিম বানিয়েছে। নাস্তিক দমিয়েছে। তবুও কেন বিরোধীতা! লিখেছেন মাহদী গালিব।

কারবালা শেষ। এজিদ মসনদে। তিন বছরেই মরল। ৬৪ হিজরি, ৬৮৪ সালে। এরপর আসলো ঝড়। এজিদের যে বাহিনী ছিল কারবালায়, সেটার হোতারা মরতে লাগল। যেনতেন মৃত্যু না। মৃত্যুও ভয় পেয়েছে সে মৃত্যুতে। এজিদ অজানা রোগে মরেছে। কিন্তু বাকিদের মৃত্যু- বিশাল বিভীষিকা!
আমর বিন সাদ। সে ছিল সেনাপতি। সে ও তার ছেলের মাথা কাটা হয়। পাঠানো হয় মদিনায়। মুহাম্মদ বিন হানাফিয়ার কাছে। তিনি মওলা হুসাইনের ভাই, সৎভাই।
হাওলা বিন ইয়াজিদ। সে মওলা হুসাইনের মস্তক বিচ্ছিন্ন করেছিল। তার হাত-পা কেটে শূলে চড়ানো হয়। লাশ জ্বালানো হয়।
শিমার। মওলা হুসাইনের গলায় ছুরি চালিয়েছে। সে স্রেফ দু’ টুকরা হয়। হাকিম বিন তোফায়েল। মওলা হুসাইনকে তীর ছুঁড়েছিল। তার মাথা বর্শার আগায় নাচানো হয়। বাদর নাচের ডুমড়ির মত।
ইবনে জিয়াদ। সব’চে পাপিষ্ঠ। ইয়াজিদের পরে। তার মাথা, দেহ আলাদা করা হয়। দেহ দহন হয় আগুনে। মাথা বর্শার ডগায় কুফায় আসে। কুফা তখন প্রতিশোধের ঘাঁটি। এভাবে আরো অনেক। একজনও পার পায় নি। জানিয়ে রাখি, কুফা ইরাকের শহর। মওলা আলী একে রাজধানী করেছিলেন।
প্রতিশোধটা প্রাণের দাবী। তা নেয়া হয়েছে। কিন্তু কে নিয়েছে? নিশ্চই প্রশ্ন জাগছে? যে করেছে সে মহাবীর। এমনটা ভাবছেন হয়ত। কিন্তু ঘটনা ভিন্ন। সময়ে জানতে পারবেন।
তার নাম মুখতার সাখাফি। তায়েফে জন্মায়। আরবের একটি প্রদেশে। ৬২২ সালে। পরে কুফায় স্থায়ী হয়। প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। ইবনে জিয়াদ তখন কুফার গভর্নর। তার প্রতিপক্ষ ছিল সাখাফি। সাখাফি থাকলে এজিদের হুকুম চলবে না। তাই তাকে জেলে ঢুকানো হয় কৌশলে।
কারবালার ঘটনা শুরু-শেষ হয়। সাখাফি তখন জেলে। অনেক পরে বেরোয়। কূটনীতি খাঁটিয়ে। বেরিয়ে দেখে সব খতম। মওলা হুসাইন শহীদ হয়েছেন। পাল্টেছে খেলাফতের মানচিত্র। সে প্রতিজ্ঞা করে, কারবালার বদলা নিবেই নিবে। তাই করেছিল। ধীরেধীরে দল গুছায়। কিন্তু অ্যাকশনে নামতে-নামতে এজিদ ভূত হয়। বড় বাঁচা বাঁচে। কিন্তু চ্যালা-চামুণ্ডারা নিস্তার পায় নি। একেএকে প্রাপ্য পেয়েছে। যা আগেই লিখেছি।
এখন ভাবুন। নিরপেক্ষ হয়ে ভাবুন। সাখাফিকে মহানায়ক মনে হচ্ছে? সে অন্যায়-অসত্য নিঃশেষকারী। এমনটা ভাবছেন। ভাবাটাই স্বাভাবিক। লিকিন পিকচার আভি বাকি হ্যাঁয়।
জমহুর মানে সিংহভাগ, বেশির ভাগ। ইসলামের, আহলে সুন্নাতের জমহুর ইমামগণের ‘সাখাফি’ কেন্দ্রিক বক্তব্য নেতিবাচক, নেগেটিভ। ইমাম আ’লা হযরতও তাকে ‘মুরতাদ’ বলেছেন। যে আগে মুসলিম ছিল, পরে ঈমান হারা হয়েছে; সেই মুরতাদ। অর্থাৎ- সাখাফির প্রতিশোধ কেন্দ্রিক-কাজ ইতিবাচক। কিন্তু তার শেষজীবন অশুদ্ধ।
