আগে একটা ছোট সত্য ঘটনা শুনাব
১৯৬৫ সাল তখন এটা পাকিস্তানই ছিল (পূর্ব পাকিস্তান) । সে সময়ে ভারত- পাকিস্তান (পূর্ব+পশ্চিম) যুদ্ধ হয়। যুদ্ধে ভারত নাস্তানাবুদ হয়ে পরাজিত হয়। যুদ্ধ শেষেই তারা পরিকল্পনা নেয় ফারাক্কা বাধঁ নির্মানের। তাদের ফারাক্কা বাধেঁর সবচেয়ে বড় বিপদের সম্মখীন হবে পূর্ব পাকিস্তান। সে সময় তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের যারা শাসক ছিলেন আইউয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান ( আমাদের সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যাক্তি) একেবারে প্রকাশ্যে ঘোষণ দেন
ফারাক্কা বাধঁ আমরা বোম মেরে তা উড়িয়ে দিব।
১৯৬৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্টের সপ্ন দেশের আপমর জনতা দেখে নি। পাক শাসক আইউয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান তারাও সে সময় অবধি কল্পনা করেন নি পূর্ব পাকিস্তান আলাদা হয়ে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্র হবে।
ফারাক্কা বাধেঁর এই ঘটনা এইজন্য বললাম পাক শাসক আইউয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান তারা অদূর ভবিষ্যৎের কথা চিন্তা করে এই উক্তি করেছিলেন। তারা সে সময় ভারত বিদ্বেষের কারণে এই বাস্তবতা বুঝতে পেরেছিলেন ফারাক্কা বাধঁ পূর্ব পাকিস্তান মানে বাংলাদেশের কিরূপ ক্ষতি করবে।
পরে ১৯৭১ যুদ্ধের পর যখন পুরো দেশ এক যুদ্ধপরবর্তী সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিল তখন ভারত বিনা বাধায় ফারাক্কা বাধঁ নির্মাণ করে। যার পরিণতি আমরা ২০১৪ এর দিকে দেখছি নদী গুলো শুকিয়ে যাচ্ছে ।
আসলে কিছু জিনিস আছে Long term effect
আমাদের শিক্ষাজীবনে পড়ালেখার কষ্ট এর আসল গুরত্ব বুঝব নিজ বুড়ো বয়সে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দেখলে টিপাইমুখ বাঁধ বা সুন্দরবন সংক্রান্ত বিদ্যুৎ প্রকল্প যার পরিণাম ২০-২৫ বছর পর পাওয়া যাবে।
এখন আসা যাক কেন প্রথমে শিরক, বিদআত কথা বললাম। ব্যপারটা ঐই Long term effect
বর্তমান যুগে Internet based যত Islamic website আছে সেগুলো সিহংভাগই আহলে হাদীস, সালাফী, লা-মাযহাবীদের কুক্ষিগত। তাই এর মাধ্যমে অত্যন্ত সুকৌশলে তারা নিজ আকিদা ছড়িয়ে যাচ্ছে। তাদের একজন খুব বড় আলেম Peace Tv নিয়মিত প্রোগাম করেন, You tube তার শতশত লেকচার আছে । তার এবং তার পৃষ্ঠপোষক সংস্থা যারা আছে তাদের সব লেকচার গুলোর সারমর্ম এই পেলাম
বাংলাদেশে যত মুসলমান আছে তার মধ্যে
• দেওবন্দীরা ভুল ও বিভ্রান্ত
• বেরেলভীরা ভুল ও বিভ্রান্ত
• সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদী, আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ও জামাতে ইসলামীরা ভুল ও বিভ্রান্ত
• চরমোনাই পীর ভুল ও বিভ্রান্ত
• ছরছীনা পীর ভুল ও বিভ্রান্ত
• তাবলীগ জামাত ভুল ও বিভ্রান্ত
এছাড়া যত খানকা আছে সবাই ভুল ও বিভ্রান্ত
So the bottom line is