কেন! কেন এমন? কারণ, সে শেষ-সময়ে নবুয়ত দাবী করে। শিয়া ভাইদের চেতনা ভিন্ন। তাকে মহাবীর ভাবেন। কিন্তু শিয়াদের ইতিহাস দিয়েই প্রমাণ হয়েছে সাখাফি পথভ্রষ্ট হয়েছিল। তথ্য কমেন্ট বক্সে দিচ্ছি।
আবার হাজ্জাজ বিন ইউসুফকে ধরুন। কোর’আনে যের-যবর লাগিয়েছে। যা আজকের কোরআনে পাই। হাজ্জাজের আগে যের-জবর ছিল না। সে পাকিস্তান পর্যন্ত ইসলাম ছড়িয়েছিল। বিশাল অবদান। কিন্তু তাকেও মানা হয় না, সাখাফির মত। জমহুর ইমামের মত সে ধর্মচুত্য। এখন চাইলেই যের-যবর সরাতে পারবেন? সম্ভব না। হাজ্জাজ মুসলিম মেরেছে হাজার-হাজার। বেয়াদবি করেছে মসজিদে নববীতে।। এতটাই পাপিষ্ঠ। অতএব, তাকে মানা হচ্ছে না। কিন্তু তার নির্দিষ্ট কাজকে মানা হচ্ছে।
ইসলাম-মুসলিম অবদান অস্বীকার করে না। কিন্তু একটি অবদান ব্যক্তির অন্য অপরাধের বদলা, এক্সচেঞ্জ না। যদি না তওবা করে। সাখাফি-হাজ্জাজের অবদান মানা হয়। নির্দিষ্ট কাজ মানা হয়। কিন্তু তাদের না। কারণ, তারা অস্বীকার করেছে আকাইদ (creed), মৌলিক বিশ্বাসকে। ইসলামের স্তম্ভ, খুঁটিকে।
একই ভাবে কেউ ‘তুলনা মূলক ধর্মতত্ব’ আলোচনা করল। খ্যাতি কামালো। দলেদলে মুসলিম বানালো। কেউ ফেবু-ব্লগে-বইমেলায় রাজ্য উদ্ধার করলো। নাস্তিকের নাভিশ্বাস ওঠাল।
কিন্তু বলল, নবী দোষে-দূর্বলে মানুষ। কেউ বলবে, তাকে আজকের যুগে না মানলেও চলে। বিরোধীতা করলে বলবে জিহ্বার ভুল। তওবা করবেন না। তাদেরি কেউ বলবে আল্লাহ মিথ্যা বলতে পারেন। কিন্তু বলেন না। তিনি আরশে আছেন। তার শরীর আরশের থেকে চার আঙুল বড়। আল্লাহ নিচে নামেন। আমরা যেমন সিঁড়ি বেয়ে উঠি-নামি। যেসব ব্যক্তিদের প্রায়-পুরো উম্মাহ (জাতি) ধিক্কার দিয়েছে, তাদের নায়ক বানাবে। প্রজন্মের থেকে প্রজন্ম ধরে বিধৌত-পরিশুদ্ধ নীতি-আইন অস্বীকার করবে।
যে সাধকেরা মা-মাটি ছেড়ে, রোদ-বৃষ্টি-নদী-জঙ্গল-বাঘ-সাপ-ক্ষুধা-তৃষ্ণা তোয়াক্কা না করে, দূরে-বহুদূরে, ইসলাম ছড়িয়েছেন; তাদের অসম্মান করবে। ‘মশারী কেন, মশা কামড়ায় নাকি’ টিটকারি মারবে। তাদের স্মরণকে শিরিক-বিদাত বলবে।
যখন রক্তঝরা-সম্ভ্রমহারা ফেব্রুয়ারি-মার্চ-ডিসেম্বরকে, দেশের পতাকাকে অবজ্ঞা করবে। ইসলামকে শুধুই হুর-গেলমানের ধর্ম বানাবে। সেই লোভে প্রজন্ম জঙ্গি হবে। বলবে, বিন-লাদেন স্বাধীনতা সংগ্রামী। বাংলাভাইয়ের গুণগান গাইবে। ইসলামকে একটি ভীতিপ্রদ, আতঙ্কের অবয়বে পরিণত করবে। হাজার বছরের মূল্যবোধ-চেতনা-সংস্কৃতিতে লাথি মারবে। হাজার সাহাবার মাজার ভাঙবে।
কথায় কথায় রেফারেন্স চাইবে। কোরআনের আয়াত দিবেন। বলবে অনুবাদ ও ব্যাখ্যাকারী ভুল। হাদিস দিবেন। চাইবে সহিহ হাদিস। মানে হাসান ও অন্যান্য মানের হাদিস হওয়ায় লাল-দোপাট্টা উড়িয়ে এসেছে। সেগুলো হাদিসই না। যাক, সহিহ হাদিস দিবেন। বলবে, প্রকাশনী ভুল। প্রকাশনী নিখুঁত দেখাবেন। বলবে- তোরা মাজার পূজারী! তোরা বানোয়াট। আমাগো শায়েখ ঠিক।
তার শায়েখ ঠিক। ১৩২৮ সালে দামাস্কাসে মরা, ১৭০৩ তে নজদে জন্মানো, ১৯৯৯ তে পটোল-তোলা শায়েখেরা সঠিক। ৮০ হিজরির আবু হানিফা ভুল। ৮৩২ এ জন্মানো মাতুরিদি ভুল। ১০৭৯ তে জন্মানো আব্দুল কাদির জিলানি ভুল। বইমেলার বেস্টসেলার সঠিক। কিন্তু ‘জজবুল কুলুব’-‘মাদারেজুন নবুয়ত’-‘মসনবি-‘কানযুল ঈমান’ ভুল। লালসালু সঠিক, হাদায়িকে বখশিশ ভুল... (আর কত কমু)!
কারো আদর্শের অবচেতন-আবেদন যখন মানুষকে এভাবে ভাবাতে শিখাবে, ইসলামের চেইন অব কমাণ্ড ভাঙবে, ইতিহাস থেকে ইসলামকে ছাঁটবে, প্রজন্মকে শিক্ষিত-অভদ্র, ধৃষ্ট-ধুরন্ধর বানাবে...
তখন! তখন! আর যাই হোক, যে যাই করুক, নাস্তিক নাচাক, মঙ্গলগ্রহের এলিয়নকেও মুসলমান বানাক – তার বিরোধীতা আবশ্যক! অত্যাবশ্যক!
কারণ; আকিদায় ধৃষ্টতার ক্ষেত্রে আপোষ নয়, প্রতিরোধ-প্রতিকার-নির্মূল করাই কাম্য।
যেমনটা ইমামে হক্বগণ করেছেন। কারবালা মুসলিমের আবেগ-অস্তিত্বের সংজ্ঞা। সেখানেও সাখাফিকে ছাড় দেয়া হয় নি। তুমি যাই করো, আকাইদ নেই তো কিছুই নেই। তোমার কাজ কচুপাতার পানি। প্রবাদ আছে না, ‘দুর্জন বিদ্বান হলেও পরিত্যাজ্য’।
এ বিরোধীতা সখে না। নিজের জন্য না। আমি আপনার জমির ভাগ পাই না। বিরোধীতার কারণ একটাই, একজন। যাকে প্রাণ, সম্পদ, আত্মীয়, সন্তান এমনকি মায়ের থেকেও বেশী ভালো না বাসলে কেউ মুমিন হয় না (তওবা : ২৪)। তার জন্যই এই বিরোধীতা। এ বিরোধী শুধু মদিনার জন্য। মদিনা-মুনিব সাল্লালাহু আলাইহে ওয়াসাল্লামের জন্য। তিঁনি হয়ে তাঁর খোদার জন্য।
যদি দুধ চান। শুধু দুধ না, ক্ষীর দিতেও প্রস্তুত আছি। আশ্রয় চাইলে ঘর ছেড়ে দিব। কিন্তু নিজের গায়ে ইসলামের ব্রাণ্ড লাগিয়ে, মদিনার বিপরীতে যাবেন; তখন- অস্তিত্বের সবটুকু দিয়ে বিরোধীতা করতে আজন্ম প্রস্তুত আহলে সুন্নাহ। এটাই ঈমানের দাবী।
প্রজন্ম হে! চাকু দিয়ে সব্জি কাটে। আবার খুনও হয়। কোনটা হবে, নির্ভর করে চাকু-অলার ওপর। যে সহীহ হাদিসে ঢেকুর তুলে তোমাকে টানছে, চিন্তা করিও সে চাকু কিসের জন্য রেখেছে। মনে রাখিও-
মিথ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত সত্য ভঙ্গুর, ভেঙে যাবে। কিন্তু সত্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত মিথ্যা ভয়ংকর।