বর্তমান বিশ্বে একমাত্র মুসলিম হচ্ছে তারা আহলে হাদীস, সালাফী, লা-মাযহাবীরা । যাদের সূচনা হয়েছে মুসলিম বিশ্বে ১৫০-২০০ বছর আগে তারাই দাবী করছে শুধু তারাই সহীহ বাকী সবই ভুল । বাহরে কান্ড
স্বীকার করছি উপরের প্রতিটি ফিরকা কিছু না কিছু ভুল হচ্ছে তার মানে এই নয় এরা সবাই কাফের।
আসলে এই কথা বলার উদ্দেশ্য কি বর্তমানে তারাই বিশ্বে মুসলিম যুবসমাজকে আকর্ষিত করছে তাদের আকর্ষণীয় বুলি দ্বারা। এবং এই সমস্ত চিহ্নিত আহলে হাদীস, সালাফীরা সবার মাথায় পোকার মধ্যে ঢুকিয়ে দিচ্ছে
এটা শিরক, ঐটা শিরক, ডানে শিরক, বামে শিরক সবই শিরক
আর শিরক না হলে তো বাকী সবই বিদআত।
আর আগেকার উলামায়ে কেরামরা যা বলেছেন সব যয়ীফ হাদীস দুর্বল হাদীস, মানতে হবে না।
যুবসমাজ কিছু না বুছেই তাদের সব বাণী সত্য মেনে চলছে।
শুনলে অবাক হবেন এদের সংগা মতে
মিলাদ, কিয়াম, শবে মেরাজ, শবে বরাত, সব শিরক
প্রিয়নবীর ওসীলা নিয়ে দুআ চাওয়া শিরক , মাযার যিয়ারাত শিরক (মাজার সিজদা অবশ্যই শিরক) , পীর মুরীদী সব শিরক বালাগাল উলা বিকামালিহী ৮০০ বছর পুরানো আরবী কবিতা, এটাও শিরক কাসীদায়ে বুরদা ৭০০ বছর পুরানো নবীপ্রেমের কবিতা এট্ওা শিরক।
শিরককে একটা মশকরা বানিয়ে ফেলেছে
ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে বড় গুনাহ হচ্ছে শিরক যা দয়াময় আল্লাহ কখনো ক্ষমা করবেন না।
আল্লাহ এতই দয়াময় যে একজন খুনীও যদি খাঁটি তওবা করে, তাকেও মাফ করে দেন, এক যেনাকারী মহিলা কুকুরকে পানি খাওয়াল বিধায় তাকে মাফ করে দেন। অনেক এরকম সাহাবী আছেন যারা কাফির থাকাকালীন নিজ মেয়েকে জীবন্ত পুতে ফেলেন, নবীজীর সামনে অশ্রুসিক্ত হয়ে তারাও মাগফেরাত লাভ করেন।
সেখানে চিন্তা করুন শিরক কত বড় গুনাহ যা আল্লাহ কখনই মাফ করবেন না।
আর বর্তমানে আহলে হাদীস, সালাফীরা প্রিয়নবীর ওসীলা নিয়ে দুআ চাওয়া, মাযার বালাগাল উলা বিকামালিহী, ইয়া নবী সালামু আলাইকা সব গুলোকে এক বাক্যে শিরক বলছে ।
মানে কি দাড়াচ্ছে এগুলো খুন, যিনার চেয়েও বড় অপরাধ । আস্তাগফিরুল্লাহ
আর যা শিরক বলতে পারবে না তা সবই বিদআত
শবে মেরাজ, শবে বরাত বিদআত, হাত তুলে দুআ বিদআত
এক্কেরে মগের মুল্লুকের মত কান্ড।
তাহলেতো বর্তমানে আহলে হাদীস, সালাফীদের যুক্তি অনুযায়ী সবাই কেজি ধরে কাফির
বাহ কি তামাশা
বর্তমান যুব সমাজে এক শ্রেণী আছে যারা শাহবাগী মুসলিম, মানে শুধু নাম মুসলিম বাকী আর ইসলামের কোন কাজ নাই
আরেক শ্রেণী যারা সত্যিই ইসলাম জানতে চায়
তবে তাদের মধ্যে প্রায় সবাই শর্টকার্ট মেথডে ও সহজে শিখতে গিয়ে আহলে হাদীস, সালাফীদের আকীদা ওয়ালা হচ্ছে।
Internet based কিছু আর্টিকেল পড়ল, কিছু লেকচার শুনল নিজেকে খুব বড় আলেম ভাবা শুরু করে
আসলে হয়ে গেল
অল্প বিদ্য ভয়ংকর
বর্তমানে এদের সংখ্যই বেশী
আর খুবই সামান্য কিছু মানুষ আছে যারা কিতাব পড়ে হাক্কানী আলেমেদ্বীন এর সোহবতে থেকে হাতে কলমে প্রকৃত ইসলাম শিখতে চায়
কি প্রসঙ্গে এত বিরাট আলোচনা করলাম ???