Wednesday, August 12, 2020

বাতাসের বিরুদ্ধে অভিযোগ

 একদিন এক বৃদ্ধা বাতাসের বিরুদ্ধে এক অভিযোগ নিয়ে আসল যে,  হে আল্লাহর নবী ও রাজ্যের বাদশা! আমি অত্যন্ত দরিদ্র এক বৃদ্ধা। আমার গৃহে কয়েকটি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে আছে। আমি তাদের খাওয়ার জন্য কিছু গম পিসে আটা মাথায় করে নিয়ে আসছিলাম।   হঠাৎ বাতাস আমার সব আটা উড়িয়ে নিয়ে গেল। আমার প্রার্থনা হল, আপনি বাতাসের কাছ থেকে আমার  আটাগুলো উদ্ধার করে দিন। অন্যথায় আমার ছোট ছোট মাসুম ছেলেমেয়েরা অনাহারে থাকবে। 

হযরত দাউদ (আ) তার অভিযোগ শুনে বলেন, হে বৃদ্ধা, বাতাসের উপর আমার কোন ক্ষমতা নেই, তোমার আটা কি করে বাতাস থেকে উদ্ধার করে দিবো?  তবে তুমি যেহেতু অভাবগ্রস্ত মহিলা, তাই তোমার যে পরিমান আটা বাতাসে নিয়ে গেছে আমি  তোমাকে তার চারগুন আটা দিচ্ছি,  তুমি তা নিয়ে যাও। 

বৃদ্ধা খুব আনন্দের সাথেই সম্মত হল।   হযরত দাউদ (আ) তাকে পুর্ন একবস্তা  আটা দিয়ে বিদায় করলেন। বৃদ্ধা খুশীর সাথে আটা নিয়ে গৃহে চলল।  কিছুদুর যাওয়ার পর   হযরত সুলাইমান (আ) এর সাতে তার সাক্ষাৎ হল। তিনি জিজ্ঞেস করলেন বৃদ্ধা তুমি বাদশার কাছে কি অভিযোগ নিয়ে গিয়েছিলে??  বৃদ্ধা বলল আমি বাতাসের বিরুদ্ধে নালিশ করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু বাদশাহ সে অভিযোগের বিচার না করে আমাকে একবস্তা আটা দিয়ে দিলেন। 

হযরত সুলাইমান (আ) বৃদ্ধাকে বলেন, তুমি আবার যাও, গিয়ে বল আমি আটা চাইনা, বিচার চাই? এ পরামর্শঅনুযায়ী বৃদ্ধা হযরত দাউদ (আ) এর দরবারে পুনরায় বিচারপ্রার্থী হল। হযরত দাউদ (আ) বুড়ীর কাছে জানতে চাইলেন কে তাকে এই পরামর্শ দিয়েছে?? 

বৃদ্ধা অনেক ভয়ে ভয়ে বলল, বাদশাজাদা সুলাইমান (আ) এই কথা আমাকে শিখায়ে দিয়েছেন। তখন তাকে ডেকে বলেন, হে সুলাইমান তুমি যে বৃদ্ধাকে আমার কাছে ফেরত পাঠিয়ে দিলে, এখন বল দেখি, আমি কিভাবে বাতাস হাযির করে তার বিচার করি??  

হযরত সুলাইমান (আ) বলেন, হে আমার পিতা, আপনি শুধু বাদশা নন, আপনি আল্লাহর মহাসম্মানী নবীও বটে। আপনার দোয়ায় বাতাস আপনার সামনে হাযির হতে বাধ্য হবে। হে পিতা, আমার ভয় হচ্ছে যে, কিয়ামতের দিন বৃদ্ধা যখন আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে আল্লাহর দরবারে হাযির হবে, তখন আপনি  দুনিয়াতে তার অভিযোগের বিচার না করার অপরাধে অপরাধী সাব্যস্ত হবেন। 

পুত্রের কথায় হযরত দাউদ (আ) বাতাসকে উপস্থিত করার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন। আল্লাহ হযরত দাউদ (আ) এর দরবারে বাতাসকে উপস্থিত হওয়ার জন্য হুকুম দিলেন। আল্লাহর হুকুম পেয়ে বাতাস হযরত দাউদ (আ) এর দরবারে হাযির হল। তিনি বৃদ্ধার অভিযোগ সম্পর্কে বাতাসের কি বলার আছে জিজ্ঞেস করলে বাতাস বলল, আমি আল্লাহর নির্দেশানুসারেই বৃদ্ধার আটা উড়িয়ে নিয়েছি। আমি নিজ থেকে কিছুই করিনি। 

ঘটনাটা ছিল এরুপ-  একখানা বিরাট জাহাজ বহু মালপত্র এবং যাত্রী নিয়ে বিশাল সমুদ্র পাড়ি দিচ্ছে। হঠাৎ এ জাহাজের তলদেশে একটি ছিদ্র হয়ে তা ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তখন জাহাজের যাত্রীরা কান্নাকাটি শুরু করল, এবং আল্লাহর নামে মানত করল, হে আমাদের রব, আপনি আমাদের প্রান রক্ষা করলে এ জাহাজের সব সম্পদ আমরা আপনার পথে  বিলিয়ে দেব। তখন আমি আল্লাহর নির্দেশে এ বৃদ্ধার আটা উড়িয়ে নিয়ে  এ জাহাজটির ছিদ্রে লাগিয়ে তা বন্ধ করে দেই। তাই জাহাজের সবাই নিরাপদ ছিল। 

এর কয়েকদিন পরই সমুদ্র তীরে একখানা জাহাজ এসে  নোঙ্গর করেছে। সংবাদ পেয়ে হযরত দাউদ (আ) সেখানে হাজির হলেন। জাহাজের আরোহীরা বলল হুজুর, এ জাহাজের সব মালপত্র আমরা আল্লাহর পথে দান করার মানত করেছি। আপনি সব মাল গ্রহণ করে যথাযোগ্য স্থানে দান খয়রাত করে দিন। 

হযরত দাউদ (আ) জাহাজের মাল গ্রহণ করে তার অর্ধেক সে বৃদ্ধাকে এবং বাকি অর্ধেক অন্যান্য দারিদ্র এর মাঝে বিতরন করলেন। তারপর তিনি বৃদ্ধাকে জিজ্ঞেস করলে, হে বৃদ্ধা, তুমি এমন কি নেক আমল করেছ যার বিনিময়ে তোমার উপরে আল্লাহর এত অনুগ্রহ বর্ষিত হল?? জবাবে বৃদ্ধা বলল, 

হে আল্লাহর নবী,আমি কোন সৎকাজ করিনি, তবে আমার বাড়িতে কোন ভিক্ষুক এলে তাকে আমি কখনো খালি হাতে ফিরাই না। কিছু না কিছু অবশ্যই দিয়ে খুশী করে দেই। এজন্য আমি কোনদিন না খেয়েও থাকি। 

সেদিন একজন ভিক্ষুক এসে তার ক্ষুধার্ত থাকার কথা জানাল। তখন ঘরে সকলের খাওয়া হয়ে গিয়েছিল। কেবল মাত্র আমিই খাওয়ার বাকি ছিলাম। নিজের জন্ন্য যে দুইটা রুটি রেখেছিলাম তাই তাকে দিয়ে দিলাম। ২টা রুটি খেয়ে সে বলল, ক্ষুধা তো আমার গেল না, থেকেই গেল ক্ষুধা থাকলে আরো কিছু দিন। তখন ঘরে খাবার মত কিছুই ছিলনা, ঘরে কিছু গম ছিল, তখন আমি ভিক্ষুককে বল্লাম, আপনি একটু অপেক্ষা করুন, আমি গম পিসে আনতেছি, এক্টু পরেই আপনাকে রুটি বানাই দিতে পারবো। তখন ভিক্ষুক অপেক্ষা করল। 