৪ ফেব্রুয়ারী হিন্দু ধর্মালম্বীদের স্বরস্বতী পূজা গেল
অধিকাংশ স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে স্বরস্বতী পূজার প্রার্থনা হল
এছাড়াও খেয়াল করবেন বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে, বড়দিন উপলক্ষেও নানা অনুষ্ঠান হয়
হয়না শুধু মুসলমানদের কোন মাহফিল।
আরে হবেও কেমনে
এ সমস্ত শিরক বিদআত বুলি আওড়ানো তো বসে আছে কেজি দরে সবগুলোকে শিরক বিদআত বানানোর জন্য।
আশুরা বা ইমাম হুসেইনের শাহাদাতে করবেন, তারা বলবে আরে এতে শিয়াদের জিনিস আমরা কেন করব। আর কিছু তো আসে ঈয়াজিদপন্থী যারা বলে ঈয়াজিদ ঠিক ছিলেন কারবালার হত্যাকান্ডও জায়েজ ছিল ভুল তো ছিলেন ইমাম হুসেইন (নাউযুবিল্লাহ) ।
১২ই রবিউল আউয়াল পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পালন করবেন
আরে এগুলোতো শিরক, বিদআত, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীনদের কেউ করেননি আপনি করেন কেন।
কওমী মাদ্রাসারা সীরাতুন্নবী মাহফিল করত, তখন শিরক বিদআত বুলি আওড়ানো ব্যবসায়ীরা বলত এটা কি দরকার, রবিউল আউয়াল মাসে করার কি দরকার সব বন্ধ করেন।
শবে মেরাজ এর মাহফিল করবেন >>> বিদআত
শবে বরাত করবেন >>>> সবতো যয়ীফ হাদীস
তফসীর মাহফিল করবেন, শানে রেসালাত মাহফিল করবেন, কি দরকার এগুলো তো সাহাবায়ে কেরাম, তাবেয়ীন, তাবে তাবেয়ীনদের কেউ করেননি আপনি করেন কেন।
Totally Crazy
সবাই হিন্দু বৌদ্ধরা তাদের ধর্মীয় কাজ করলে কোন স্বধর্মীয়রা বাধা দেয় না ।
আর আমরা মুসলিমরা করতে গেলেই আহলে হাদীস, সালাফীদের আকীদা ওয়ালা শিরক বিদআত করতে করতে কান ঝালাপালা করে দিবে ।
আপনারা নিজে বাস্তব উদাহরণ দেখুন
আজ থেকে
৭/৮ বছর আগেও প্রচুর ওয়াজ মাহফিল হত
প্রায় সব স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে বার্ষিক মিলাদ, দুআ হত
১২ই রবিউল আউয়াল তো মিলাদের হিড়িক পড়ত।
এখন হয়???
লাভ কার ক্ষতি কার আপনারাই ভাবুন
৯০ ভাগ মুসলিম দেশে স্কুল কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে
পূজা, বুদ্ধ পূর্ণিমা, বড়দিন সবই হয় যথাযথভাবে
হয়না তো মুসলমানদের কিছু, আর হলেও তা নামকা ওয়াস্তে
এর Long term effect
পরিণাম পাওয়া যাবে ২০৩০+ এর পর যখন আমাদের পরবর্তী প্রজন্মরা
পূজা, বুদ্ধ পূর্ণিমা, বড়দিন সবই চিনবে
চিনবে না তো নিজ মুসলমানদের কোন অনুষ্ঠান সমূহ
শুরু করলাম বাস্তব ঘটনা , সমাপ্তিও টানছি একটি সত্যি ইতিহাস
প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কিছু দিন হল ওফাত হল। হযরত আবু বকর এখন খলিফা ।
প্রিয়নবীর সময়ে পুরো কুরআন নাযিল ও হয়, এবং এর পান্ডুলিপিগুলো লেখাও হয়। কিন্তু তখন এর সব পান্ডুলিপিগুলো একত্রিত করা হয়নি।
সাহাবায়ে কেরামরা প্রায় সবাই হাফেজ ছিলেন এবং জানতেন কোনটার পর কোন আয়াত কিন্তু তখনও
কুরআনকে একটি পূণাঙ্গ কিতাব আকারে সাজানো হয়নি।
হযরত উমর একদিন খলিফা হযরত আবু বকরকে বললেন পুরো কুরআনের সব পান্ডুলিপি রাষ্ট্রীয় ভাবে একত্রিত করে কুরআনকে একটি পূণাঙ্গ কিতাব এর রূপ দেয়া।
খলিফা হযরত আবু বকর বলেন উমর আমি এমন কাজ করব যা প্রিয়নবী নিজে করেন নি বা করার আদেশ দেন নি।
জবাবে হযরত উমর হযরত আবু বকরের বুকে হাত রেখে বাড়ি দিয়ে বলেন
খলিফা আপনি এই উদ্যোগ নেন। অবশ্যই এই কাজে বরকত আছে।
হযরত আবু বকর বলেন উমরের সেই হাতের স্পর্শ আমার অন্তরকে শীতল করে অনুপ্রাণিত করেছে কুরআনকে একটি পূণাঙ্গ কিতাব হিসেবে নেয়ার কাজে । তারই ফলশুতিতে কুরআন একটি পূণাঙ্গ কিতাব আকারে রূপ পায়।
ভাগ্যিস সে যুগে আব্দুল্লাহ বিন ওহাব নজদী বা আহলে হাদীস, সালাফীরা ছিল না
তা না হলে তারা এই সমস্ত কথা বলে ত্যনা পেচাত
’না না করবেন না শিরক বিদআত’
[NB: গালাগালি না করতে অনুরোধ করা হল]
No comments:
Post a Comment