আমি গিয়ে গম পিশে আটা নিয়ে ঘরে আসতেছিলাম, আমার সেই আটাগুলোই বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে গেল, যার বিচার আমি আপনার দরবারে দিয়েছিলাম। আমি এখন বুজতে পারলাম মহান আল্লাহ আমাকে এ আটার পরিবর্তই দয়াপরবস হয়ে এ মালগুলো দান করলেন।   


Sunday, June 21, 2020

করোনা ভাইরাস

করোনা ভাইরাস বর্তমান বিশ্বব্যাপী এক মহা আতংকের নাম। গোটা বিশ্ব আজ এ মহামারীতে আক্রান্ত। বিশ্বের কোথাও আজ কেউ নিরাপদ নয়। ভয়াবহ এ মহামারির সংক্রমনরোধে বিশ্বের সকল উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্তা অসহায়, অনেকটা অকার্যকর প্রমানিত। বৃহৎ শক্তিধর রাস্ট্রগুলোও আজ ধরাশায়ী। অহংকারী রাস্টগুলোর কর্তৃত্ব, আধিপত্য, ক্ষমতার দাপট আজ চুর্ন বিচুর্ন।  মহান রাব্বুল আলামীনের সৃস্ট এক অদৃশ্য ভাইরাসের আক্রমনে বিশ্বমানব জাতি বড়ই অসহায়। মুসলিম-অমুসলিম, আস্তিক-নাস্তিক, ধর্মদ্রোহী, খোদাদ্রোহী, সকলকেই দেখিয়ে দিল একমাত্র মহান রাব্বুল আলামীন বিশ্বসৃষ্টর মহান স্রস্টা, সার্বভৌম ক্ষমতার নিরংকুশ মালিক আল্লাহই সর্বশক্তিমান।       

Thursday, June 18, 2020

ইদুর বিড়াল সৃষ্টির রহস্য

হযরত নুহ (আঃ) এর কিস্তি যখন পানিতে ভাসছিল, তখন নৌকায় থাকা পশু পাখি, এবং মানুষের মলমূত্র ত্যাগের কারনে নৌকা দুর্গন্ধময় হয়ে পড়ে। হযরত নূহ (আঃ) আল্লাহর নিকটে আবেদন করলে, আল্লাহ আদেশ করলেন হে নূহ,  হাতীর চেহারায় হাত বুলান। আল্লাহ পাকের নির্দেশে হাতীর চেহারায় হাত বুলালে আল্লাহর কুদরতে হাতীর নাষিকা থেকে দুটি শূকর জন্ম নেয়। শূকর দুটি নৌকার সব মলমূত্র খেয়ে সব ছাপ করে ফেলে। এ দৃশ্য দেখে পাপিষ্ঠ ইবলীশ শূকরের চেহারায় হাত বুলালে তার নাক থেকে দুটি ইঁদুর জন্ম নেয়। নুহ (আঃ) ইবলীশকে বললেন হে ইবলীশ। কে তোকে এ নৌকায় উঠিয়েছে?? সে বলল, আপনি যখন কেনআনকে বলেছিলেন শয়তান নৌকায় উঠ  আমি তখনই নৌকায় উঠে পড়ি। আমি জানতাম, আপনি আমাকে ছাড়া আর কাউকে শয়তান বলেননি।  সুতারং তাতেই আমি নৌকায়  আরোহন করি। ইদুর দুটি  নৌকার বিভিন্ন স্থানে ছিদ্র করতে আরম্ব করলে হযরত নুহ (আঃ) আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানান, তার ফরিয়াদে জিবরাঈল (আঃ) এসে বললেন, আপনি বাঘের চেহারায় হাত বুলান। বাঘের চেহারায় হাত বুলাতেই তার নাক হতে দুটি বিড়াল জন্ম নেয়। তাই বিড়াল দেখতে অনেক্টা বাঘের মত। বিড়াল দুটি নৌকার সব ইঁদুর খেয়ে ফেলে। সেদিন থেকেই বিড়াল আর ইঁদুর এর সুত্রুতা চলে আসছে।